Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » তায়েফ যুদ্ধ

তায়েফ যুদ্ধ

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • তাদের সেনাপতি স্বয়ং নবী করীম (সা) ৷ তিনি অতি দৃঢ়পদ ৷ পবিত্র-চিত্ত ৷ ধৈর্যশীল ও
    সংযমী ৷

    সঠিক সিদ্ধাম্ভদাতা, প্রজ্ঞাশীল, জ্ঞানী ও সহিষ্ণু ৷ চঞ্চল ও আরেগপ্রবণ নন ৷

    আমরা আনুগত্য করি আমাদের নবীর ৷ আমরা আনুগত্য করি এমন প্রতিপালকের যিনি অতি
    দয়ালু ও আমাদের প্রতি করুণাময় ৷

    তোমরা যদি আমাদের কাছে শাস্তির প্রস্তাব দাও, তবে আমরা তা গ্রহণ করবো ৷ আর
    তোমাদেরকে বানাবো আমাদের জন্যে শক্তি ও শাস্তির বাহক ৷

    আর যদি তোমরা অস্বীকার কর, তা হলে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো ধৈর্যের
    সাথে আমাদের তৎপরতা কখনও দ্বিধাযুক্ত ও দুর্বল হয়ে না ৷

    আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব যতক্ষণ বেচে থাকবাে ; অথবা তোমরা ফিরে আসবে ইসলামের
    দিকে আনুগত্যের সাথে ও ভদ্রভাবে ৷

    আমরা যুদ্ধ করবো, কারও কোন পরোয়া করবো না, যার সাশেইিচু মুকাবিলা হোক না কেন ৷
    স্থায়ী বাসিন্দা ও অস্থায়ী বাসিন্দা সকলকেই আমরা সমানে ধ্বংস করবো ৷

    কত গোত্রই তো আমাদের বিরুদ্ধে এলো — যাদের মধ্যে অনেকেই ছিল দৃঢ় সংকল্পকারী ৷
    আরও এসেজ্যি তাদের মিত্ররা ৷

    তারা এসেছিল আমাদের উদ্দেশ্যে ৷ তারা ধারণা করেছিল তাদের সমকক্ষ কেউ নেই ৷
    আমরা তাদের নাক-কান কেটে দিয়েছিলাম ৷

    কেটেছিলাম ভারতীয় হালকা শানিত তরবারি দ্বারা ৷ এর সাহায্যে আমরা তাদেরকে ঘাড় ধরে
    তাড়িয়ে নিয়ে আমি-

    আল্লাহর নির্দেশ পালন ও ইসলামের দিকে যাতে দীন প্রতিষ্ঠিত হয় — ভারসাম্যপুর্ণ ও
    একনিষ্ঠভাবে ৷

    আর যাতে লোকে ভ্যুল যায় লাত , উঘৃযা ও উদকে এবং আমরা ছিনিয়ে নিব ওদের গলার হার
    ও কানের দৃল ৷

    এর ফলে মানুষ স্থিতি ফিরে পায় ও শান্তি লাভ করে ৷ আর যারা বিরত হবে না তারা হবে
    অপমানিত ৷”

    ইবন ইসহাক বলেন : কিনানা ইবন আবদ ইয়ালীল ইবন আমর ইবন উমায়র ছাকাফী উক্ত
    কবিতার জবাব দেয় ৷

    আমি বলি, এ ঘটনার পর কিনানা ইবন আবদ ইয়ালীল ছাকীফ গোত্রের একটি প্রতিনিধি
    দলের সাথে এসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট একই সাথে ইসলাম গ্রহণ করে ৷ মুসা ইবন উকবা,
    আবু ইসহাক, আবু উমার ইবন আবদুল বাবু, ইবনুল আহীর প্রমুখ এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন ৷
    বিৎ মাদায়িনী বলেছেন যে , কিনানা ইসলাম গ্রহণ করেনি; বরং সে রােমে চলে যায় এবং খৃক্ট ধর্ম

    গ্রহণ করে তার মৃত্যুও সেখানে হয় !
    “যে আমাদেরকে সন্ধান করে আমাদের সাথে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে , তাকে বল, আমরা এমন

    একটি চিহ্নিত দেশে আছি যা আমরা ত্যাগ করবো না ৷

    আমরা এখানে আমাদের পুর্ব-পুরুষদেরকে পেয়েছি তোমাদের দেখার পুর্বে ৷ এখানকার
    পানির কুয়াে ও আৎগুরের বাপানগুলো আমাদের দখলে আছে ৷

    ইতোপুর্বে আমাদের পরীক্ষা করেছে আমর ইবন আমির গোত্র ৷ তাদের নিজ ও বিচক্ষণ
    লোকেরা এ সংবাদ তাদেরকে জানিয়েছে ৷

    তারা ভাল করেই জানে যদি তারা সত্য কথা বলে যে কোন অহংকারী দাচিক লোক
    সামনে আসলে আমরা তাকে উচিৎ শিক্ষা দেই ৷

    তাকে আমরা সোজা করে দেই ৷ ফলে তার চরিত্রের মন্দ দিকগুলো নরম হয়ে যায় এবং
    তাদের যালিম প্রকৃতির লোকগুলাে স্পষ্ট সত্য সম্পর্কে অবগতি লাভ করে ৷

    আমাদের পরিধানে আছে নরম বর্ম ৷ এগুলো আমাদের আয়ত্তে এসেছে অগ্নি দগ্ধ মানুষের
    থেকে ৷ ১ বর্মগুলোর রং আকাশী যে আকাশ সুশোভিত হয়েছে নক্ষত্ররাজি দ্বারা ৷

    এগুলো আমরা উঠিয়ে রাখি সেই সব ধারাল তরবারির সাথে যেগুলো যুদ্ধের প্রাক্কালে
    একবার খাপমুক্ত করা হলে আর তা খাপে ঢুকাইনা ৷ ”

    ইবন ইসহাক বলেন : শাদ দাদ ইবন আরিয জুশামী রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর তায়েফ যাত্রাকালে
    কবিতায় বলেন :

    “তোমরা লাভের সাহায্য করো না, কেননা, আল্লাহ্ তাকে ধ্বংস করবেন ৷ যে নিজেকে
    বাচাতে পারে না, তাকে সাহায্য করা যায় কিভাবে ?

