Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদতবরণ

হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদতবরণ

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • এবার তরবারি পাওয়ার আবেদন জানালেন আবু দৃজ না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তরবাবিটি তাকেই
    দিলেন ৷ অ বু দৃজানা শেষ পর্যন্ত তরবারির হক আদায় করেছিলেন ৷

    সীরাতঅভিজ্ঞদের ধারণা যে, কাব ইবন মালিক বলেছেন, আমি যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী
    মুসলমানদের মধ্যে ছিলাম ৷ আমি যখন দেখলাম যে মুশবিকদের সংখ্যা মুসলমানদের দ্বিগুণ
    তখন আমি এক পাশে সরে র্দাড়ালাম ৷ আমি দেখলাম জনৈক মুশবিক সৈন্য পুর্ণভাবে অস্ত্র
    সজ্জিত ৷ সে দ্রুতবেগে মুসলমানদের ব্যুহ ভেদ করে এগিয়ে যাচ্ছে ৷ সে বলছিল , পালাও ৷
    পালাও ! ৷ যেমন যবেহ করার ভয়ে বকরী দল পালায় ৷ বর্ণনাকারী বলেন, আমি আরো দেখতে
    পেলাম , একজন মুসলিম সৈনিক ওই মুশবিকের অপেক্ষায় আছে ৷ সেও পুর্ণভাবে অস্ত্র সজ্জিত
    আমি গিয়ে মুসলিম সৈনিকের পেছনে র্দাড়ালাম ৷ আমি উভয় সৈনিকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ
    করছিলাম ৷ আমি বুঝে নিলাম যে, শড়ারিরীক ও অস্ত্র শস্তের দিক থােক মুশবিকটি অধিকতর
    শক্তিশালী ৷ আমি অপলক নেত্রে তাদের দৃজনকে দেখছিলাম ৷ এক সময় তারা দুজন মুখোমুখি
    হল ৷ মুসলিম সৈনিকটি তরবাবির আঘাত হানল মুশরিকেরড়া ঘা ড় বরাবর ৷ প্রচণ্ড আঘাতে তার
    তরবারি মুশবিকের ঘাড় ণ্ত ভদ করে সোজা নিতম্ব অতিক্রম করে গেল ৷ লোকটি দুভাপে বিভক্ত
    হয়ে মাটিতে নেতিয়ে পড়ল ৷ এবার মুসলিম সৈনিকটি তার মুখের পর্দা সরাল এবং বলল, হে
    কাব ৷ কেমন দেখলেন ? আমি আবু দৃজানা ৷

    হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদাতবরণ

    ইবন ইসহাক বলেন, হযরত হামযা লড়াই করে যাচ্ছিলেন ৷ এক সময় তিনি আরতাত ইবন
    শুরাহ্বীল ইবন হাশিম ইবন আবৃদ মনাফ ইবন আবদুদ্দার কে হত্যা করলেন ৷ আরতাত ছিল
    শত্রুপক্ষের অন্যতম পতাক ধা৷রী ৷ তিনি ওদের পতাকাবাহী উছমান ইবন আবু তালহড়াকেও হত্যা
    করলেন ৷ তখন উছমান ইবন তালহ৷ বলছিলং :

    পতড়াকাবাহীর কর্তব্য হল বল্লমকে রক্তে রঞ্জিত করা অথবা নিজে র্টুকর৷ হয়ে যাওয়া ৷
    ইত্যবসরে হযরত হামযা (রা ) তার উপর আক্রমণ চালালেন ৷ এবং তাকে হত্যা করলেন ৷ তার
    পাশ দিয়ে যাচ্ছিল সিবা ইবন আবদুল উঘৃযা গুবশানী ৷ তার উপনাম ছিল আবু নাইয়ার ৷ তার
    উদ্দেশ্যে হযরত হামযা (রা) বললেন, হে খতনাকারিণী মহিলার ছেলে, এদিকে আয় ৷ তার যা হল
    উন্মু আনসার ৷ শুরায়ক ইবন আমর ইবন ওয়াহব ছাকাফীর আযাদকৃত ক্রীতদাসী ৷ মক্কায় সে
    খাতন৷ পেশায় নিয়োজিত ছিল ৷ দুজনে মুখোমুখি হল ৷ হযরত হামযা তাকে আক্রমণ করে হত্যা
    করলেন ৷ জুবায়র ইবন মুতইমের ক্রীতদাস ওয়াহ্শী বলে, আল্লাহর কসম, আমি দেখছিলাম
    হামযড়াকে তিনি তরবারি দ্বারা প্রতিপক্ষের লোকজনকে কেটেই যাচ্ছিলেন ৷ তাকে ধুসর রঙের
    উটের ন্যায় দেখাচ্ছিল ৷ আমার আগে সিবা গিয়ে হামযার নিকট পৌছল ৷ হামযা বললেন, হে
    খতনাকাবিণীর ছেলে এদিকে আয় ৷ হামযা তার উপর আক্রমণ করলেন ৷ তবে সম্ভবত; তার
    মাথায় আঘাত করতে পারেননি ৷ আমি আমার বর্শাত ৷ক করলাম ৷ সুনিশ্চিত ভাবে লক্ষ্যস্থির করে
    আমি হামযার দিকে বর্শা ছুড়লাম ৷ বর্শা গিয়ে পড়লত তার নাভিমুলে ৷ নাভি ভেদ করে দৃপায়ের

