এবার তরবারি পাওয়ার আবেদন জানালেন আবু দৃজ না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তরবাবিটি তাকেই
দিলেন ৷ অ বু দৃজানা শেষ পর্যন্ত তরবারির হক আদায় করেছিলেন ৷
সীরাতঅভিজ্ঞদের ধারণা যে, কাব ইবন মালিক বলেছেন, আমি যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী
মুসলমানদের মধ্যে ছিলাম ৷ আমি যখন দেখলাম যে মুশবিকদের সংখ্যা মুসলমানদের দ্বিগুণ
তখন আমি এক পাশে সরে র্দাড়ালাম ৷ আমি দেখলাম জনৈক মুশবিক সৈন্য পুর্ণভাবে অস্ত্র
সজ্জিত ৷ সে দ্রুতবেগে মুসলমানদের ব্যুহ ভেদ করে এগিয়ে যাচ্ছে ৷ সে বলছিল , পালাও ৷
পালাও ! ৷ যেমন যবেহ করার ভয়ে বকরী দল পালায় ৷ বর্ণনাকারী বলেন, আমি আরো দেখতে
পেলাম , একজন মুসলিম সৈনিক ওই মুশবিকের অপেক্ষায় আছে ৷ সেও পুর্ণভাবে অস্ত্র সজ্জিত
আমি গিয়ে মুসলিম সৈনিকের পেছনে র্দাড়ালাম ৷ আমি উভয় সৈনিকের অবস্থা পর্যবেক্ষণ
করছিলাম ৷ আমি বুঝে নিলাম যে, শড়ারিরীক ও অস্ত্র শস্তের দিক থােক মুশবিকটি অধিকতর
শক্তিশালী ৷ আমি অপলক নেত্রে তাদের দৃজনকে দেখছিলাম ৷ এক সময় তারা দুজন মুখোমুখি
হল ৷ মুসলিম সৈনিকটি তরবাবির আঘাত হানল মুশরিকেরড়া ঘা ড় বরাবর ৷ প্রচণ্ড আঘাতে তার
তরবারি মুশবিকের ঘাড় ণ্ত ভদ করে সোজা নিতম্ব অতিক্রম করে গেল ৷ লোকটি দুভাপে বিভক্ত
হয়ে মাটিতে নেতিয়ে পড়ল ৷ এবার মুসলিম সৈনিকটি তার মুখের পর্দা সরাল এবং বলল, হে
কাব ৷ কেমন দেখলেন ? আমি আবু দৃজানা ৷
হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদাতবরণ
ইবন ইসহাক বলেন, হযরত হামযা লড়াই করে যাচ্ছিলেন ৷ এক সময় তিনি আরতাত ইবন
শুরাহ্বীল ইবন হাশিম ইবন আবৃদ মনাফ ইবন আবদুদ্দার কে হত্যা করলেন ৷ আরতাত ছিল
শত্রুপক্ষের অন্যতম পতাক ধা৷রী ৷ তিনি ওদের পতাকাবাহী উছমান ইবন আবু তালহড়াকেও হত্যা
করলেন ৷ তখন উছমান ইবন তালহ৷ বলছিলং :
পতড়াকাবাহীর কর্তব্য হল বল্লমকে রক্তে রঞ্জিত করা অথবা নিজে র্টুকর৷ হয়ে যাওয়া ৷
ইত্যবসরে হযরত হামযা (রা ) তার উপর আক্রমণ চালালেন ৷ এবং তাকে হত্যা করলেন ৷ তার
পাশ দিয়ে যাচ্ছিল সিবা ইবন আবদুল উঘৃযা গুবশানী ৷ তার উপনাম ছিল আবু নাইয়ার ৷ তার
উদ্দেশ্যে হযরত হামযা (রা) বললেন, হে খতনাকারিণী মহিলার ছেলে, এদিকে আয় ৷ তার যা হল
উন্মু আনসার ৷ শুরায়ক ইবন আমর ইবন ওয়াহব ছাকাফীর আযাদকৃত ক্রীতদাসী ৷ মক্কায় সে
খাতন৷ পেশায় নিয়োজিত ছিল ৷ দুজনে মুখোমুখি হল ৷ হযরত হামযা তাকে আক্রমণ করে হত্যা
করলেন ৷ জুবায়র ইবন মুতইমের ক্রীতদাস ওয়াহ্শী বলে, আল্লাহর কসম, আমি দেখছিলাম
হামযড়াকে তিনি তরবারি দ্বারা প্রতিপক্ষের লোকজনকে কেটেই যাচ্ছিলেন ৷ তাকে ধুসর রঙের
উটের ন্যায় দেখাচ্ছিল ৷ আমার আগে সিবা গিয়ে হামযার নিকট পৌছল ৷ হামযা বললেন, হে
খতনাকাবিণীর ছেলে এদিকে আয় ৷ হামযা তার উপর আক্রমণ করলেন ৷ তবে সম্ভবত; তার