    ১ এযুানে আমর ইবন আমিরের কথা বলা হয়েছে ৷ সে-ই সর্ব প্রথম মানুষকে অগ্নি দগ্ধ করে ৷ তাদের
    বম আমাদের হস্তগত হয় ৷

    যাকে পােড়ান হয় পাহাড়ের পাদদেশে এবং সেখান থেকে অগ্নি-শিখা উঠতে থাকে ৷ আর
    তার পাথরের কাছে অনর্থক যুদ্ধও করা হয় না ৷

    রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন তোমাদের এলাকায় পৌছবেন, তখন লোকজন এলাকা ত্যাগ করে
    চলে যাবে ৷ সেখানকার কোন অধিবাসী অবশিষ্ট থাকবে না ৷ ”

    ইবন ইসহাক বলেন : তারপর রাসুলুল্লাহ্ (না) হুনায়ন থেকে তায়েফ গমন করেন ৷ যাওয়ার
    পথে তিনি নাখলাতৃল ইয়ামানিয়া, কারণ ও মালিহ্ অতিক্রম করে লিয়্যার অন্তর্গত বুহ্রাতৃর রস্পায়
    উপনীত হন ৷ তিনি সেখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন ও তাতে সালাত আদায় করেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : আমর ইবন শুআয়ব আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, বুহ্রাতৃর-
    রুগায় অবতরণ করে রাসুলুল্লাহ্ (না) একটি খুনের কিসাস গ্রহণ (খুনের বদলে খুন) করেন ৷
    এটাই ছিল ইসলামের সর্ব প্রথম কিসাস ৷ বনুলায়ছের এক ব্যক্তি হুযায়লের এক ব্যক্তিকে হত্যা
    করে ৷ এর কিসাস হিসেবে তিনি ঘাতককে হত্যা করেন ৷ লিয়ব্রড়ায় অবস্থানকালে রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর নির্দেশে মালিক ইবন আওফের দুর্গ বিধ্বস্ত করা হয় ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : এরপর তিনি যীকা নামক একটি পথ দিয়ে সামনে অগ্রসর হন ৷ এ
    পথে যাত্রা শুরু করে তিনি পথটির নাম জিজ্ঞেস করেন ৷ তবে জানান হয় যে , পথটির নাম
    যীকা ৷ তিনি বললেন, যীকা (সংকীর্ণ) বলো না ; একে বরং ইউসৃরা (প্রশস্ত) বলো ৷ এরপর তিনি
    সেখান থেকে বেরিয়ে নাখাব পৌছেন ৷ সেখানে একটি কুল গাছের ছায়ায় অবতরণ করেন ৷
    গাছটিকে সাদিরা বলা হতো ৷ এর পাশেই ছিল ছাকীফ গোত্রের জনৈক ব্যজ্যি সম্পদ ৷ রাসুলুল্লাহ্
    (না) ঐ ব্যক্তির কাছে সংবাদ পাঠান যে, হয় তুমি আমাদের কাছে চলে এসো, না হয় তোমার
    প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলব ৷ সে ব্যক্তি আসতে অস্বীকার করলো ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) তা ভেঙ্গে
    ফেলার নির্দেশ দেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : ইসমাঈল ইবন উমাইয়ার সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন আমর থেকে
    বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে তায়েফের দিকে যাই, তখন
    পথে একটি কবরের কাছ দিয়ে আমরা অতিক্রম করছিলাম ৷ কবরটির দিকে ইংগিত করে
    রাসুলুল্লাহ্ (না) বললেন : এটি ছাকীফ গোত্রের পুর্ব পুরুষ আবু রিগালের কবর ৷ সে ছিল কওমে
    ছামুদের লোক ৷ সে হারম শরীফে অবস্থান করে আত্মরক্ষা করতো ৷ যখন সে হারম থেকে বের
    হয় তখন ঐ শাস্তি তার উপর পতিত হয়, যে শাস্তিতে আক্রান্ত হয়েছিল তার কাওমের লোকেরা
    এই স্থানে ৷ তাকে এখানেই দাফন করা হয় ৷ এর নিদর্শন হলো তার সাথে স্বর্ণের একটি ডালও
    দাফন করা হয় ৷ কবর খুড়লে স্বর্ণের ডালটি পেয়ে যাবে ৷ এ কথা শুনে সবাই এগিয়ে গেল এবং
    কবর থেকে পুতে রাখা স্বর্ণের ডালটি বের করে আনলো ৷ আবু দাউদ এ ঘটনা ইয়াহ্ইয়া ইবন
    মাঈন এর সুত্রে মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক থেকে বর্ণনা করেন ৷ ইমাম বায়হাকী ইয়াযীদ ইবন
    যুরায়’ সুত্রে ইসমাঈল ইবন উমইিয়া থেকেও অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (না) পথ অতিক্রম করে তায়েফের নিকটবর্তী এক স্থানে
    সৈন্যদের শিবির স্থাপন করেন ৷ এখানে তার কয়েকজন সাথী ভীরের আঘাতে নিহত হয় ৷ কারণ,
    সৈন্য শিবিরটি স্থাপন করা হয়েত্যি তায়েফের প্রাচীরের অতি সন্নিকটে ৷ তইি তিনি এখান থেকে

    শিবির উঠিয়ে পশ্চাতে নিয়ে যান এবং তায়েফের বর্তমান মসজিদের নিকটে স্থাপন করেন ৷ বনু
    ছাকীফ ইসলাম গ্রহণের পর এ মসজিদটি নির্মাণ করেছিল ৷ আমর ইবন উমইিয়া ইবন ওহবের
    তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হয় ৷ ঐতিহাসিকগণ লিখেন যে, এ মসজিদে এমন একটি স্তম্ভ ছিল যে,
    প্রতি দিন সকালে সুর্য উদয়ের সময় এর থেকে একটি আওয়ায শেন্তো যেত ৷ ইবন ইসহাক
    বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) তায়েফবাসীকে বিশ দিনের অধিক অবরোধ করে রাখেন ৷ ইবন হিশাম
    বলেন, অবরােধকাল ছিলসতের দিন ৷

    উরওয়া ও মুসা ইবন উকবা ইমাম যুহরী থেকে বর্ণনা করেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) তায়েফের
    উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন ৷ বন্দীদেরকে জিইররানায় রেখে যান ৷ তাদের সংখ্যা এতো অধিক ছিল যে,
    মক্কার র্তাবু পরিপুর্ণ হয়ে যায় ৷ তায়েফের দুর্গের কাছাকাছি গিয়ে তিনি শিবির স্থাপন করেন ৷ তের
    দিনেরও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করেন ৷ এখানে থেকেই তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন ৷
    তারাও দুর্গের ভিতর থেকে যুদ্ধ করে ৷ দুর্গের ভিতর থেকে এক ঝাক্ত ব্যতীত কেউ বাইরে
    বেরিয়ে আসেনি ৷ যে ব্যক্তি হলো যিয়াদের বৈপিত্রেয় ভইি আবুবাকরা ইবন মাসরুহ ৷ রাসুলুল্লাহ্
    (সা) র্তাকে মুক্ত করে দেন ৷ দুর্গের অভ্যন্তরে অনেকেই আহত হয় ৷ মুসলমানগণ
    তায়েফবাসীদের অনেক আৎগুর গাছ কেটে ফেলেন যাতে তারা ক্রোধে জ্বলতে থাকে ৷ তখন
    ছাকীফ গোত্রের লোকজন এ কাজে বাধা দিয়ে বলে, সম্পদের ক্ষতি সাধন করো না ৷ কেননা,
    এগুলো হয় তোমাদের অধিকারে আসবে না হয় আমাদের দখলে থাকবে ৷ উরওয়া বলেন :
    রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) মুসলিম বাহিনীকে নির্দেশ দেন, যেন প্রত্যেকে পাচটি করে খেজুর গাছ ও পচেটি
    করে আৎগুর গাছ কেটে ফেলে ৷ তিনি একজন ঘোষণাকারীকে পাঠিয়ে এই ঘোষণা জারী করেন
    যে, যে কেউ দুর্গ থেকে বের হয়ে আমাদের কাছে আসবে সে মুক্ত ৷ এ ঘোষণার পর শত্রু
    পক্ষের কয়েক ব্যক্তি অতি কষ্টে বের হয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর নিকট এসে পৌছে ৷ তাদের মধ্যে
    বিবাদ ইবন আবু সুফিয়ানের বৈপিত্রেয় ভাই আবু বাকরা ইবন মাসরুহও ছিলেন ৷ তিনি তাদের
    সবাইকে মুক্ত করে দেন এবং তাদের ভরণ-পােষণ ও দেখাশুনার জন্যে এক একজনকে এক
    একজন মুসলমানের দায়িত্বে দিয়ে দেন ৷

