বললাম, হে বাদশা, আপনি কি এটার সত্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছেন ? তিনি বললেন, “হীা, হে
আমর আমি এটা সম্পর্কে আল্লাহর কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছি ৷ সুতরাং তুমি আমার অনুকরণ কর এবং
তার আনুগত্য স্বীকার করে নাও ৷ কেননা, আল্লাহ্র শপথ ! তিনি সত্যের উপর রয়েছেন ৷ আর
যারা তীর বিরোধিতা করছে তাদের উপর তিনি জয়লাভ করবেন ৷ যেমন মুসা (আ) ফিরআওন ও
তার সৈন্যদলের উপর জয়লাভ করেছিলেন ৷ আমি বললাম, আপনি কি আমার ইসলামের বায়আত
গ্রহণ করবেন ? তিনি বললেন, “হ্যা, এবং এ বলে তীর হ স্ত প্রসারিত করেন ৷ আর আমাকে
ইসলামের বাইয়াত গ্রহণ করান ৷ এরপর তিনি একটি চিলিমচী চেয়ে পাঠালেন এবং আমার রক্ত
ধুয়ে দিলেন ৷ আর আমাকে উত্তম জামা-কাপড় পরতে দিলেন ৷ আমার কাপড়গুলো রক্তে রঞ্জিত
হয়ে গিয়েছিল ৷ আমি সেগুলো ফেলে দিলাম ৷ এরপর আমি আমার সাথীদের কাছে ফিরে
আসলাম ৷ তারা আমার পরনে নাজ্জাশী প্রদত্ত জামাকাপড় দেখতে পেয়ে খুশী হলো এবং বললাে,
তুমি কি তোমার বন্ধুর নিকট কাত্তিক্ষত বন্তুটি হাসিল করতে পেরেছ ? উত্তরে আমি তাদেরকে
বললাম, “প্রথমবারে তীর কাছে এ ব্যাপারে কথা বলাটা ভাল মনে করিনি ৷ পুনরায় তার কাছে
যাব ৷” তারা বলল, “তুমি যা ভাল মনে করে তইি করবে ৷ এরপর আমি তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন
হয়ে পড়লাম ৷ মনে হচ্ছে যেন আমি অন্য কোন দরকাবে কােথায়ও যাচ্ছি ৷ সুতরাং আমি জাহাজ
ঘাটের দিকে অগ্নসর হলাম, লক্ষ্য করলাম একটি জাহাজ যাত্রীতে পুর্ণ হয়ে গেছে ও ছেড়ে
যাচ্ছে ৷ আমি যাত্রীদের সাথে জাহাজে উঠলাম ৷ মাল্লারা জাহাজ ছেড়ে দিল ৷ যখন তারা
দু’পাহাড়ের মধ্যবর্তী একটি অবতরণস্থলে পৌছলো তখন আমি জাহাজ থেকে অবতরণ করলাম ৷
আমার সাথে আমার পথ-খরচের অর্থরুসম্পদ ছিল ৷ আমি একটি উট খরিদ করলাম এবং মদীনায়
উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়লাম ৷ মার্কয যাহ্ৱান নামক স্থানে গিয়ে আমি পৌছলাম ৷ তারপরেও
চলতে লাগলাম ৷ যখন আল-হুদা নামক স্থানে পৌছলাম তখন দেখি দুই ব্যক্তি আমার কিছুক্ষণ
পুর্বে সেখানে পৌছেছে এবং সেখানে অবতরণের ইচ্ছা পোষণ করছে ৷ তাদের একজন তাবুর
ভিতরে প্রবেশ করেছে এবং অন্য একজন দুইটি যান বাহনকে ধরে রয়েছে ৷ এরপর আমি
তাকিয়ে দেখি খালিদ ইবন ওয়ালীদকে ৷ তীকে বললাম, “কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছ ?