মাথায় আঘাত করতে পারেননি ৷ আমি আমার বর্শাত ৷ক করলাম ৷ সুনিশ্চিত ভাবে লক্ষ্যস্থির করে
আমি হামযার দিকে বর্শা ছুড়লাম ৷ বর্শা গিয়ে পড়লত তার নাভিমুলে ৷ নাভি ভেদ করে দৃপায়ের
মাঝখান দিয়ে সেটি বেরিয়ে এল ৷ আমাকে আক্রমণ করার জন্যে তিনি আমার দিকে আসতে
উদ্যত ৩,হলেন কিন্তু তার পুর্বেই নিস্তেজ হয়ে গেলেন, এবং মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন ৷ আমি এবন্টু
অপেক্ষা করলাম,ত তার মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত ৩হওয়ার পর আমি তার নিকট এলাম ৷ আমার বর্শা
খুলে নিলাম ৷ তারপর স্বগােত্রীয় সৈনিকদের নিকট ফিরে গেলাম ৷ আমার এর অতিরিক্ত কিছুর
দরকার ছিল না ৷
ইবন ইসহাক বলেন, আবদুল্লাহ ইবন ফযল ইবন আইয়াশ ইবন রাবীআ ইবন হড়ারিছ বর্ণনা
করেছেন, সুলায়মান ইবন ইয়াসার সুত্রে জাফর ইবন আমর ইবন উমাইয়া দিমারী থেকে ৷ তিনি
বলেছেন আমি নিজে এবং উবায়দৃল্লাহ্ ইবন আদী ইবন খিয়ার একবার এক সফরে বের হয়ে-
ছিলাম ৷ উবায়দৃল্লাহ্ ছিল বানু না ওফল ইবন আবদ মানাফ গোত্রের লোক তখন মুআবিয়৷ (রা )
এর শাসনকাল ৷ যেতে যেতে আমরা হিমৃস অঞ্চলে গিয়ে পৌছলাম ৷ জুবায়রের ক্রী৩ দাস ওয়াহ্শী
ওখানেই অবস্থান করছিল ৷ আমরা ওখানে পৌছার পর উবায়দৃল্লাহ্ ইবন আদী আমাকে বলল,
আমরা যদি ওয়ড়াহ্শীর নিকট গিয়ে হযরত হামযার (রা ) হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করি
তাতে তোমার কি কোন আপত্তি আছে ? আমি বললাম , তুমি যদি যাও, তবে আমিও বার এবং
তার কাছে ওই বিষয়ে জানতে চাইব ৷ বন্তুতঃ ওয়াহ্শীর খোজে আমরা বের হলাম ৷ লোকজনকে
তার অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছিলাম ৷ একজন লোক আমাদেরকে বলল, তোমরা তাকে তার
বাড়ির আঙ্গিনায় পাবে ৷ এমনও হতে পারে যে, মদের নেশা তাকে খুদ করে রেখেছে ৷ যদি
তোমরা তাকে এ অবস্থায় পাও যে তিনি চীৎকার করছেন তবে তোমাদের উদ্দেশ্য পুরণ হতে
পারে ৷ অর্থাৎ তার নিকট থেকে কা ত্খিত উত্তর পেতে পার ৷ আর যদি এ অবস্থায় পাও যে, মদের
সামান্য নেশা তার মধ্যে রয়েছে তবে কিছু জিজ্ঞেস না করে তাকে ছেড়ে চলে আসবে ৷
বর্ণনড়াকারী বলেন, আমরা যাত্রা করেও তার নিকট এসে পৌছলড়াম ৷ তিনি তার বাড়ীর আঙ্গিনায়
এক বিছানড়ায় উপবিষ্ট ছিলেন ৷ তিনি তখন বয়োবৃদ্ধ ৷ বুগাছ পাথীর ন্যায় সাদা কালো মিশ্রিত
গায়ের রং ৷ তিনি ডেকে ডেকে বলছিলেন যে, তার কোন অসুবিধা নেই ৷ আমরা তার নিকট
গিয়ে উপস্থিত হল ৷ম ৷ তাকে সালাম দিলাম ৷ তিনি ওবায়দৃল্লাহ্ ইবন আদীর দিকে চোখ তুলে
তড়াকালেন ৷ তাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি কি আদী ইবন খিয়ার এর পুত্র ? ওবায়দৃল্লাহ্ বলল,
জী হী, তাই ৷ ওয়াহ্শী বললেন, আল্লাহ্র কসম, তোমার দুধ মা সাদিয়্যা তোমকে ঘু-তৃওয়া