    ইমাম আহমদ ইয়াযীদের সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন : কোন
    গোলাম তার মুনিবের নিকট থেকে পালিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর নিকট এসে ইসলাম গ্রহণ করলে
    তিনি তাকে মুক্ত করে দিতেন ৷ তায়েফ যুদ্ধের সময় তিনি এরুপ দুজনকে মুক্ত করেন ৷ ইমাম
    আহমদ আবদুল কুদদুস ইবন বকর ইবন খুনায়সের সুত্রে ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা
    করেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) তায়েফবাসীকে চার দিক থেকে অবরোধ করেন ৷ সে সময় দুজন
    গোলাম বের হয়ে তার কাছে চলে আসে ৷ তিনি দু’জনকেই আযাদ করে দেন ৷ তাদের একজন
    হচ্ছেন আবু বকরা (রা) ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নীতি ছিল যে , কোন গোলাম তার কাছে চলে
    আসলে তাকে আযাদ করে দিতেন ৷ ইমাম আহমদ আরও বলেন : নাসর ইবন রিআব
    ইবন আব্বাস (না) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, তায়েফ যুদ্ধের দিন রড়াসুলুল্লাহ্ (সা)
    ঘোষণা দেন যে, কোন গোলাম আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলে সে মুক্ত ৷ এ ঘোষণার পর
    কতিপয় গোলাম তার কাছে বেরিয়ে আসে ৷ এদের একজন আবু বকরা ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের
    সবাইকে মুক্ত করে দেন ৷ এ হাদীছ উপরোক্ত সনদে ইমাম আহমদ একাই বর্ণনা করেছেন ৷

    সনদের কেদ্রীয় ব্যক্তি হাজ্বজাজ ইবন আরতাত একজন দুর্বল রাবী ৷ বিক্ষু ইমাম আহমদ এ মতই
    গ্রহণ করেছেন ৷ তার মতে কোন গোলাম যদি যুদ্ধরত শত্রুদেশ থেকে ইসলামী
    চলে আসে, তবে সে মুক্ত হয়ে যাবে ৷ বিনা শর্তে স্বাভাবিকভাবে এটাই
    শরীআতের বিধান ৷ কিত্ত্ব অন্যরা বলেন, এটা শর্ত-সাপেক্ষে ছিল, সাধারণ নির্দেশ ছিল না ৷ তবে
    হাদীছটি সহীহ হলে সাধারণ নির্দো৷ হওয়াই যুক্তি সংগত ৩৷ যেমন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন

    পাবে ৷ ইউন স ইবন বুকায়র মুহাম্মাদ ইবন ইসহাকের সুত্রে আবদুল্লাহ ইবন মুকাররাম ছাকাফী
    থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তায়েফ অবরোধ করলে তাদের কতিপয়
    গোলাম বেরিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট চলে আসে ৷ তাদের একজন হলেন হাবিছ ইবন
    কিলদা ৷র গোলাম আবু বকরা (রা) ৷ আর একজনের নাম মুনবায়েছ ৷ এর পুর্ব নাম ছিল ঘুযতাজে
    ( গ্লু ১৬; ) রাসুলুল্লাহ্ (সা) তীর নাম পরিবর্তন করে ব্রা:খন মুনবায়েছ (@গ্প্রুন্ ) ৷ বাকী
    দু’জনের নাম ইয়াহ্নাস ও ওয়ারদান ৷ এরা সবাই ইসলাম গ্রহণ করেন ৷ পরবর্তীন্ত যখন
    তায়েফের একদল প্রতিনিধি এসে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর নিকট ইসলাম গ্রহণ করে, তখন তারা
    আবেদন জানায় যে, আমাদের যে সব গোলাম আপনার নিকট চলে এসেছে৩ তাদেরকে ফিরিয়ে
    দিন ৷ জবাবে তিনি জানান ৷ ওদেরকে ফেরত দেওয়া যাবে না ওরা আল্লাহর পক্ষ থেকে আযাদ ৷
    তবে যে ৫গালামের কাছে তার মুনিবের মিরাছ পাওনা ছিল, তিনি তাকে তা ফেরত দেন ৷

    ইমাম বুখারী বলেন : আমাদের নিকট হাদীছ বর্ণনা করেছেন মুহাম্মাদ ইবন বাশৃশার
    আবুউছমান থেকে যে তিনি বলেছেন, আমি সা’দ (রা) থেকে শুনেছি যিনি আল্লাহ্র রাস্তায়
    প্রথম তীর নিক্ষেপকারী, আরও শুনেছি আবু বকরা (রা) থেকে যিনি কতিপয় দোকসহ
    তায়েফের প্রাচীর টপকিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট এসেছিলেন ৷ তারা দুজনেই বর্ণনা করেন
    যে, আমরা রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি জেনেশুনে অন্য লোককে নিজের
    পিতা বলে দাবি করবে, তার উপর জান্নাত হারাম ৷ ইমাম মুসলিম ও আসিমের সুত্রে অনুরুপ
    বর্ণনা করেছেন ৷ বুখারী বলেন : মামার আসিম আবুল আলিয়৷ কিৎব৷ আবু উছমান হিশাম নাহদী
    থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, আমি সা’দ (রা) ও আবু বকরা (রা)-ফে নবী (সা) থেকে বর্ণনা
    করতে শুনেছি ৷ আসিম বলেন, আমি আবুল আলিয়৷ কিৎবা আবু উছমান নাহদীকে বললাম, এমন
    দুব্যক্তি আপনাকে শুনিয়েছেন, যাদের উপর আপনার পুর্ণ আস্থা রয়েছে ৷ তিনি বললেন, হী৷ ৷
    কেননা, তাদের একজন হচ্ছেন সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহ্র পথে সর্ব প্রথম তীর নিক্ষেপ করেন আর
    অপরজন এমন, যে তায়েফ যুদ্ধে বেষ্টন-প্রাচীর উিৎগিয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা)শ্এর নিকট আগমনকারী
    ত্বেইশজনের একজন ৷