    মাঝখান দিয়ে সেটি বেরিয়ে এল ৷ আমাকে আক্রমণ করার জন্যে তিনি আমার দিকে আসতে
    উদ্যত ৩,হলেন কিন্তু তার পুর্বেই নিস্তেজ হয়ে গেলেন, এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন ৷ আমি এবন্টু
    অপেক্ষা করলাম,ত তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত ৩হওয়ার পর আমি তার নিকট এলাম ৷ আমার বর্শা
    খুলে নিলাম ৷ তারপর স্বগােত্রীয় সৈনিকদের নিকট ফিরে গেলাম ৷ আমার এর অতিরিক্ত কিছুর
    দরকার ছিল না ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, আবদুল্লাহ ইবন ফযল ইবন আইয়াশ ইবন রাবীআ ইবন হড়ারিছ বর্ণনা
    করেছেন, সুলায়মান ইবন ইয়াসার সুত্রে জাফর ইবন আমর ইবন উমাইয়া দিমারী থেকে ৷ তিনি
    বলেছেন আমি নিজে এবং উবায়দৃল্লাহ্ ইবন আদী ইবন খিয়ার একবার এক সফরে বের হয়ে-
    ছিলাম ৷ উবায়দৃল্লাহ্ ছিল বানু না ওফল ইবন আবদ মানাফ গোত্রের লোক তখন মুআবিয়৷ (রা )
    এর শাসনকাল ৷ যেতে যেতে আমরা হিমৃস অঞ্চলে গিয়ে পৌছলাম ৷ জুবায়রের ক্রী৩ দাস ওয়াহ্শী
    ওখানেই অবস্থান করছিল ৷ আমরা ওখানে পৌছার পর উবায়দৃল্লাহ্ ইবন আদী আমাকে বলল,
    আমরা যদি ওয়ড়াহ্শীর নিকট গিয়ে হযরত হামযার (রা ) হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করি
    তাতে তোমার কি কোন আপত্তি আছে ? আমি বললাম , তুমি যদি যাও, তবে আমিও বার এবং
    তার কাছে ওই বিষয়ে জানতে চাইব ৷ বন্তুতঃ ওয়াহ্শীর খোজে আমরা বের হলাম ৷ লোকজনকে
    তার অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছিলাম ৷ একজন লোক আমাদেরকে বলল, তোমরা তাকে তার
    বাড়ির আঙ্গিনায় পাবে ৷ এমনও হতে পারে যে, মদের নেশা তাকে খুদ করে রেখেছে ৷ যদি
    তোমরা তাকে এ অবস্থায় পাও যে তিনি চীৎকার করছেন তবে তোমাদের উদ্দেশ্য পুরণ হতে
    পারে ৷ অর্থাৎ তার নিকট থেকে কা ত্খিত উত্তর পেতে পার ৷ আর যদি এ অবস্থায় পাও যে, মদের
    সামান্য নেশা তার মধ্যে রয়েছে তবে কিছু জিজ্ঞেস না করে তাকে ছেড়ে চলে আসবে ৷

    বর্ণনড়াকারী বলেন, আমরা যাত্রা করেও তার নিকট এসে পৌছলড়াম ৷ তিনি তার বাড়ীর আঙ্গিনায়

    এক বিছানড়ায় উপবিষ্ট ছিলেন ৷ তিনি তখন বয়োবৃদ্ধ ৷ বুগাছ পাথীর ন্যায় সাদা কালো মিশ্রিত
    গায়ের রং ৷ তিনি ডেকে ডেকে বলছিলেন যে, তার কোন অসুবিধা নেই ৷ আমরা তার নিকট
    গিয়ে উপস্থিত হল ৷ম ৷ তাকে সালাম দিলাম ৷ তিনি ওবায়দৃল্লাহ্ ইবন আদীর দিকে চোখ তুলে
    তড়াকালেন ৷ তাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি কি আদী ইবন খিয়ার এর পুত্র ? ওবায়দৃল্লাহ্ বলল,
    জী হী, তাই ৷ ওয়াহ্শী বললেন, আল্লাহ্র কসম, তোমার দুধ মা সাদিয়্যা তোমকে ঘু-তৃওয়া
    নামক স্থানে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি আর তোমাকে দেখিনি ৷ আমি সেদিন তোমাকে তার
    হাতে তুলে দিয়েছিলাম ৷ তখন সে ছিল উটের উপর ৷ আমি তেড়ামার দু পাজর চেপে ধরে
    তামাকে উটের পিঠে তুলে দিয়েছিলাম ৷ তোমার পা দুটো তখন আমার নজরে পড়ে এরপরে
    আজ তুমি আমার নিকট এসেছ ৷ আমি তোমার পা দুটো দেখেই তোমাকে সনাক্ত করেছি ৷
    বর্গনাকারী বলেন, আমরা দৃজনে তার নিকট বসলাম ৷ আমরা বললাম, আপনি হযরত হাময৷ ৷(র৷ ৷)
    কে কীভাবে হ৩ ত্যা করেছিলেন তা জানতে এবং সে বিষয়ে আলোচনা করতে আমরা আপনার
    নিকট এসেছি ৷ ওয়াহ্শী বললেন, এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন ৷
    ঘটনাটি আমি তাকে যেভাবে জানিয়েছি তােমাদেরকেও সেভাবে জানার ৷ আমি জুবায়র ইবন
    ঘুতইম-এর গোলাম ছিলাম ৷ তার চাচা তৃআয়মা ইবন আদী বদর যুদ্ধে নিহত হয় ৷ কুরায়শরা