সে বলল, “মুহাম্মাদের কাছে লোকজন ইসলাম গ্রহণ করে চলছে ৷ সুরুচিপুর্ণ কেউ একটা বাকী
নেই ৷ আল্লাহর শপথ ! যদি আমি নিক্রিয় থাকি তাহলে মুহাম্মাদ (সা) আমাদেরকে এমনভাবে
ধরবে, যেমন হায়েনাকে তার গুহায় আটক করা হয় ৷” আমি বললাম , আল্লাহ্র শপথ ! আমিও
মুহাম্মাদ (না)-এর উদ্দেশ্যে যেতে এবং ইসলাম গ্রহণ করতে চাই ৷ উছমান ইবন তালহা (রা)
তাবু থেকে বের হয়ে আমাকে স্বাগত জানালেন ৷ আমরা সকলেই এ মানযিলে অবতরণ ও
অবস্থান করলাম ৷ এরপর আমরা একত্রে মদীনায় আগমন করলাম ৷ মদীনায় আমরা যত লোকের
সাথে সাক্ষাত করেছি আবু উতবা এর ন্যায় আর কেউ আমাদেরকে এত উচ্চস্বরে স্বাগত
জানায়নি ৷ দেখামাত্র তিনি উচ্চস্বরে ইয়া রাবাহ ! ইয়া রাবাহ ! ইয়া রাবাহ ! স্বাগতঃ ধ্বনি বলতে
লাগলেন ৷ তীর কথায় আমরা শুভ লক্ষণ মনে করলাম এবং অত্যন্ত খুশী হলাম ৷ এরপর তিনি
আমাদের দিকে তাকালেন এবং তাকে বলতে শুনলাম ৷ তিনি বলছিলেন, “এ দুজনের ইসলাম
গ্রহণের পর নেতৃত্ব মক্কায় চলে যাচ্ছে ৷ এ দুজন দ্বারা আমাকে এবং খালিদ ইবন ওয়ালিদকে
বুঝাতে চেয়েছিলেন ৷ তখন তিনি দৌড়িয়ে মসজিদে চলে গেলেন ৷ আমি ধারণা করলাম যে,
সম্ভবত তিনি আমাদের আগমনের সংবাদ রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর কাছে জানাবার জন্যে গিয়েছেন ৷
আমি যা ধারণা করেছিলাম তাই হল ৷ আমরা হাবৃরায় অবতরণ করলাম ও আমাদের উত্তম
পোষাক পরিধান করলাম ৷ এরপর আসরের সালাতের জন্যে আমান দেওয়া হয় ৷ আমরা রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর দিকে ধীর পদে অগ্রসর হলাম ৷ তার চেহারা ছিল উজ্জ্বল ৷ যুনলমানগণ চতৃর্কিংৰু থেকে
তাকে ঘিরে রেখেছেন ৷ আমাদের ইসলাম গ্রহণে তারা অতম্ভে খুশী হলেন ৷ এরপর খালিদ ইবন
ওয়ালীদ (রা) এগিয়ে আসলেন এবং বায়আত হলেন ৷ এরপর উছমান ইবন তালহা (রা) এগিয়ে
আসবেন ৷ তিনিও বায়আত হলেন ৷ এরপর আমি অগ্রসর হলাম ৷ আল্লাহ্র শপথ ৷ আমি তার
সামনে বসার পর তার দিকে লজ্জায় তাকাতে পারছিলাম না ৷ তারপর আমি বায়আত গ্রহণ কালাম
এ শর্তে যে, আমি পুর্বে যা গুনাহ করেছি তা ক্ষমা করে দেওয়া হবে, আর যা এখন করছি তার
জন্যে আমাকে কোন জবাবদিহি করতে হবে না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “ইসলাম তার পুর্বের
সব কিছু মিটিয়ে দেয় আর হিজরতও তার পুর্বের সবকিছু মিটিয়ে দেয় ৷” আল্লাহর শপথ ৷ যতদিন
থেকে আমরা মুসলমান হয়েছি আমাদের দলের কাউকে দলীয় কাজে আমার ও খালিদ ইবন
ওয়ালীদ (রা)-এর ন্যায় রাসুলুল্লাহ্ (সা) বেশী মর্যাদা দান করেননি ৷ এ মানৃযিলে আমরা হযরত
আবু বকর (রা)-এর সান্নিধ্যে ছিলাম এবং হযরত উমর (রা)-এর নিকটবর্তী ছিলাম ৷ তবে উমর
(রা) খালিদ (রা)-এর ক্ষেত্রে মৃদু ভর্ণসনকােরীর ন্যায় ছিলেন ৷ ওয়াকিদীর ওস্তাদ আবক্যু হামীদও
আমর ইবন আন-আস (বা) হতে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
আল্পামা ইবন কাহীর (র) বলেন, মুহাম্মাদ ইবন ইসহাকও অনুরুপভাৰে আমর ইবন
আল আস (বা) হতে বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি আবু রাফি নিহত হবার পর ৫ম হিজরীতে সংঘটিত
ঘটনাদিরও একটি বর্ণনা দেন ৷ তবে ওয়াকিদীর বর্ণনা বিস্তারিত ও অধিকতর প্রাণবন্ত ৷ তিনি আমর
(রা) খালিদ (রা) ও উছমান ইবন তালহা (রা)-এর আগমনের তারিখ ৮ম হিজরীর সফর মাসের ১