    ইবন ইসহাক বলেনং সে সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে দুজন শ্রী ছিলেন ৷ তাদের একজন
    হলেন উম্মু সালামা ৷ তাদের জন্যে তিনি দুটি র্তাবু স্থাপন করেন এবং ঐ৩ তাবুদ্বয়ের মাঝখানে তিনি
    সালাত আদায় করতে থাকেন ৷ তিনি তাদেরকে ( তায়েফবাসীদের) অবরোধ করে রাখেন এবং
    তাদের বিরুদ্ধে ভীষণভাবে যুদ্ধ করেন ৷ উণ্ড ভয় পক্ষ পরস্পরের উপর তীর নিক্ষেপ করতে থাকে ৷
    ইবন হিশাম বলেনঃ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তাদের প্রতি মিনজানীক দ্বারা পাথর নিক্ষেপ করেন ৷ আমার

    কাছে বিশ্বস্ত এমন এক ব্যক্তি আমাকে জানিয়েছেন যে , নবী (সা) সর্বপ্রথম ইসলামে মিনজানীক
    ব্যবহার করেন ৷ এর দ্বারা তিনি তায়েফবাসীদের প্রতি পাথর বর্ষণ করেছিলেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : এ দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কতিপয় সাহাবী একটি দাব্বাবায় (ট্যাৎক
    এর ন্যায় সমরাস্ত্র) প্রবেশ করেন ৷ তারপর তা আস্তে আস্তে টেনে নিয়ে যান তায়েফের প্রাচীর
    বিধ্বস্ত করার জন্যে ৷ তখন তাদের উপর পরম লৌহ শলাকা ফেলে দেওয়া হয় ৷ ফলে তারা
    দাব্বাবা থেকে বেরিয়ে আসেন ৷ তখন বনু ছাকীফ তাদের উপর তীর নিক্ষেপ করে ৷ এতে কিছু

    ত্খ্যক লোক নিহত হন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন বনু ছাকীফের আংগুরের বাগান কেটে ফেলার

    নির্দেশ দেন ৷ সাথে সাথে লোকজন বাগান কাটার কাজে লেগে যায় ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : আবুসুফিয়ান ইবন হারব ও মুর্গীরা ইবন গুব৷ গিয়ে ছাকীফ গোত্রের
    সাথে আলাপ আলোচনা করার জন্যে নিরাপত্তা চইিলেন ৷ তারা তাদেরকে নিরাপত্তা দিল ৷ তখন
    এরা কুরায়শ ও বনুকিনানার মহিলাদেরকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানায় ৷ তারা আশংকা করছিল
    দুর্গ বিজয়ের পর এদেরকে বন্দী করা হবে ৷ বিন্দু মহিলারা তাদের কাছে আসতে অস্বীকার করে ৷
    তখন আবুল আসওয়াদ ইবন মাসউদ আবু সুফিয়ান ও মুগীরাকে বললো — তোমরা যে উদ্দেশ্যে
    এসেছে! তার চেয়ে কোন উত্তম প্রস্তাব কি আমি রাখতে পারি ? শুনাে, আবুল আসওয়াদের সম্পদ
    কোথায় আছে তোমরা জান ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আর্কীক নামক যে উপত্যকায় অবতরণ
    করেছেন যে উপত্যকাটি বনু আসওয়াদের সম্পদ ও তায়েফের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত ৷ সমগ্র
    তায়িফে বনু আসওয়াদের সম্পদের চাইতে অধিক লাভজনক বেশী জীবনােপকরণ ও অধিক
    বসবাস উপযোগী সম্পদ আর নেই ৷ মুহাম্মাদ যদি তা ধ্বংস করে দেন তবে আর কখনও তা
    আবাদ হবে না ৷ সুতরাং তোমরা দু’জনে গিয়ে তার সাথে আলাপ কর ৷ হয় তিনি তা নিজের
    জন্যে রেখে দিন ; না হয় আল্লাহ্ ও আত্মীয়বর্গের জন্যে ছেড়ে দিন ৷ বর্ণনাকারিগণ বলেন,
    রাসুলুল্পাহ্ (সা) সে সম্পত্তি তাদের জন্যে রেখে দেন ৷ ওয়াকিদী তার উন্তাদগণ থেকে এরুপই
    বর্ণনা করেছেন ৷ তিনি আরও বলেছেন যে , মিনজানীক ব্যবহারের জন্যে সালমান ফারসী পরামর্শ
    দেন এবং নিজ হাতে তা তৈরী করেন ৷ কেউ বলেছেন, তিনি তা (পারস্য থেকে) সাথে করে
    নিয়ে আসেন এবং সেই সাথে দুটি দাব্বাবাও আনেন ৷

    ইমাম বায়হাকী ইবন লাহীআ সুত্রে আবুল আসওয়াদ, উরওয়া থেকে বর্ণনা করেন যে , উয়ায়না
    ইবন হিসৃন তায়েফ গিয়ে সেখানকার অধিবাসীদেরকে ইসলামের দিকে আহ্বান করার জন্যে
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করেন ৷ তিনি তাকে এ কাজের অনুমতি দেন ৷ কিত্তু
    সে তাদের কাছে এসে তাদেরকে দুর্গ অভ্যন্তরে অবিচল থাকার পরামর্শ দেয় ৷ দীর্ঘ আলোচনা
    করে সে আমার যে, তোমাদের বাগান বৃক্ষ কর্তনের সংবাদ যেন তোমাদের ঘাবড়িয়ে না দেয় ৷
    সে প্রত্যাবর্তন করার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি ওদেরকে কি বলেছো :
    উত্তরে সে বললো, আমি তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের জন্যে আহ্বান করেছি, জাহান্নামের ব্যাপারে
    সতর্ক করেছি এবং জান্নাতের পথ অবলম্বনের জন্যে উৎসাহ দিয়েছি ৷” তার কথা শুনে রাসুলুল্পাহ্
    (সা) বললেন : তুমি মিথ্যা বলছো, তুমি (তা তাদেরকে এই এই কথা বলেছো ৷ তখন সে বলে
    উঠলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! আপনি সত্য বলেছেন ৷ আমি আমার কাজের জন্যে আল্লাহ্র কাছে ও
    আপনার কাছে তাওবা করছি ৷”

    বায়হার্কী বর্ণনা করেন : হাকিম ইবন আবুনাব্জীহ সুলহ্বমী — আমর ইবন আবাসা (রা)
    থেকে বণিতি ৷ তিনি বলেছেন, আমরা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে তায়েফের দুর্গ অবরোধ করি ৷
    তখন আমি শুনতে পেলাম, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলছেন : যে ব্যক্তি একটি তীর নিয়ে পৌছবে সে
    জান্নাতে একটা মর্যাদা লাভ বরোব ৷ সে দিন আমি ষোলঢি তীর নিয়ে তীর কাছে পৌছাম ৷ আমি
    আরও শুনতে পেলাম, তিনি বলছেন : যে ব্যক্তি আল্লাহ্র পথে একটি ভীর নিক্ষেপ করবে সে
    একটি দাস মুক্ত করার সমান নওয়াব পাবে ৷ যে বৃদ্ধ আল্লাহ্র পথেত্ত্ব যুদ্ধ করবে ৷ কিয়ামতের দিন
    যে বিশেষ ধরনের নুর লাভ করবে ৷ যে ব্যক্তি কোন মুসলমান পুরুষ দাসকে আষাদ করবে,
    আল্লাহ্ ঐ দাসের প্রতিটি অস্থির পরিবর্তে আযাদকারীর প্রতিটি অস্থি₹ক জাহান্নাম থেকে রক্ষা
    করবেন ৷ যে মুসলিম নারী কোন মুসলিম দাসীকে মুক্ত করবে ৷ আল্লাহ্ তার প্রতিটি অস্থির
    বিনিময়ে আযাদকারীর প্রতিটি অন্থিকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত রাখবেন ৷ আবু দাউদ ও
    তিরমিষী এ হাদীছ অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ নসোঈ কাতদাে বর্ণিত এ হাদীছকে সহীহ্ বলে
    অভিহিত করেছেন ৷