    পরবর্তী বছর উহুদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ৷ তখন আমার মালিক জুবায়র আমাকে বলেছিলেন যে,
    তুমি যদি আমার নিহত চাচার প্রতিশোধ হিসেবে মুহাম্মাদুদব (সা) চাচা হামযাকে হত্যা করতে পার
    তবে তুমি মুক্তি পাবে ৷ কুরায়শী সৈন্যদের সাথে আমি যাত্রা করি ৷ আমি মুলতঃ হাবশী বংশোদ্ভুত
    লোক ৷ হাবশী কৌশলে আমি বর্শা নিক্ষেপ করতে পারি যা খুব কমই লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয় ৷ উহুদ
    ময়দানে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হয় ৷ আমি হামযার খোজে বের হলাম ৷ হঠাৎ আমি তাকে
    দুলাকজদুনর মাঝে দেখতে পেলাম ৷ তিনি যেন একটি ধুসর বর্ণের উট ৷৩ তরবারির আঘাতে
    শত্রুপদুক্ষর দুলাকজনদুক কেটে কেটে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন ৷ দুকট্টই ৩াদুক প্রতিরোধ করতে
    পারছে না ৷ আল্লাহর কসম, আমি তার জন্যে প্রস্তুত হচ্ছিলাম ৷ আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিলেন
    তিনি ৷ একটি পাথর কিৎবা বৃক্ষের আড়ালে লুকিয়ে ছিলাম আমি ৷ অপেক্ষা করছিলাম যাতে তিনি
    আমার নাগালের মধ্যে আসেন ৷ ইদু৩ ৷মধ্যে সিবা ইবন আবদুল উয্যা তার সম্মুখে গিয়ে
    পৌছলেন ৷ তাকে দেখে হু ংকার দুছড়ে হামযা বললেন ও,দুহ খতনাকাবিণীর দুছদুল ৷ এদিকে আয় ৷
    অবিলম্বে হাময৷ তাকে আক্রমণ করলেন; বিতু৷ তার মাথায় আঘাত করতে সক্ষম হলেন না ৷
    ওয়াহ্শী বলেন, আমি আমার বর্শা তাক করলাম ৷ নিশ্চিত ভাবে লক্ষ্য স্থির করে আমি বর্শা
    ছুড়লাম ৷ বর্শা তার নাভিমুলে গিয়ে পড়ল ৷ নাভি ভেদ করে সেটি তার দৃপাদুয়র মাঝখান ভেদ
    করে বেরিয়ে পড়ে ৷ তিনি আমাকে আক্রমণ করার জন্যে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেন ৷ বিক্ষ্ম
    তাতে সক্ষম হননি ৷ কিছুক্ষণ আমি অপেক্ষা করি ৷ বর্শাবিদ্ধ অবস্থায় তাকে থাকতে দিই ৷
    অবশেষে তিনি মারা যান ৷ এরপর আমি তার নিকট আ সি এবং আমার বর্শাটি খুলে নেই ৷ পরে
    আমি স্বগােত্রীয় সৈন্যদের সাথে মিলিত হই ৷ সেখানে বিশ্রাম গ্রহণ করি ৷ আমার অন্য কোন দায়-
    দায়িতৃ ছিল না ৷ আমি তাকে হত্যা করেছিলাম যাতে আমি দাসতু থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি ৷
    যুদ্ধ শেষে মক্কায় আসার পর আমি মুক্তি লাভ করি , এবং সেখানে অবস্থান করতে থাকি ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মক্কা জয় করেন তখন আমি তাদুয়দুফ পালিয়ে যাই ৷ সেখানেই আমি
    অবস্থান করছিলাম ৷ তাদুয়দুফব লোকজন যখন ইসলাম গ্রহণের জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    উদ্দেশ্যে যাত্রা করল তখন আমি সংকটাপন্ন হয়ে পড়লাম ৷ আমার বসবাসের স্থান সংকুচিত হয়ে
    এল ৷ আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সিরিয়া কিত্বা ইয়ামান কিৎবা অন্য কোন দেশে চলে যাওয়ার ৷ আমি
    এমন চিন্তাভাবনায় ছিলাম এমন সময় একজন লোক আমাকে বলল, আল্লাহ্র কসম , মুহাম্মাদ
    (সা) তাে তার দীন গ্রহণকারী এবং সত্যের সাক্ষ্যদানকারী কাউকে হত্যা করেন না ৷ এ সংবাদ
    অবগত হয়ে আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে সাক্ষাতের জন্যে যাত্রা করি ৷ আমি মদীনায় তার
    নিকট পৌছি ৷৩ তার নিকট র্দাড়িদুয় আমি সত্যের সাক্ষ্য দিচ্ছি এটা দেখে রাসুলুল্লাহ্ (সা) হতচকিত
    হয়ে পড়লেন ৷ তিনি আমাকে বললেন, “তুমি কি ওয়াহ্শী ? আমি বললাম জী ইা,৩ তাই ইয়া
    রাসুলাল্লাহ্! তিনি বললেন, তবে আমার নিকট বস এবং হামযা (রা) কে তুমি কীভাবে হত্যা
    করেছ তা ৷আমার নিকট খুলে বল! আমি এখন তোমাদের নিকট যা বললাম রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
    নিকটও ঠিক তাই বলেছিলাম ৷ আমার বর্ণনা শেষ হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে
    বলেছিলেন, তোমার মুখমণ্ডল তুমি আমার দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখদুব ৷ আমি যেন তোমার
    মুখমণ্ডল দেখতে না পাই ৷ তখন থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) দুযখড়াদুনই থাকদু৩ ন সেখানে আমি
    মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতন্নে যাতে আমার চেহারা তার নজরে না পড়ে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ইনতি-