তারিখ বলে উল্লেখ করেছেন ৷ মুসলিম শরীফে হযরত আমর (না)-এর ইসলাম গ্রহণ, রাসুলুল্লাহ্
(সা)-এর সাথে সুমধুর ব্যবহার এবং মৃত্যুর অবস্থা ও রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ইনতিকালের পর
কর্তব্য সম্পাদ্দাকালে ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্যে অনুশোচনা ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা এসেছে ৷
খালিদ ইবন ওয়ালীদ (না)-এর ইসলাম গ্রহণ
ওয়াকিদী খালিদ ইবন ওয়ালীদ (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, আল্লাহ্
তাআলা যখন আমার প্রতি কল্যাণের ইচ্ছা করলেন, তখন আমার অতরে ইসলামের প্ৰতি
ভালবাসা ঢেলে দিলেন ও আমাকে সঠিক পথ অবলম্বনের তাওফীক দিলেন ৷ মনে মনে আমি
বলতে লাগলাম, মুহাম্মাদ (না)-এর সব ঘটনাইতে৷ অবলােকন করলাম প্রতেকটি ঘটনাতেই
তিনি সষ্ণাকাম ৷ তবে আমি কেন ভ্রান্ত পথে চলুছি ? মুহাম্মাদ (সা) অবশ্য অচিরেই জয়লাভ
করবেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন হুদায়ৰিয়ায় আগমন করেন তখন আমি মুশরিকদ্যেশ্ব সৈন্য ৷লােক
নিয়ে উসফানে যইি ৷ সেখানে রাসুলুল্লাহ্ (মা) ও তার সাহাবীদের সাথে আমাদের সাক্ষাত হয় ৷
আমি তার মুকাবিলায় র্দাড়ালায এবং তার সামনে বীধার সৃষ্টি করলাম তখন তিনি আমাদের
সামনেই তার সাহাবীগণকে নিয়ে যুহরের সালাত আদায় করেন ৷ আমরা তখন তাদের উপর
হামলা করতে মনস্থ করলাম; কিন্তু তিনি আমাদের প্রতি হামলার আগ্রহ প্রকাশ করলেন না ৷ আর
এটাতে ছিল মহাকল্যাণ ৷ তবে তিনি আমাদের মনোভাব আচ করতে পেরে তার সাথীবর্পকে নিয়ে
আসরের সালাত, সালাতে-খাওফ’ হিসেবে আদায় করলেন ৷ এটা আমাদের মাঝে একটা
আলোড়ন সৃষ্টি করল ৷ আমি মনে মনে বললাম ইনি তাে অত্যন্ত সুরক্ষিত মনে হচ্ছে ৷ তাই
আমরা সরে র্দহ্ড়ালাম ৷ তিনিও আমাদের সেনাবাহিনীর গতিপথ থেকে অন্য দিকে ফিরলেন ও ডান
দিকের রাস্তা ধরলেন ৷ যখন তিনি হুদায়বিয়ায় কুরায়শদের সাথে সন্ধি করলেন এবং কুরায়শরা
র্তাকে এবার চলে যেতে ও পরের বছর আগমন করতে অনুমতি দিল তখন আমি মনে মনে
বললাম, এখন আর কি বাকী থাকল ? এখন আমি কোথায় যাব ? নাজ্জাশীর কাছে ? তিনিত
মুহাম্মাদের আনুগত্য অবলম্বন করেছেন এবং মুহাম্মাদের সাহাবীপণ তীর কাছে নিরাপদে রয়েছেন ৷
তাহলে কি হিরাক্লিয়াসের কাছে চলে যাব ? তাহলেত নিজ ধর্ম পরিতা৷গ করে খৃণ্টান কিংবা
ইয়াহ্রদী হতে হবে ৷ তাহলে কি আমি অনারব দেশে বসবাস করব ? অথবা আমার দেশেই আমি
অবশিষ্ট লোকদের সাথে থেকে যাবো ? এরুপ চিন্তা ভাবনার মধ্যে আমি দিন কাটাতে লাগলাম ৷
এর মধ্যে কাযার উমরা পালনের জন্য রাসুলুল্পাহ্ (না) মক্কা প্রবেশ করলেন ৷ আমি আত্মগােপন
করলাম ৷ তীর প্রবেশ করার দৃশ্যটি আমি অবলোকন করলাম না ৷ আমার ভাই ওয়ালীদ ইবন
ওয়ালীদ রাসৃলুল্লাহ্ (সা )-এর সাথে কন্যার উমরা পালন করার জন্যে মক্কা প্রবেশ করে ৷ সে
আমার খোজ করল; কিন্তু সে আমাকে গেল না ৷ এরপর সে আমাকে একটি পত্র লিখল ৷ পত্রটি
ছিল নিম্নরুপ ? পরম দাতা ও দয়ালু আল্লাহ্র নামে শুরু করছি ৷ বাদ সংবাদ এই; ইসলামকে
প্রত্যাখ্যান করার তোমার অভিমত ও সিদ্ধান্তে আমি অত্যন্ত অবাক বোধ করছি ৷ তোমার
বুদ্ধিমত্তার আশ্রয় গ্রহণ কর ৷ ইসলামের মত ব্যাপার কি কারো কাছে অবিদিত থাকতে পারে ?