    ইমাম বুখারী হুমায়দীর সুত্রে উন্মু সালামা থেকে বংনি৷ করেন যে, তিনি বলেছেন :
    এক সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমার কাছে আসেন ৷ তখন একজন হিজড়া আমার নিকট বসা ছিল ৷
    আমি শুনতে পেলাম, হিজড়া লােকটি আবদুল্লাহ ইবন আবু উমাইয়াকে বলছে আগামী কাল যদি
    আবৃন্তুাহ্ ণ্তামাদ্দেরকে তায়েফ জয় করার সামর্থ্য দেন তা হলে তুমি অবশ্যই গায়লানের কন্যাকে
    তুলে নিবে ৷ কেননা, সে (পেটে) চার ভাজসহ সামনে আসে এবং (পিঠে) আট ভীজসহ ফিরে
    যায় ৷ এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, ঐসব ইিজড়ারা যেন তোমাদের কাছে আর না
    আসে ৷ ইবন উয়ায়না বলেন, ইবন জুরায়জ বলেহ্নো, সেই হিজড়া লােকটির নাম ছিল ইাত ৷ এ
    ছাড়া ইমাম বুখারী এবং ইমাম মুসলিম বিভিন্ন সুত্রে হিশাম ইবন উরওয়ার পিতা থেকে অনুরুপ
    বর্ণনা করেছেন ৷ তবে এর ভাষ্য এরুপ “তারা মনে করতেন যে, হিজড়া ব্যক্তি যৌন বাসনা রহিত
    পুরুষ ৷ আবার কোন কোন বর্ণনায় এ কথা এসেছে
    যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলােছা : কি ব্যাপার ! ওখানে যা কিছু আছে সবই তো এ জানে ৷ এর? যেন
    আর তোমাদের কাছে না আসে ৷ অর্থাৎ যৌন কামনা সম্পর্কে যারা জ্ঞাত হবে তারা এ আয়াতের
    মধ্যে শামিল হবে ৷ যথা :

    “এবং নারীদের গোপন অংগ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত” (২৪ নুর : ৩১) ৷

    প্রাথমিক যুগের আলেমদের পরিভাষায় হিজড়া’ বলতে তাদেরকে বুঝায় যারা নারীদের সাথে
    সঙ্গমের সামর্থ্য রাখে না ৷ যার পুত্মৈথুনে জড়িত তারা এখানে উদ্দেশ্য নয় ৷ কেননা সে রকম
    হলে তাদেরকে হত্যা করা ওয়াজিং ৷ হাদীছ থেকে এটা প্রমাণিত ৷ আবু বকর সিদীক (না) এরুপ
    হিজড়াদের হত্যা করেছেন ৷ হিজড়!র উক্তি চারসহ আসে এবং আটসহ্ যায়’ এর অর্থ হল তার
    পেটের ভীজ ৷ যখন সে সম্মুখে আসে তখন পেটের চার র্ভাজ দেখা যায়, আর যখন ণিহনের দিকে
    যায় তখন পিঠের দিকে ঐ চার ভাজ প্রত্যেকটি দ্বিগুণ হয়ে আট র্ভাজ দেখা যায় ৷ উল্লিখিত
    মহিলার নাম ছিল ৰাদিয়া বিনৃত গায়লান ইবন সালমা ৷ সে ছিল হার্কীফ্ গোত্রের এৰ্শ্ শ্যা
    ৭ ৭

    পরিবারের সন্তান ৷ ইমাম বুখাবী ইবন জুরায়জের বরাতে এই হিজড়ার নাম বলেছেন হীত ৷ এ
    নামটইি সকলের নিকট প্রসিদ্ধ ৷ বিন্দু ইউনুস ইবন ইসহাক থেকে এভাবে বর্ণনা করেছেন যে,
    রাসৃলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে তার খালা বিনৃত আমর ইবন আয়িদ এর এক গোলাম ছিল ৷ সে ছিল
    ইিজড়া ৷ নাম তার মাতি ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর গৃহে মহিলাদের কাছে সে আসা যাওয়া করতো ৷
    তার ব্যাপারে আমাদের ধারণা ছিল যে, পুরুষরা মহিলাদের যে সব (অঙ্গের ) দিকে তাকায় সে সব
    ব্যাপারে এর কোন বুঝ ছিল না ৷ মনে হতো এগুলোর প্ৰতি তার কােনই আকর্ষণ নেই ৷ কিন্তু
    এক পর্যায়ে রাসুলুল্পাহ্ (না) শুনতে পেলেন যে, সে খালিদ বিন ওয়ালিদকে বলছে চ হে খালিদ
    রাসুলুল্লাহ্ (না) যদি তায়েফ জয় করতে পারেন তাহলে বাদিয়া বিনত পয়লান যেন তোমাদের
    হাতছাড়া না হয় ৷ কেননা, সে চার র্ভাজে আসে আর আট র্ভাজে যায় ৷ রাসুলুল্পাহ্ (না) তার মুখ
    থেকে এ কথা শুনতে পেয়ে বললেন : আরে এ দেখি এসব বুঝে ৷ তারপরে তিনি স্বীয়
    সহধর্মিণীগণকে ডেকে বলে দেন সে যেন আর তোমাদের কাছো আসে ৷ এরপর তার জন্য
    রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর গৃহে আসা বন্ধ হয়ে যায় ৷

    ইমাম বুখাবী বলেন : আলী ইবন আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ ইবন আমর সুত্রে বর্ণিত যে
    তিনি বলেছেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) তায়েফ অবরোধ করেন; কিভু তাদের থেকে কিছুই অর্জন
    করতে পারেননি ৷ তখন তিনি বললেন, আমরা ইনশাআল্লাহ্ আগামী কাল ফিরে যাব ৷
    সাহাবীগণের কাছে ফিরে যাওয়াটা খুব রেদনাদায়ক মনে হল ৷ তারা বলে ফেললেন আমরা এভাবে
    ফিরে চলে যাব, তায়েফ জয় করবো না ? তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “ঠিক আছে আগামী
    কাল সকালে তোমরা যুদ্ধ করবে ৷ ” পরের দিন সকালে যুদ্ধ করলে মুসলমানদের মধ্যে বেশ কিছু
    লোক আহত হয় ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) পুনরায় বললেন : “আগামী কাল ইনশাআল্লাহ্ আমরা এখান
    থেকে ফিরে যাব ৷” এবার কথাটি সাহাবীদের কাছে খুবই মনঃপুত হলো ৷ তাদের অবস্থা দেখে
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) হেসে দিলেন ৷ সুফিয়ানের কোন কোন বর্ণনায় আছে রাসুলুল্লাহ্ (সা) নৃচকি
    হড়াসলেন ৷ ইমাম মুসলিম এ হাদীছ সৃফিয়ান ইবন উয়ায়না থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷
    মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবন উমার ইবন খাত্তাব (রা)-এর সুত্রের উল্লেখ আছে ৷
    বুখারীর বিভিন্ন সংস্করণে সুত্রের বিভিন্নতা আছে ৷ এক মুদ্রণে আবদৃল্লাহ্ ইবন আমর ইবন আস
    (রা) থেকে অনুরুপ বর্ণনা উদ্ধৃত হয়েছে ৷