    কাল পর্যন্ত আমি এরুপ করেছি ৷ হযরত আবু বকর (রা)-এর যুগে ভণ্ড নবী-মিথ্যাবাদী ঘুসায়লামা
    র বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে মুসলমানপণ যখন ইয়ামামার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে তখন আমিও
    তাদের সাথে যাত্রা করি ৷ যে বর্শ৷ দ্বারা আমি হযরত হামযা (রা)-কে হত্যা করেছিলাম ওই বর্শাটি
    আমি সঙ্গে নিই ৷ উভয় পক্ষ মুখোমুখি হওয়ার পর আমি মুসায়লামাকে র্দাড়ানে৷ অবস্থায় ৫দখোত
    পাই ৷ তার হাতে ছিল তরবারি ৷ আরো কিছু চিহ্ন ছিল যা দ্বারা আমি তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত
    হই ৷ ডাকে আক্রমণ করার জন্যে আমি প্রস্তুত হই ৷ অন্য দিক থেকে একজন আনসারী লোকও
    তার উপর আক্রমণ করার জন্যে প্রস্তুত হয় ৷ আমাদের উভয়ের লক্ষ্য ছিল সে ই ৷ আমি আমার
    বর্শা তাক করলাম ৷ নিশ্চিতভাবে লক্ষ্যস্থির করে আমি বর্শ৷ নিক্ষেপ করলাম ৷ বর্শা গিয়ে তাকে
    আঘাত করে ৷ আনসারী লোকটিও তার উপর তরবারির আক্রমণ চালায় ৷ আমাদের দুজনের মধ্যে
    কে তাকে হত্যা করেছে তা আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ বন্তুত অ৩ামিই যদি তাকে হত্যা করে থাকি
    তবে একদিকে আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পর সর্বোত্তম ব্যক্তি অর্থাৎ হযরত হামযা (রা) কে হত্যা
    করেছি আর জগতের নিকৃষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ মুসায়লামাকে হত্যা করেছি ৷

    আমি মনে করি , আনসারী লোকটি ছিলেন আবুদুজানা সিমাক ইবন খারাশা ৷ ইয়ামামার যুদ্ধে
    ওই বিবরণ আসবে ৷ মুরতাদ ও ধর্মতা৷পীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযান পর্বে ওয়াকিদী উল্লেখ করেছেন
    যে, আনসারী লোকটি ছিলেন আবদুল্লাহ ইবন যায়দ ইবন আসিম মাযানী ৷ সায়ফ ইবন আমর
    বলেন, ওই আনসারী লোক হলেন আদী ইবন সাহ্ল ৷ বন্তুত: আদী ইবন সাহল নিম্নের কবিতা
    আবৃত্তি করেছিল :

    তুমি কি জাননা যে, আমি এবং ওয়াহ্শী হত্যা করেছি অভিশাপগ্রস্ত মুসায়লামাকে ৷
    ,
    লোকে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে, আমি কিভাবে তাকে হত্যা করেছি ৷ তখন আমি বলি যে,
    আমি তাকে আঘাত করেছি ৷ আর এটি হল সেই বর্শ৷ ৷

    প্রসিদ্ধ অভিমত এই যে, ওয়াহ্শীই প্রথম মুসায়লামাকে আঘাত করেন এবং আবু দুজানা তার
    উপর চুড়ান্ত আঘাত হানেন ৷ এ বিষয়ে ইবন ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আবদুল্লাহ ইবন ফযল
    আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা ) থেকে ৷ তিনি বলেছেন, ইয়ামামার যুদ্ধের দিন আমি জনৈক
    চীৎকারকারীকে শুনেছি সে চীৎকার করে বলছিল যে, এক কালো ক্রীতদাস তাকে হত্যা করেছে ৷
    ইমাম বুখারী (র) হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদাতের ঘটনা বর্ণনা করেছেন আবদ্বণ আযীয ইবন
    আবদুল্লাহ জাফর ইবন উমাইয়া দিসারী থেকে ৷ তিনি বলেছেনু আবদুল্লাহ ইবন আদী
    ইবন খিয়ারের সাথে আমি সফরে বের হয়েছিলাম ৷ এরপর পুর্বোল্লিখিত বিবরণ উল্লেখ করেছেন ৷
    ওই বর্ণনায় আছে যে , উবায়দুল্লাহ্ ইবন আদী ইবন খিয়ার যখন ওয়াহ্শীর নিকট উপস্থিত হন তখন
    তার সমগ্র মুখমণ্ডল পাগড়ীতে ঢাকা ছিল তার দুটো চক্ষু আর দুখানা পা ব্যতীত অন্য কিছুই
    ওয়াহ্শীর দৃষ্টিগােচর হচ্ছিল না ৷ এরপর ওয়হ্শী ভীকে যেভাবে চিনলেন তার বর্ণনা রয়েছে ৷ এটি
    একটি গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিচক্ষণত৷ বটে ৷ অনুরুপ বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন মৃজায্যায