নামক স্থানে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি আর তোমাকে দেখিনি ৷ আমি সেদিন তোমাকে তার
হাতে তুলে দিয়েছিলাম ৷ তখন সে ছিল উটের উপর ৷ আমি তেড়ামার দু পাজর চেপে ধরে
তামাকে উটের পিঠে তুলে দিয়েছিলাম ৷ তোমার পা দুটো তখন আমার নজরে পড়ে এরপরে
আজ তুমি আমার নিকট এসেছ ৷ আমি তোমার পা দুটো দেখেই তোমাকে সনাক্ত করেছি ৷
বর্গনাকারী বলেন, আমরা দৃজনে তার নিকট বসলাম ৷ আমরা বললাম, আপনি হযরত হাময৷ ৷(র৷ ৷)
কে কীভাবে হ৩ ত্যা করেছিলেন তা জানতে এবং সে বিষয়ে আলোচনা করতে আমরা আপনার
নিকট এসেছি ৷ ওয়াহ্শী বললেন, এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন ৷
ঘটনাটি আমি তাকে যেভাবে জানিয়েছি তােমাদেরকেও সেভাবে জানার ৷ আমি জুবায়র ইবন
ঘুতইম-এর গোলাম ছিলাম ৷ তার চাচা তৃআয়মা ইবন আদী বদর যুদ্ধে নিহত হয় ৷ কুরায়শরা
পরবর্তী বছর উহুদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ৷ তখন আমার মালিক জুবায়র আমাকে বলেছিলেন যে,
তুমি যদি আমার নিহত চাচার প্রতিশোধ হিসেবে মুহাম্মাদুদব (সা) চাচা হামযাকে হত্যা করতে পার
তবে তুমি মুক্তি পাবে ৷ কুরায়শী সৈন্যদের সাথে আমি যাত্রা করি ৷ আমি মুলতঃ হাবশী বংশোদ্ভুত
লোক ৷ হাবশী কৌশলে আমি বর্শা নিক্ষেপ করতে পারি যা খুব কমই লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয় ৷ উহুদ
ময়দানে উভয় পক্ষ মুখোমুখি হয় ৷ আমি হামযার খোজে বের হলাম ৷ হঠাৎ আমি তাকে
দুলাকজদুনর মাঝে দেখতে পেলাম ৷ তিনি যেন একটি ধুসর বর্ণের উট ৷৩ তরবারির আঘাতে
শত্রুপদুক্ষর দুলাকজনদুক কেটে কেটে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন ৷ দুকট্টই ৩াদুক প্রতিরোধ করতে
পারছে না ৷ আল্লাহর কসম, আমি তার জন্যে প্রস্তুত হচ্ছিলাম ৷ আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিলেন
তিনি ৷ একটি পাথর কিৎবা বৃক্ষের আড়ালে লুকিয়ে ছিলাম আমি ৷ অপেক্ষা করছিলাম যাতে তিনি
আমার নাগালের মধ্যে আসেন ৷ ইদু৩ ৷মধ্যে সিবা ইবন আবদুল উয্যা তার সম্মুখে গিয়ে
পৌছলেন ৷ তাকে দেখে হু ংকার দুছড়ে হামযা বললেন ও,দুহ খতনাকাবিণীর দুছদুল ৷ এদিকে আয় ৷
অবিলম্বে হাময৷ তাকে আক্রমণ করলেন; বিতু৷ তার মাথায় আঘাত করতে সক্ষম হলেন না ৷
ওয়াহ্শী বলেন, আমি আমার বর্শা তাক করলাম ৷ নিশ্চিত ভাবে লক্ষ্য স্থির করে আমি বর্শা
ছুড়লাম ৷ বর্শা তার নাভিমুলে গিয়ে পড়ল ৷ নাভি ভেদ করে সেটি তার দৃপাদুয়র মাঝখান ভেদ
করে বেরিয়ে পড়ে ৷ তিনি আমাকে আক্রমণ করার জন্যে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করেন ৷ বিক্ষ্ম
তাতে সক্ষম হননি ৷ কিছুক্ষণ আমি অপেক্ষা করি ৷ বর্শাবিদ্ধ অবস্থায় তাকে থাকতে দিই ৷
অবশেষে তিনি মারা যান ৷ এরপর আমি তার নিকট আ সি এবং আমার বর্শাটি খুলে নেই ৷ পরে