    ওয়াকিদী বলেন : আমার নিকট কাছির ইবন যায়দ ইবন ওয়ালিদ ইবন রাবাহ আবু হুরায়রা
    (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, তায়েফের অবরোধ কাল যখন পনের দিন অতিক্রম
    করে গেল, তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) নওফল ইবন ঘুআবিয়া দৃয়ালীর নিকট পরামর্শ চেয়ে জিজ্ঞেস
    করেন, হে নওফল ! এখানে অবস্থান আরও বৃদ্ধির ব্যাপারে তোমার মত কি ? তিনি বললেন ইয়া
    রাসুলাল্লাহ্ ! শৃগাল গর্তের মধ্যে আছে ৷ আপনি অবস্থান দীর্ঘ করলে ধরা পড়বে ৷ আর যদি
    পরিত্যাগ করেন আপনার কোন ক্ষতি নেই ৷

    ইবন ইসহাক বলেন : আমার কাছে এ কথা পৌছেছে যে ছাকীফ পােত্রকে অবরোধ কালে
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবু বকর (রা)-কে বলেছিলেন : হে আবু বকর ! আমি স্বপ্নে দেখি, মাখন ভর্তি
    একটি পেয়ালা আমাকে হাদিয়া দেয়া হয়েছে ৷ কিন্তু একটি মোরগ তাতে ঠোকর দেওয়ার সবটুকু
    মাখন নীচে পড়ে গেছে ৷ আবু বকর (রা) বললেন : আমার ধারণা, এদের থেকে আপনি যা পেতে

    আশা করেন এ যাত্রায় তা আপনি পাবেন না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন আমারও তাই মনে হয় ৷
    রাবী বলেন, উছমান ইব ন মাযউন (রা) এর শ্রী খাওল৷ বিনত হাকীম সালামিয়া (বা) রাসুল
    (সা) এর কাছে এসে বললেন, ইয়৷ রড়াসুলাল্লাহ্ আল্লাহ যাদ আপনাকে বিজয় দান করেন তা
    হলে আপনি আমাকে বাদিয়৷ বিনত গাযলন ইবন স লামার বঅলংকারগুলো কিংবা ফাবিআ বিনৃত
    আকীলের অলংকারগুলো প্রদান করবেন ৷ এরা ছিল ছাকীফ <;গাত্রের সমস্ত মহিলাদের মধ্যে
    অধিক অলংকারের অধিকারিণী ৷ জবাবে রাসুলুল্লাহ (সা) তাকে বললেন : হে খাওল৷ ! ছাকীফ
    গোত্রের সাথে যুদ্ধ করার অনুমতি যদি আমাকে দেওয়া না হয় ? এ কথা শুনে খাওল৷ বের হয়ে
    উমর ইবন খাত্তাব (রা) এর কাছে কথাটা প্রকাশ করলেন ৷ উমর (যা) তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর
    নিকট উপস্থিত ৩হয়ে জিজ্ঞেস করলো, ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ ! খাওলা আমার কাছে এরুপ কিছু কথা
    বলেছে এবং সে জা ৷নিয়েছে যে, আপনি তাকে তা বলেছেন ? তিনি বললেন আমি তা বলেছি ৷
    উমর (রা ) বললেন, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হয়নি ? তিনি বললেন না ৷ উমর (রা)
    বললেন, তবে কি আ ৷মি চলে যাওয়ার ঘোষণা দিব ? তিনি বলংগুন্ন , হ্যা ৷ তখন উমর (রা ) সেখান
    থেকে সবকিছু গুটিয়ে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দেন ৷ লোকজন যখন যাত্রা শুরু করলো তখন সাঈদ
    ইবন উবায়দ ইবন উসায়দ ইবন আবু আমর ইবন ইলাজ উচ্চস্বরে বলে উঠলাে, শুনাে ৷ এ গোত্রটি
    স্থুায়িতু পেল ৷ তখন উয়ায়না ইবন হিসন বললো, হী৷ ৷ আল্লাহর কসম ! এরা সন্তাম্ভ মর্যাদাশীল
    সম্প্রদায় ৷ তখন জনৈক মুসলমান উয়ায়নাকে বললো, হে উয়ায়না ! আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস
    করুন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) থেকে রক্ষা পেয়ে তুমি মুশরিকদের প্রশংসা করছো ? অথচ তুমি
    এসেছিলে তাকে সাহায্য করতে ? উয়ায়না বললো, আল্লাহর কসম ৷ আমি তোমাদের সাথে
    থেকে ছাকীফ গোত্রের বিরুদ্ধে লড়তে আসেনি; বরং আমিএ উদ্দেশ্যে এসেছিলাম যে, মুহাম্মাদ
    যদি ৷য়েফত জয় করতে পারেন৩ তবে আমি ছাকীফ গোত্রের একটি মেয়েকে নিয়ে গিয়ে তার
    সাথে মিলিত হবো ৷ হয়তো তার গর্ভে আমার একটা পুত্র সন্তান জন্ম লাভ করবে কেননা,
    ছাকীফ গোত্রের সন্তানরা প্ৰখর মেধা সম্পন্ন হয়ে থাকে ৷

    ইবন লাহীআ আবুল আসওয়াদের সুত্রে উরওয়া থেকে থাওলা বিনত হাকীমের ঘটনা ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর বক্তব্য ও উমর (রা)-এর যাত্রা অনুমতি সম্পর্কিত বর্ণনার পর বলেনং :
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) ৷লাকজনকে তাদের বাহন ঘাস খাওয়ানাের জন্যে ছেড়ে না দেওয়ার আদেশ প্রদান
    করেন ৷ সকাল হওয়ার সাথে সাথে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাহাবীদেরকে সংগে নিয়ে যাত্রা করেন ৷
    য়াত্রাকালে তিনি দুআ করেন : “হে আল্লাহ্ ! তুমি ওদেরকে সঠিক পথ দেখাও এবং তাদের দায়
    দায়িতৃ থেকে আমাদেরকে যুক্ত কর ৷ ” ইমাম তিরমিযী আবদুল্লাহ ইবন উছমা ন ইবন খায়ছামের
    সুত্রে আবুয যুবায়র জা ৷বির থেকে বর্ণনা করেন যে, সাহাবীগণ আরয় করেন ইয়া রাসুলাল্লাহ্ !
    ছাকীফ গোত্রের তীর আমাদেরকে পর্মুদস্ত করে দিয়েছে আপনি তাদের উপর অভিশাপ বর্ষণ
    করুন ৷” তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : হে আল্লাহ ! ছাকীফ গোত্রকে আপনি হিদায়ত করুন ৷
    তিরমিযী বলেন, হাদীছটি হাসান গরীব পর্যায়ের ৷ ইউনুস, ইবন ইসহ ক থেকে আ ৷লিমদের
    উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে, তায়েফবাসীদেরকে রাসুলুলাহ্ (সা) ত্রিশ দিন কিৎবা প্রায় তার কা ৷ছাকাছি
    সময় পযন্ত অবরোধ করে রাখেন ৷ তারপর অবরোধ উঠিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন ৷ তাদের বিরুদ্ধে
    যুদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি ৷ তিনি যথা সময়ে মদীনা চলে আসেন ৷ পরবর্তী রমযান মাসে