    মুদলিজী ৷ হযরত হায়দ ওত তার পুত্র উসামার (রা ) দেহের রং ভিন্ন ভিন্ন হওয়া সত্বেও মুজায্যায
    মুদলিজী উসামার (রা ) পা দেখে বলেছিলেন যে, এ হচ্ছে য়ায়দের পুত্র ৷

    ইমাম বুখারীর উদ্ধৃত বর্ণনায় আছে যে, ওয়াহ্শী বলেছেন, লোকজন যখন যুদ্ধের জন্যে
    সারিবদ্ধ হল তখন সিবা ময়দানে বেরিয়ে আসে ৷ সে বলল , আমার বিরুদ্ধে লড়াই করার কেউ
    আছ কি ? তখন হানযা ইবন আবদুল মুত্তালিব বেরিয়ে এলেন ৷ হুৎকার ছেড়ে৩ তিনি বললেন, ওহে
    সিবা ওহে খৎনাবারীর পুত্র, তুইাক আল্লাহ ও তার রাসুলকে চ্যালেঞ্জ করছিল ? একথা বলেই
    তিনি সিবা কে আহ্ৰুাষ্মণ করলেন ৷ সাথে সাথে সে অতীতে তর ইতিহাসে পরিণত ৩হল ৷ ওয়াহুশী
    বলেন, হামযাকে তাক করে একটি পাথরের আড়ালে আমি লুকিয়ে রয়েছিলাম ৷ তিনি আমার
    নিকটবর্তী হলেন ৷ আমি তাকে লক্ষ্য করে, বর্শা ছুড়ি ৷ বর্শাটি ঠিক তার নাভিতে গিয়ে পহ্ব,ড় ৷
    তারপর তা তার ভু নিতন্বের মাঝখান দিয়ে বের হয়ে আসে ৷ এই ছিল তার অন্তিম অবস্থা ৷
    ওয়াহ্শী এও বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ওফাতের পর খোন ভণ্ড নবী মুসায়লামার আবির্ভাব
    ঘটল তখন আমি বললাম , সম্ভবত আমিই তাকে হত্যা করতে পারব যাতে করে হযরত হামযা
    (বা ) কে শহীদ করার দায় থেকে আমি মুক্ত হতে পারি ৷ মুসায়লামার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে
    যারা যাচ্ছিল আমি তাদের সাথী হলাম ৷ এরপর যা হবার হল ৷ আমি দেখতে পেলাম যে, এক
    ব্যক্তি একটি ভগ্ন প্রাচীরের কাছে দাড়িয়ে আছে ৷ তার মাথায় চুল এলােমেলাে ৷ দেখতে ধুসর
    উটের মত ৷ তাকে লক্ষ্য করে আমি আমার বর্শা নিক্ষেপ করলাম ৷ সেটি গিয়ে তার বুকভেদ
    করে তার দৃ’ কারুষ্প্র মাঝ দিয়ে বেরিয়ে গেল ৷ একজন আনসারীও তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে
    ছিলেন, নিজের৩ তর স্থারি দিয়ে তিনি মুসায়লামার মাথায় আঘাত করেছিলেন ৷

    আবদুল্লাহ ইবন ফযল বলেন সুলায়মান ইবন ইয়াসার বলেছেন যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবন
    উমার (বা ) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলছিলেন তখন জনৈকা ক্রী দাসী ঘরের ছাদে উঠে
    বলছিল , হায় আমীরুল মু ’মিনীন ! তার জন্যে দুঃখ হয় ৷ একজন কালো ক্রীতদাস তাকে হত্যা
    করেছে ’

    ইবন হিশাম বলেন, আমার নিকট বর্ণনা পৌছেছে যে, ওয়াহ্শী মদপানে অভ্যস্ত ছিলো ৷ এ
    জন্যে তাকে সরকারী চাকুরী থেকে বরখস্তে করা হয় ৷ হযরত উমার ইবন খাত্তাব (রা ) বলতেন
    যে হযরত হামযা র (বা ) হত্যাকারীকে আল্লাহ ছাড়বেন না ৷

    ওয়াহ্শী ইবন হারব আবু দাসামা ম৩ান্তরে আবু হারব এর ওফাত হয় হিমৃসে ৷ তিনিই
    সর্বপ্রথম ইগ্রি করা <পাশা ক পরিধান করেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে আড়াল করে মুসআব ইবন উমায়র যুদ্ধ করে
    যাচ্ছিলেনৰু শেষ পর্যন্ত তিনি শহীদ হলেন ৷ ইবন কামিয়া লায়ন্থীাকে হত্যা করেছিল ৷ যে
    মুল সআব (রা)-কে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলে ধারণা করেছিল ৷ ফলে সে কুরায়শদের নিকট গিয়ে
    বলল, আমি মুহাম্মাদকে হত্যা করেছি ৷