তোমার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন ৷ আমাকে বলেছেন, খালিদ কোথায়
? আমি প্রতি উত্তরে বলেছি, আল্লাহ তাকে আমার তাওফীক দেবেন ৷ তিনি বলেনঃ, তার মত
লোক কি ইসলামকে উপেক্ষা করতে পারে ? নিজের শৌর্য-বীর্যের মােহ ও অহংকার ছেড়ে যদি
সে মুসলমানদের সাথে মিশে যেত তাহলে এটা তার জান্য মঙ্গলজনক হত ৷ আর আমরা তাকে
অন্যের চাইতে বেশী মর্যাদা দিতাম ৷” হে আমার ভাই ! তোমার যেসব সুযোগ সুবিধা চলে (গছে
সে সবের ক্ষতি পুষিয়ে নাও ৷”
খালিদ ইবন ওয়ালীদ (বা) বলেন, “যখন আমার ভাইয়ের পত্র আমার হ্স্তগত হন, তখন
আমি ঘর থেকে বের হবার উৎসাহ পেলাম ৷ ইসলামের প্ৰতি আমার আগ্নহ বৃদ্ধি পেল ৷ আমরা
সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্রশ্ন আমাকে আরো বেশী খুশী করে ৷ আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি
যেন একটি অনুর্বর ও সংর্কীর্ণ ভুমিতে অবস্থান করছি ৷ এরপর আমি একটি বিস্তীর্ণ চির সবুজ
ভুমিতে নেমে এসেছি ৷ আমি মনে মনে বললাম, এটা একটি স্বপ্ন বটে ৷ যখন আমি মদীনায়
আসলাম, মনে করলাম যে, আমি আবু বকর (রা)-এর কাছে এ স্বপ্নের কথা উল্লেখ করব ৷ আবু
বকর (রা) বললেন, “ তোমার বিস্তীর্ণ সবুজ ভুমিতে নেমে আসার অর্থ হচ্ছে, ইসলামের সুশীতল
ছায়াতলে তোমার আশ্রয় নেয়ার জন্যে আল্লাহ্ তোমাকে পথ প্রদর্শন করেছেন ৷ আর সংকীপতার
অর্থ হচ্ছে তোমার শেরেকী ও কুফরীতে লিপ্ত থাকা ৷” খালিদ বলেন, “যখন আমি রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে যাওয়ার সুদৃঢ় সিদ্ধান্ত নিলাম তখন ভাবলাম, রাসৃলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে যেতে ত্’ক
আমার সাখী হবে ৷ এরপর আমি সাফওয়ান ইবন উমাইয়ার সাথে সাক্ষাৎ করলাম ৷ আমি বললাম,
হে ওহাবের পিতা ! তৃমিত আমাদের করুণ অবস্থা দেখতেই পাচ্ছ ৷ আমরা পেষকদন্তের ন্যায় ৷
মুহাম্মাদ আরব ও অনারৰের উপর বিজয় লাভ করেছেন ৷ আমরা যদি নৃহগ্যেদের দলভৃক্ত ইে এবং
তীর আনুগত্য স্বীকার করি তাহলে মুহন্মোদের মর্ষাদাই হবে আমাদের মর্যাদা ৷ কিত্তু সে
কঠোরভাবে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করল এবং বলল, “আমি ব্যতীত যদি আর কেউ মুসলমান হওয়া
ছাড়া বাকী না থাকে তবু কখনও আমি তার আনুগত্য স্বীকার করব ন একথা শোনার পর আমি
তার থেকে বিদায় নিলাম এবং নিজের মনে বললাম, এ এমন একজন লোক যায় ভাই ও পিতা
বদরের যুদ্ধে নিহত হয়েছে ৷ এরপর আমি ইকরামা ইবন আবৃ জাহ্লের সাথে সাক্ষাত করলাম
এবং সাফওয়ানকে যা বলেছিলাম তাকেও অনুরুপ বললাম ; কিন্তু সেও সাফওয়ানের ন্যায় জবাব