    তায়েফ থেকে একদল প্রতিনিধি এসে র্তার কাছে ইসলাম গ্রহণ করে ৷ নবম হিজরীর রমযান
    মাসের আলোচনা প্রসঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হবে ইনশাআল্লাহ্ ৷

    তারেক যুদ্ধে যারা শহীদ হন

    ইবন ইসহাকের বর্ণনা মতে তায়েফ যুদ্ধে যে সব মুসলমান শাহদােত বরণ করেন, নিম্নে
    র্তন্রুদর নাম উল্লেখ করা হল :

    ০ ক্যুায়শ গোত্রের সাঈদ ইবন সাঈদ ইবন আস ইবন উমইিয়া ৷

    ০ বনুউমায়া ইবন আসাদ ইবন পাওছেঃ৷ মিত্র উরফাতা ইবন হুবাব ৷

    ০ আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর সিদ্দীক (রা) ৷ তিনি একটি তীরবিদ্ধ হন ৷ তারই প্রতিক্রিয়ায়
    মদীনায় রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর ওফাতের পর তিনি ইনতিকাল করেন ৷

    ০ মাখযুম গোত্রের আবদুল্লাহ ইবন আবু উমাইয়া ইবন মুপীরা আল-মাখবুমী ৷ এ যুদ্ধে
    তিনিও তীরবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন ৷

    ০ বনুআদীর মিত্র আবন্মোহ্ ইবন আমির ইবন রাৰীআ ৷

    ০ সাহম গোত্রের সইিব ইবন হারিছ ইবন কায়স ইবন আদী আস-সাহমী এবং তার ভাই
    আবল্লোহ্ ৷

    ০ বনু সাদ ইবন লায়ছ গোত্রের জ্বণায়হা ইবন আবদুল্লাহ্ ৷

    আনসারদের মধ্য থেকে শহীদ

    ০ খাযরাজ গোত্রের ছাবিত ইবন জাষা’ আসলামী ৷

    ০ মাযিন গোত্রের হারিছ ইবন সাহ্ল ইবন আবুসাসা’ আল-মাষিনী ৷

    ০ বনুসাঈদাৱ মুনষির ইবন আবল্লোহ্ ৷

    ০ আওস গোত্রের শুধুমাত্র রুকায়ম ইবন ছাবিত ইবন ছা’লাবা ইবন যায়দ ইবন লাওযান
    ইবন মুআবিয়া ৷

    সুতরাং তায়েফ যুদ্ধে মোট বারজ়ন মুসলমান শাহাদত বরণ করেন ৷ তাদের মধ্যে সাতজন
    কুরায়শ গোত্রের চারজন আনসার সম্প্রদায়ের এবং একজন বনু লায়ছ গোত্রের ৷ আল্লাহ র্তাদের
    প্রতি সন্তুষ্ট হোন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, তায়েফের যুদ্ধ ও অবরোধ শেষে রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মদীনায়

    প্রত্যাবর্তন করেন, তখন বৃজায়র ইবন যুহায়ৱ ইবন আবু সুলমা হুনায়ন ও তায়েফ স্মরণে নিম্নোক্ত
    কবিতা বলেন :
    “হুনায়ন উপত্যকায় আওতাসের সকালে ও বিদ্যুৎ চমকানাের দিনে (তায়েফ) যুদ্ধগুলো
    একটার পর একটা আসতে থাকে ৷
    ভ্রষ্টতাবশতঃ হাওয়াযিন এক বিশাল বাহিনী সংগ্রহ করে ৷ কিন্তু তারা ছত্রতংগ হয়ে যায়,
    যেমন নীড়ভ্রষ্ট পাধীরা ছঘ্রভত্গ হয়ে থাকে ৷
    তারা আমাদের হাত থেকে একটা ন্থানও রক্ষা করতে পারেনি, তাদের প্রাচীর ও পর্তের
    গহ্বর ব্যতীত ৷
    আমরা তাদের সম্মুখে উপস্থিত হই, যাতে তারা বের হয়ে আসে ৷ বিক্ষ্ম তারা দরজা বন্ধ করে
    দুর্গের মধ্যে আশ্রয় নেয় ৷
    পরে তারা অনুতপ্ত হয়ে ফিরে এলো এক বিরাট বাহিনীর দিকে যারা যুদ্ধে অতি পারদর্শী, যারা
    অনিবার্য মৃত্যুর সাথে সাক্ষাতের ইংগিত দেয় ৷
    সবুজ বর্ণের পােশাকে আচ্ছাদিত সে বাহিনী ৷ তাদেরকে যদি নিক্ষেপ করা হয় কোন দুর্গের
    উপর, তার দুর্গের অবস্থা এমন হয়ে যায় যেন তার অস্তিতুই সাি না ৷
    তাদের চলার সতর্কতা ছিল যেমন হিংস্র বাঘের পিঠে পিপীলিকা হেটে চলে ৷ দুরত্বের
    পরিমাণ সমান রেখে যেন তারা অগ্রসর হয় ও মিলিত হয় ৷
    তারা ছিল মযবুত বর্মে সজ্জিত ৷ যখন তা সুদৃঢ়ভাবে বিনস্ত করা হয় তখন দেখতে
    জলাধারের মত মনে হয় ৷ যার উপর দিয়ে যায় প্রবাহিত হলে ঢেউ খেলতে থাকে ৷
    বর্যগুলাে ভুমি পর্যন্ত ঝুলান ৷ তার বাড়তি অংশ আমাদের জুতা স্পর্শ করে ৷ আর এগুলো
    দাউদ ও মুহাররিক পরিবারের হাতে নির্মিত ৷
    আবুদাউদ উমার ইবন খাত্তাব আবু হাফস আহমাস গোত্রের সাখর সুত্রে বর্ণনা
    করেন যে, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ছাকীফ গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন ৷ সাখর এ সংবাদ
    দ শুনতে পেয়ে একদল অশ্বারোহী নিয়ে রাসুলুল্লাহ্র সাথে মিলিত হওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন ৷
    পথিমধ্যে জানতে পারলেন যে, রাসুলুল্লাহ্ তায়েফ থেকে প্রত্যাবর্তন করেছেন এবং তা জয়
    করতে পারেননি ৷ তখন তিনি কঠিন প্রতিজ্ঞা করলেন যে, এরা রাসুলুল্পাহ্ (না)-এর ফায়সালা
    মেনে না নেয়া পর্যন্ত আমি এ দুর্গ ছেড়ে যাব না ৷ প্রতিজ্ঞা মতে তিনি তাদের থেকে পৃথক হননি ৷
    যতক্ষণ না তারা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ফায়সালা মেনে নেয় ৷ এরপর সাখর রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর
    নিকট এক পত্র লিখে জানান : ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ ! ছাকীফ গোত্রের লোকজন আপনার ফায়সালা
    মেনে নিয়েছে ৷ আমি তাদেরকে নিয়ে আসছি ৷ তারা আমার অশ্ববাহিনীতে আছে ৷ এ সময়
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) সালাতের জামায়াতের জন্যে আদেশ দেন ৷ সালাত শেষ করে তিনি আহমাসের
    জন্যে দশটি দুআ করেন ৷ যেমন তিনি বলেন : “হে আল্লাহ্ ! আহমাস গোত্রের অশ্ববাহিনী ও
    পদাতিক বাহিনীর উপর আপনি বরকত নাযিল করুন ৷ এরপর তিনি জনগণের সামনে আসেন