    মুসা ইবন উক্বা তীর মাপাযী গ্রন্থে সাঈদ ইবন মুসাব্যির থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উবাই
    ইবন খালফ ই হযরত ঘৃসআর (রা) কে হা করেছিল ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
    ১ বিশুদ্ধ উচ্চারণ হচ্ছে মুসায়লিমা ৷

    আল্বিাদ্ায়া ওয়ান নিহায়া

    ইবন ইসহাক বলেন, মুসআব ইবন উমায়র (রা ) নিহত হবার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত
    আলী ইবন অড়াবী তড়ালিবেয় হাতে পতাক অর্পণ করেন ৷ তবে ইবন ইসহাকের উদ্ধৃতি দিয়ে
    ইউনুস ইবন বুকায়র বলেছেন ৷ প্রথম থেকেই পতাকা ছিল হযরত আলীর হাতে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা )
    যখন দেখলেন যে, মুশরিকদের পতাকা বহন করছে আবদুদ্দার গোত্রের লোকেরা ৷ তখন তিনি
    বললেন, প্রতিশ্রুতি পুরণের আমরাই ওদের চেয়ে অধিক চর হকদার ৷ তখন তিনি আলী (রড়া) এর
    হাত থেকে নিয়ে পতাকা মুসআব ইবন উমায়রের হারে অর্পণ করলেন ৷ হযরত মুসআব শহীদ
    হওয়ার পর আবার পতাকা আলী (রা)-এর হাতে তুলে দেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, হযরত আলী (রা ) এবং অপর কতক মুসলিম যোদ্ধা বীর বিক্রমে যুদ্ধ
    চালিয়ে যেতে লাগলেন ৷

    ইবন হিশাম বলেন, মাসলামা ইবন আল কামা আল-মুযিনী আমাকে বলেছেন যে, উহুদ
    প্রাতরে যখন যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করল তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) আনসারীদের পতাকার নীচে
    বললেন ৷ হযরত আলী (রা ) বলে পাঠালেন যে , পতাকা এগিয়ে নিয়ে যাও ৷ হযরত আলী পতাকা
    নিয়ে এগিয়ে গেলেন ৷ তিনি বলছিলেন আমি আবুল ক ৷সাম কতনিকারীর পিতা ৷ তার ঘোষণার
    উত্তরে মুশরিকদের পতাকা বহনকারী আবু সাদ ইবন আবু তড়ালহা বলল, হে আবুল কাসাম ! দ্বন্দ্ব
    যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে ৷ হযরত আলী (রা ) বলাত্বলন, অবশ্যই ৷ দুজন উভয় পক্ষের ম ধ্যখানে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে
    অবতীর্ণ হলেন ৷ হযরত আলী (বা) তার উপর আক্রমণ করলেন ৷ সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল ৷
    তাকে দ্বিখণ্ডিত না করেই তিনি ফিরে এলেন ৷ কেউ কেউ তাকে জিজ্ঞেস করল, আপনি ওকে
    হত্যা না করে ফিরে এলেন কেন ? তিনি জবাবে বলেন যে বিবস্ত্র হয়ে পড়ায় তার প্রতি আমার
    করুণার উদ্রেক হয় ৷ তবে বুঝে নিয়েছি যে তার মৃত্যু অবধারিত ৷ এরকম একটি ঘটনা
    ঘটিয়েছিলেন হযরত আলী (রা) সিফফীনের যুদ্ধেও ৷ সেটি ছিল বুসর ইবন আবু আরতাতের
    সঙ্গে ৷ তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হযরত আলী (বা) তার উপর আক্রমণ চালিয়েছিলেন ৷ সে
    তখন তার সম্মুখে নিজের লজ্জাস্থান উন্মুক্ত করে দেয় ৷ হযরত আলী (রা) তাকে ছেড়ে চলে
    আসেন ৷ আমর ইবন আস ও সিফফীনের যুদ্ধে একবার তেমনটি করেছিলেন ৷ একদিন হযরত
    আলী (বা) আমরের উপর আক্রমণ করেছিলেন ৷ তখন আমর নিজের লজ্জাস্থান উন্মুক্ত করে দেন ৷
    হযরত আলী (বা ) তাকে ছেড়ে ফিরে যান ৷ এ সম্পর্কে হ্যরিছ ইবন নযর বলেন :

    তিনি প্রতিদিন এমন সব অশ্বারোহীর মুখোমুখি হন যারা নিজেদের সতর উন্মুক্ত করে রাখে ৷

    তা দেখে হযরত আলী তার উপর থেকে নিজের তরবারি ফিরিয়ে আনেন ৷ আর তা দেখে
    নিজনে হাসতে থাকেন মুআবিয়া (রা) ৷

    ইউনুস উল্লেখ করেছেন ইবন ইসহাক থেকে যে মুন্ারিকদের পতাকা বহনকারী তড়ালহা ইবন
    আবু তালহা আবদারী সেদিন যুদ্ধ করার জন্যে ময়দানে হাযির হয়ে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের আহবান জানাচ্ছিল ৷
    মুসলিম সৈন্যগণ তার নিকট থেকে সরে থাকছিলেনঃ ৷ তখন ঘুবাযর ইবন আওয়াম তার