আমি স্বগােত্রীয় সৈন্যদের সাথে মিলিত হই ৷ সেখানে বিশ্রাম গ্রহণ করি ৷ আমার অন্য কোন দায়-
দায়িতৃ ছিল না ৷ আমি তাকে হত্যা করেছিলাম যাতে আমি দাসতু থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি ৷
যুদ্ধ শেষে মক্কায় আসার পর আমি মুক্তি লাভ করি , এবং সেখানে অবস্থান করতে থাকি ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মক্কা জয় করেন তখন আমি তাদুয়দুফ পালিয়ে যাই ৷ সেখানেই আমি
অবস্থান করছিলাম ৷ তাদুয়দুফব লোকজন যখন ইসলাম গ্রহণের জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
উদ্দেশ্যে যাত্রা করল তখন আমি সংকটাপন্ন হয়ে পড়লাম ৷ আমার বসবাসের স্থান সংকুচিত হয়ে
এল ৷ আমি সিদ্ধান্ত নিলাম সিরিয়া কিত্বা ইয়ামান কিৎবা অন্য কোন দেশে চলে যাওয়ার ৷ আমি
এমন চিন্তাভাবনায় ছিলাম এমন সময় একজন লোক আমাকে বলল, আল্লাহ্র কসম , মুহাম্মাদ
(সা) তাে তার দীন গ্রহণকারী এবং সত্যের সাক্ষ্যদানকারী কাউকে হত্যা করেন না ৷ এ সংবাদ
অবগত হয়ে আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে সাক্ষাতের জন্যে যাত্রা করি ৷ আমি মদীনায় তার
নিকট পৌছি ৷৩ তার নিকট র্দাড়িদুয় আমি সত্যের সাক্ষ্য দিচ্ছি এটা দেখে রাসুলুল্লাহ্ (সা) হতচকিত
হয়ে পড়লেন ৷ তিনি আমাকে বললেন, “তুমি কি ওয়াহ্শী ? আমি বললাম জী ইা,৩ তাই ইয়া
রাসুলাল্লাহ্! তিনি বললেন, তবে আমার নিকট বস এবং হামযা (রা) কে তুমি কীভাবে হত্যা
করেছ তা ৷আমার নিকট খুলে বল! আমি এখন তোমাদের নিকট যা বললাম রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর
নিকটও ঠিক তাই বলেছিলাম ৷ আমার বর্ণনা শেষ হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে
বলেছিলেন, তোমার মুখমণ্ডল তুমি আমার দৃষ্টি থেকে আড়ালে রাখদুব ৷ আমি যেন তোমার
মুখমণ্ডল দেখতে না পাই ৷ তখন থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) দুযখড়াদুনই থাকদু৩ ন সেখানে আমি
মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতন্নে যাতে আমার চেহারা তার নজরে না পড়ে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ইনতি-
কাল পর্যন্ত আমি এরুপ করেছি ৷ হযরত আবু বকর (রা)-এর যুগে ভণ্ড নবী-মিথ্যাবাদী ঘুসায়লামা
র বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে মুসলমানপণ যখন ইয়ামামার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে তখন আমিও
তাদের সাথে যাত্রা করি ৷ যে বর্শ৷ দ্বারা আমি হযরত হামযা (রা)-কে হত্যা করেছিলাম ওই বর্শাটি
আমি সঙ্গে নিই ৷ উভয় পক্ষ মুখোমুখি হওয়ার পর আমি মুসায়লামাকে র্দাড়ানে৷ অবস্থায় ৫দখোত
পাই ৷ তার হাতে ছিল তরবারি ৷ আরো কিছু চিহ্ন ছিল যা দ্বারা আমি তার পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত
হই ৷ ডাকে আক্রমণ করার জন্যে আমি প্রস্তুত হই ৷ অন্য দিক থেকে একজন আনসারী লোকও
তার উপর আক্রমণ করার জন্যে প্রস্তুত হয় ৷ আমাদের উভয়ের লক্ষ্য ছিল সে ই ৷ আমি আমার
বর্শা তাক করলাম ৷ নিশ্চিতভাবে লক্ষ্যস্থির করে আমি বর্শ৷ নিক্ষেপ করলাম ৷ বর্শা গিয়ে তাকে
আঘাত করে ৷ আনসারী লোকটিও তার উপর তরবারির আক্রমণ চালায় ৷ আমাদের দুজনের মধ্যে
কে তাকে হত্যা করেছে তা আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷ বন্তুত অ৩ামিই যদি তাকে হত্যা করে থাকি
তবে একদিকে আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পর সর্বোত্তম ব্যক্তি অর্থাৎ হযরত হামযা (রা) কে হত্যা
করেছি আর জগতের নিকৃষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ মুসায়লামাকে হত্যা করেছি ৷
আমি মনে করি , আনসারী লোকটি ছিলেন আবুদুজানা সিমাক ইবন খারাশা ৷ ইয়ামামার যুদ্ধে
ওই বিবরণ আসবে ৷ মুরতাদ ও ধর্মতা৷পীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাভিযান পর্বে ওয়াকিদী উল্লেখ করেছেন
যে, আনসারী লোকটি ছিলেন আবদুল্লাহ ইবন যায়দ ইবন আসিম মাযানী ৷ সায়ফ ইবন আমর
বলেন, ওই আনসারী লোক হলেন আদী ইবন সাহ্ল ৷ বন্তুত: আদী ইবন সাহল নিম্নের কবিতা
আবৃত্তি করেছিল :
তুমি কি জাননা যে, আমি এবং ওয়াহ্শী হত্যা করেছি অভিশাপগ্রস্ত মুসায়লামাকে ৷
,
লোকে আমাকে জিজ্ঞেস করে যে, আমি কিভাবে তাকে হত্যা করেছি ৷ তখন আমি বলি যে,
আমি তাকে আঘাত করেছি ৷ আর এটি হল সেই বর্শ৷ ৷
প্রসিদ্ধ অভিমত এই যে, ওয়াহ্শীই প্রথম মুসায়লামাকে আঘাত করেন এবং আবু দুজানা তার
উপর চুড়ান্ত আঘাত হানেন ৷ এ বিষয়ে ইবন ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আবদুল্লাহ ইবন ফযল
আবদুল্লাহ ইবন উমার (রা ) থেকে ৷ তিনি বলেছেন, ইয়ামামার যুদ্ধের দিন আমি জনৈক
চীৎকারকারীকে শুনেছি সে চীৎকার করে বলছিল যে, এক কালো ক্রীতদাস তাকে হত্যা করেছে ৷
ইমাম বুখারী (র) হযরত হামযা (রা)-এর শাহাদাতের ঘটনা বর্ণনা করেছেন আবদ্বণ আযীয ইবন
আবদুল্লাহ জাফর ইবন উমাইয়া দিসারী থেকে ৷ তিনি বলেছেনু আবদুল্লাহ ইবন আদী
ইবন খিয়ারের সাথে আমি সফরে বের হয়েছিলাম ৷ এরপর পুর্বোল্লিখিত বিবরণ উল্লেখ করেছেন ৷
ওই বর্ণনায় আছে যে , উবায়দুল্লাহ্ ইবন আদী ইবন খিয়ার যখন ওয়াহ্শীর নিকট উপস্থিত হন তখন
তার সমগ্র মুখমণ্ডল পাগড়ীতে ঢাকা ছিল তার দুটো চক্ষু আর দুখানা পা ব্যতীত অন্য কিছুই
ওয়াহ্শীর দৃষ্টিগােচর হচ্ছিল না ৷ এরপর ওয়হ্শী ভীকে যেভাবে চিনলেন তার বর্ণনা রয়েছে ৷ এটি
একটি গভীর পর্যবেক্ষণ ও বিচক্ষণত৷ বটে ৷ অনুরুপ বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন মৃজায্যায
মুদলিজী ৷ হযরত হায়দ ওত তার পুত্র উসামার (রা ) দেহের রং ভিন্ন ভিন্ন হওয়া সত্বেও মুজায্যায
মুদলিজী উসামার (রা ) পা দেখে বলেছিলেন যে, এ হচ্ছে য়ায়দের পুত্র ৷