    এবং ষুর্গীরা ইবন শু’বা (রা)-এর সাথে কথা বলেন ৷ মুগীরা বললেন, ইয় ৷ রাসুলাল্লাহ্ ! সাখার
    আমার ফুফীকে বন্দী করেছে ৷ অথচ তিনি অন্যান্য মুসলমানগহুণর মত ইসলাম গ্রহণ করেছেন ৷
    তখন রাসুলুল্লাহ (সা) সাখারহুক ডেকে বললেন : কোন সম্প্রদায় যখন ইসলাম গ্রহণ করে তখন
    তাদের জীবন ও সম্পদ নিরাপত্তায় এসে যায় ৷ সুতরাং মুগীরার ফুফীকে তার কাছে দিয়ে দাও” ৷
    তখন সাখার তাকে মুগীরা র কাছে ফিরিয়ে দেন ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ (সা) )বনু সুলায়হুমর জলাশয়
    সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন ৷৩ তারা ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং জলাশয় থেকে
    পালিয়ে যায় ৷ সাখার বললেন, “ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ! এ জলাশয়ের দায়তু আমাকে ও আমার
    গােত্রহুক দিবেন কি ? তিনি বললেন, ই৷ দিলাম ৷ এরপর সাখার সেখানে যান ৷ এদিকে
    সুলায়ম গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহণ করে ৷ তখন তারা সাখাহুরর কাছে এসে তাদের জলাশয়
    ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানায় ৷ কিন্তু সাখার তা দিতে অস্বীকার করেন ৷ অবশেষে তারা
    রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে এসে আরয করে, “ইয়া রাসুলাল্লাহ ! আমরা ইসলাম গ্রহণ করে
    সাখাহুরর কাছে এসে আমাদের জলাশয় ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করি ৷ কিভু সাখার তা দিতে
    অস্বীকার করে ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : “(হ সাখার ! কোন সম্প্রদায় যখন ইসলাম
    গ্রহণ করে তখন তাদের জীবন ও সম্পদ নিরাপত্তা লাভ করে ৷ সুতরাং তৃমি তাদের জলাশয়
    ফিরিয়ে দাও ৷ সাখার বলহুলনং “ত্মী হ্যা, হুহ আল্লাহর নবী ! আমি তাই করবো ৷ বর্ণনাকারী
    বলেন, আমি৩ ৷কিয়ে দেখলাম সাখার একজন মহিলাকে ধরে আমার ও জলাশয় আটকে রাখার
    কারণে লজ্জা য় রাসুলুল্লাহ (সা)-এর চেহারা মুবারহুকর রঙ পরিবর্তিত হয়ে লাল হয়ে গেছে ৷ আবু
    দাউদ একাই এ হাদীছ বর্ণনা করেছেন ৷ তবে এর সনদে মতহুভদ আছে ৷

    আমি বলি, আল্লাহর রহস্যময় কুদরাভের দাবী ছিল ৷ ঐ বছর৩ তাহুয়ফ বিজয় না হওয়া ৷ কেননা
    এ সময় তাহুয়ফ বিজিত হলে সেখানকার অধিবাসীরা হত্যার ব্যাপকতায় ৰিনাশ হয়ে যেত ৷ কারণ,
    ইহু৩ তাপুবে বর্ণিত হয়েছে যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর পর ৩ ৷হুযহুয় গমন
    করেছিলেন, তাদেরকে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিয়েছিলেন এবং রিসালাহুতর দা ৷য়িৎ পালনের
    পক্ষে তাকে সাহায্য করার আহ্বান জ৷ ৷নিয়েছিহুলন ৷ বিক্ষ্মতা ৷রা তাকে মিথ্যাবাদী বহুল প্রত্যাখ্যান
    করোছল ৷ফলে অতি ৩ভগ্ন হৃদয়ে৩ তিনি সেখান থেকে প্র৩ ৷৷বতন করেছিলেন এবং কাবনুছ ছায়া ৷যালিব
    না পৌছা পর্যন্ত স্বাভাবিক হতে ৩পারেননি ৷ এখানে পৌছে তিনি একখণ্ড হুমঘ দেখতে পান ৷
    মেঘের মধ্যে ছিলেন জিবরাঈল (সা) ৷ তিনি শুনতে পান, পাহাড়ের দায়িতৃপ্রাপ্ত হুফহুরশত৷ তাকে
    তােক বলছেন : “ হে মুহাম্মাদ ! আপনার প্রতিপালক আপনাকে সালাম জানিয়েছেন এবং আপনার
    কওমের লোকেরা যা কিছু বলেছে এবং যেভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে সবই তিনি শুহুনহুছন ৷ এখন
    আপনি যদি চান তবে আমি তাদের উপর দুটি পাহাড় দু দিক থেকে হুচহুপ দিয়ে পিহুষ ফেলি ৷
    রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, “বরং তাদের জন্য আমাকে আরও কিছু অবকাশ দিন ৷ হতে পারে
    তাদের বংশে এমন লোক জন্ম নিহুব যারা এক আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তার সাথে অন্য
    কিছুই শরীক করবে না ৷ সুতরাং তিনি যে অবকাশ চেয়েছিলেন সেই অবকাহুশর দাবী ছিলো ঐ
    বছর তাহুয়ফ দুর্গ বিজিত না হওয়া ৷ কেননা বিজিত হলে হত্যার মাধ্যমে তারা নির্মুল হয়ে যেত ৷
    বরং বিজয় বিলম্বিত হওয়ইি ছিল রাঞ্চুনীয়, যাতে ৩পরের বছর রমযান সালে ইসলাম গ্রহণের জন্যে
    তারা মদীনা ৷য় আসতে পারে ৷ কিছু পরেই এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা আসবে ইনশাআল্লাহ ৷

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ তায়েফ যুদ্ধ Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.