    মুকা ৷বিলায় এগিয়ে গেলেন ৷ তিনি তার উপর বাপিয়ে পড়লেন ৷ এক সময়৩ তিনি তার উটের উপর
    চড়ে বসেন ৷ তিনি তাকে ধরাশায়ী করে ফেলেন এবং নিজ তরবারি দিয়ে তাকে জব ই করে
    ফেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত যুবায়র (রা)-এর এ বীরত্বের প্রশংসা করে বললেন, প্রতোক
    নবীর হাওয়ারী ও সাহায্যকারী থাকে, আমার হাওয়ারী হল যুরায়র ( বা ) ৷ তিনি আরো বললেন,
    আমি যখন দেখলাম মসলিম সৈন্যগণ৩ তালহ৷ থেকে সরে থাকছে তখন যুবায়র যদি বেরিয়ে না
    আসত তবে আমি নিজেই ৩ ৷র বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতাম ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (রা) সেদিন আবু সা দ ইবন আবু তালহাকে
    হত্যা করেছিলেন ৷ দ্বন্দু যুদ্ধে নেমেছিলেন আসিম ইবন ছাবিত ইবন আবু আফলাহ, ৷ তিনি নাফি
    ইবন আবুতালহা ও তার ভাই জিলাসকে হত্যা করেন৷ তাদের উভয়েই তার প্ৰতি তীর নিক্ষেপ
    করছিল ৷ সে৩ তার মায়ের নিকট আসত এবং তার কোলে মাথা রাখত ৷ তার মা বলত বৎসা
    তোমাকে কে আঘাত করলো ? সে বলত মা , আমার প্রতি ৩ ৷র নিক্ষেপ করার সময় আমি এক
    ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি, সে বলছিল , এটি গ্রহণ কর, আমি আবুআফলাহ্ এর পুত্র ৷ তখন তার মা
    মানত করেছিল যে, যদি কোনদিন সে আসিম ( রা)-এর মাথা হাতে তে পারে তবে ওই মাথার
    থুলিতে শরাব পান করবে ৷ হযরত আসিম (রা ) ও আল্লাহ্র সাথে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়েছিলেন যেন
    তিনি কোনদিন কোন মুশরিককে স্পর্শ না করেন এবং কোন মুশরিক ও তাকে স্পর্শ করতে না
    পারে ৷ এজন্যে “রাজী দিবসের ঘটনায় কোন মুশরিকের স্পর্শ থেকে আল্লাহ্ তাআল৷ তার
    লাশকে রক্ষা করেছিলেন ৷ রাজী দিবসের ঘটনা অবিলম্বে বর্ণনা করা হবে ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, হানযাল৷ ইবন আবু আমির মুখোমুখি হলেন আবু সুফিয়ানেয় ৷
    হানযালার পিতা আবু আমিরের নাম ছিল আমর ৷ তাকে আবদ আমর ইবন সায়ফীও বলা হত ৷
    জাহেলী যুগে সে রাহিব অর্থাৎ ধর্ম যাজক উপাধি পেরু২ ছিল ৷ এটি হয়েছিল তার প্রচুর ইবাদত
    বন্দেগীর প্রেক্ষিতে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে ফাসিক তথা পাপাচারী নামে আখ্যায়িত করেছিলেন ৷
    কারণ ইসলামী যুগে সে সত্য ও মত ৷পন্থীদের অর্থাৎ ইসলাম ও মুসলমানদের বিরোধিতা
    করেছিল ৷ সে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর বিরোধিতা করতে গিয়ে এবং ইসলাম গ্রহণ থেকে দুরে
    থাকার উদ্দেশ্যে মদীনা ছেড়ে মক্কায় পালিয়ে গিয়েছিল ৷ আলোচ্য হানযাল৷ হলেন ফেরেশতাদের
    গোসল প্রাপ্ত হানযাল৷ ৷ ফেরেশতাপণ তাকে গোসল দিয়েছিলেন ৷ ওই ঘটনা পরে উল্লেখ করা
    হবে ৷ বস্তুতঃ হানযাল৷ এবং আবু সুফিয়ান সাখর ইবন ;হ্ারব পরস্পর মুখোমুখি হলেন ৷ হানযালা
    যখন আবু সুফিয়ানকে পরাস্ত করছিলেন এবং তার ববুকের উপর উঠে বসেন তখন শাদ্দাদ ইবন
    আওস ওরফে ইবন শাউব তাকে দেখে ফেলে এবং তার উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে ৷
    তার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন “তোমাদের স৷ ৷থী হানযালাকে এখন ফেরেশতাগণ
    গোসল দিচ্ছে, তার পরিবারকে জিজ্ঞেস করে দেখ তো ব্যাপার কী ৷৩ তার ত্রীকে এ বিষয়ে
    জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ৷ ওয়াকিদী বলেন, তার শ্রী হলেন জামীলা বিনত উবাই ইবন সালুল ৷ মাত্র
    ওই রাতেই তিনি নববধুরুপে হানযালার গৃহে আগমন করেছিলেন ৷ তিনি জানালেন, হানযালার
    গোসল ফরয হয়েছিল ৷ যুদ্ধের অহ্বান শুনে গোসলন্ না করেই তিনি জিহাদে বেরিয়ে পড়েন ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, এজন্যেই ফেরেশতাগণ তাকে গোসল দিয়েছেন ৷