দিল ৷ এরপর আমি মনে মনে বললাম, এটা গোপন থকােই আমার জন্যে ভাল ৷ আমি এটা আর
কারো কাছেউল্লেখ করব না ৷ আমি আমার ঘরে গেলাম এবং বাহন প্রস্তুত করার নির্দেশ দিলাম ৷
আমি সাওয়ারী নিয়ে বের হয়ে পড়লাম এবং উছমান ইবন তালহার সাথে সাক্ষাত করলাম ৷ মনে
মনে বলতে লাগলাম, ইনিত আমার বন্ধুই, যা ইচ্ছে তার কাছে উল্লেখকরতে পারি ৷ এরপর তার
বাপ দাদাদেরও নিহত হওয়ার বিষয়টি স্মরণে আসল তখন তার কাছে সব কিছু উল্লেখ করা
সযীচীন মনে করলাম না ৷ আবার মনে মনে ভাবলাম ৷ এতে আমার কি ? এখনই আমি চলে
যাচ্ছি ৷ কাজেই আমি তার কাছে উল্লেখ করব যা হবার হবে ৷ এরপর আমি বললাম , দেখ আমরা
গর্তের শিয়ালের ন্যায়, যদি এ গর্ভে বেশী পরিমাণে পানি ঢালা হয় তাহলে আমরা বের হয়ে
আসতে বাধ্য হবো ৷ আমার পুর্বের দৃই বন্ধুর কাছে যা বলেতািন্থম তৃতীয় বন্ধুর কাছেও তাই
বললাম ৷ এবং তিনি সাথে সাথেই আমার অনুকুলে সাড়া দিলেন ৷ তাকে আমি বললাম, আজকে
আমি এখানে আছি ৷ আগামী কাল ভোরে মুহাষ্মাদের কাছে পৌছার ইচ্ছা রাখি ৷ আমার সাওয়ারী
তৈরী রয়েছে ৷ ইয়াজিজে পৌছার জন্যে আমি ও আমার বন্ধুটি তৈরী হতে লাগলাম ৷ সিদ্ধান্ত হল
যে আমার পুর্বেই পৌছলে আমার জন্যে অপেক্ষা করবে ৷ আর আমি তার আগে পৌছলে আমি
তার জান্য অপেক্ষা করব ৷ এরপর আমরা শেষরাতে সেখানে গিয়ে পৌছলাম ৷ তখনও ভোর
হয়নি ৷ ইয়াজিজে আমরা একে অন্যের সাথে মিলিত হলাম ৷ আমরা আল-হুদায় পৌছণাম এবং
সেখানে আমর ইবনুল আস (রা)-কে দেখতে পেলাম ৷ আমর বললেন তােমাদেরকে
স্বাগতম ৷ ” আমরা বললাম, ণ্তামান্বকও স্বাগতম ৷ আমর (বা) বললেন, “তোমাদের গস্তব্যস্থল
কোথায় ? আমরা বললাম, তৃমি কিসের অভিযানে বের হয়েছ ?” তিনি বললেন, “তোমরা
কিসের অভিযানে বের হয়েছ ?” আমরা বললাম, “ইসলামে প্রবেশ করার জন্যে এবং মুহস্ফোদের
আনুগত্য স্বীকার করার জন্যে আমরা এসেছি ৷” তিনি বললেন, ঐ একই উদ্দেশে আমিও
এসেছি ৷” আমরা সকলে মিলে ভোরে মদীনায় প্রবেশ করলাম ৷ হাৰ্বায় আমাদের কাফেলা
থামল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)–কে আমাদের আগমনের সংবাদ দেওয়া হল ৷ তিনি আমাদের আগমনে
খুশী হলেন ৷ আমি আমার ভাল জামা কাপড় পরিধান করলাম এবং রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর খিদমতে
পৌছার জন্যে রওয়নাে হলাম ৷ আমার ভইি আমার সাথে সাক্ষাত করলেন এবং বললেন তাড়া
ণ্তাড়ি কর, রাসুলুল্লাহ্ (সা)-কে তোমার আগমনের খবর দেওয়া হয়েছে ৷ তোমার আপমনে তিনি
খুশী হয়েছেন ৷ তিনি তোমাদের জন্যে অপেক্ষা করছেন ৷ তাড়াতাড়ি চল ৷ আমি রাসৃলুল্লাহ্ (সা)