    মুসা ইবন উকবা উল্লেখ করেছেন যে ; হানযাল৷ (রা)-এর পিতা তার বুকে পদাঘাত করেছিল
    এবং রলেছিল , তুই দুটো অপরাধ করেছিল ৷ এখানে আসতে আমি তােকে নিষেধ করেছিলাম ৷
    আল্লাহর কসম , তৃইতাে আত্মীয় রৎসল এবং পিতৃভক্ত ছিলি ৷

    ইবন ইসহাক বলেন এ সম্পর্কে ইবন রলেছিল-

    আমি অবশ্যই রক্ষা করব আমার সাথীকে এবং আমার নিজেকে সৃয় কিরণ তুলা একটি বর্শা
    দ্বারা ৷ ইবন শাউব বলেন :

    ণ্হ ইবন হারর আ মি ৷যদি প্ৰাতরোধ করতাম এবং উপন্থিত৷ না থাকতাম তবে তুমি যুদ্ধের
    দিন কা ৷উকে তোমার ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্যে ৫পতেন৷ ৷

    এ প্রস গে আবু সুফিয়ান ও একটি দীর্ঘ কবিত তা আবৃত্তি করেছিল ৷ আর হাসৃসান ইবন ছাবিত
    প্রতুত্তেরে আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন ৷

    উহুদ যুদ্ধের শেষ পর্যড়ায়ও ফলাফল

    ইবন হল হ৷ ক বলেন এরপর আলাহ্ তা আল৷ মুসলমানদের প্ৰতি তার সাহায্য অবতীর্ণ
    ক রে ন ; তিনি : র ওয়াদ ৷ পুরণ করেন ৷ মুসলমানগণ শত্রুপক্ষকে অবিরত হত্যা করতে থাকেন
    এবং ওদেরকে ছত্রড়ঙ্গ করে যেনলন ৷ কাফিরদের পরাজয় সুনিশ্চিত হয়ে উঠে ৷ ইয়াহ্য়৷ ইবন
    আ ররাদ তীর পিতা আব্বাদ ইবন আরদুল্লাহ্ইবন যুরায়র থেকে এবং তিনি যুবায়র (রা) থেকে
    বর্ণন৷ করেছেন যে , তিনি বলেছেন, ওই সময় হিনৃদৃ বিন্ত উতবার নুপুরের দিকে আমার নজর
    পড়ে ৷ সে এবং তার সঙ্গিনী কুরায়শী মহিলারা পায়ের কাপড় গুটিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল ৷ শত্রুপক্ষ
    তাদের মালপত্র ছেড়ে ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া র পর আমাদের তীরন্দাজ বাহিনী ওদের মাল-
    পত্র সংগ্রহে বা৷ পািয় পড়ে ৷ আমাদের পশ্চাতের ণিবি পথ তারা শত্রুপক্ষের অশ্বারোহী বাহিনীর
    জন্যে অবারিত করে দয় ৷ ফলে র ৷ পেছনের দিক থেকে এসে আমাদের উপর আক্রমণ
    চালায় ৷ তখন জনৈক £ৰুষ্ট্ট৷ ৷ষক ঘোষণা দো ন্ যে , মুহাম্মাদ নিহত হয়েছেন ৷ এ অবস্থায় আমরা আবার র
    পাল্টা আক্রমণ করলাম ৷ ওরা’ও আক্রমণ করল ৷ ওদের পতাকাবাহী নিহত হল ৷ কিন্তু ওদের
    পাক্ষর কেউই পতাকাটি তুলে নিতে এগিয়ে আসছিল না ৷ জনৈক বিজ্ঞ ব্যক্তির বরাতে ইবন
    ইসহাক যে, পতাকাটি দী ৷র্ঘক্ষণ মাটিতে পড়েই ছিল ৷ শেষে বনু হারিছ পােত্রীয় উমরা বিনৃত
    ন্সালকাম৷ এসে তা লেতু নিল ৷ সে পতাকাটি কুরায়শদের নিকট নিয়ে পেল ৷ তারা পুনরায় সেটি
    দৃঢ়ভাবে উত্তোলন করল ৷ ওদের ওই পতাকাটি ছিল বানু আবু তালহ৷ গোত্রের হারশী বালক
    সাওয়াবেব হাতে ৷ সে ছিল ওদের শেষ পতাকবােহী ! পতাকা নিয়েই সে যুদ্ধ করছিল এক সময়
    তার হাত দুটি কাটা গেল ৷ তারপর সে উপুড় হয়ে বলে তার বুক ঘাড় দিয়ে পতাকাটি ধরে রাখে ৷
    শেষ পর্যন্ত পতাকা রক্ষার প্রা:চষ্টারত অবস্থায়ই নিহ্তয় হয় ৷ সে তখন বলছিল, হে আল্লাহ! আপনি
    কি আমার ওমর ও অক্ষৰুঘত৷ গ্রহণ হস্-রেছেনঃ এ প্রেক্ষিতে হযরত হাসৃসান ইবন ছাবিত বলেছেন :

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদতবরণ Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.