ইমাম বুখারীর উদ্ধৃত বর্ণনায় আছে যে, ওয়াহ্শী বলেছেন, লোকজন যখন যুদ্ধের জন্যে
সারিবদ্ধ হল তখন সিবা ময়দানে বেরিয়ে আসে ৷ সে বলল , আমার বিরুদ্ধে লড়াই করার কেউ
আছ কি ? তখন হানযা ইবন আবদুল মুত্তালিব বেরিয়ে এলেন ৷ হুৎকার ছেড়ে৩ তিনি বললেন, ওহে
সিবা ওহে খৎনাবারীর পুত্র, তুইাক আল্লাহ ও তার রাসুলকে চ্যালেঞ্জ করছিল ? একথা বলেই
তিনি সিবা কে আহ্ৰুাষ্মণ করলেন ৷ সাথে সাথে সে অতীতে তর ইতিহাসে পরিণত ৩হল ৷ ওয়াহুশী
বলেন, হামযাকে তাক করে একটি পাথরের আড়ালে আমি লুকিয়ে রয়েছিলাম ৷ তিনি আমার
নিকটবর্তী হলেন ৷ আমি তাকে লক্ষ্য করে, বর্শা ছুড়ি ৷ বর্শাটি ঠিক তার নাভিতে গিয়ে পহ্ব,ড় ৷
তারপর তা তার ভু নিতন্বের মাঝখান দিয়ে বের হয়ে আসে ৷ এই ছিল তার অন্তিম অবস্থা ৷
ওয়াহ্শী এও বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর ওফাতের পর খোন ভণ্ড নবী মুসায়লামার আবির্ভাব
ঘটল তখন আমি বললাম , সম্ভবত আমিই তাকে হত্যা করতে পারব যাতে করে হযরত হামযা
(বা ) কে শহীদ করার দায় থেকে আমি মুক্ত হতে পারি ৷ মুসায়লামার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে
যারা যাচ্ছিল আমি তাদের সাথী হলাম ৷ এরপর যা হবার হল ৷ আমি দেখতে পেলাম যে, এক
ব্যক্তি একটি ভগ্ন প্রাচীরের কাছে দাড়িয়ে আছে ৷ তার মাথায় চুল এলােমেলাে ৷ দেখতে ধুসর
উটের মত ৷ তাকে লক্ষ্য করে আমি আমার বর্শা নিক্ষেপ করলাম ৷ সেটি গিয়ে তার বুকভেদ
করে তার দৃ’ কারুষ্প্র মাঝ দিয়ে বেরিয়ে গেল ৷ একজন আনসারীও তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে
ছিলেন, নিজের৩ তর স্থারি দিয়ে তিনি মুসায়লামার মাথায় আঘাত করেছিলেন ৷
আবদুল্লাহ ইবন ফযল বলেন সুলায়মান ইবন ইয়াসার বলেছেন যে, তিনি আবদুল্লাহ ইবন
উমার (বা ) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলছিলেন তখন জনৈকা ক্রী দাসী ঘরের ছাদে উঠে
বলছিল , হায় আমীরুল মু ’মিনীন ! তার জন্যে দুঃখ হয় ৷ একজন কালো ক্রীতদাস তাকে হত্যা
করেছে ’
ইবন হিশাম বলেন, আমার নিকট বর্ণনা পৌছেছে যে, ওয়াহ্শী মদপানে অভ্যস্ত ছিলো ৷ এ
জন্যে তাকে সরকারী চাকুরী থেকে বরখস্তে করা হয় ৷ হযরত উমার ইবন খাত্তাব (রা ) বলতেন
যে হযরত হামযা র (বা ) হত্যাকারীকে আল্লাহ ছাড়বেন না ৷
ওয়াহ্শী ইবন হারব আবু দাসামা ম৩ান্তরে আবু হারব এর ওফাত হয় হিমৃসে ৷ তিনিই
সর্বপ্রথম ইগ্রি করা <পাশা ক পরিধান করেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে আড়াল করে মুসআব ইবন উমায়র যুদ্ধ করে
যাচ্ছিলেনৰু শেষ পর্যন্ত তিনি শহীদ হলেন ৷ ইবন কামিয়া লায়ন্থীাকে হত্যা করেছিল ৷ যে
মুল সআব (রা)-কে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলে ধারণা করেছিল ৷ ফলে সে কুরায়শদের নিকট গিয়ে
বলল, আমি মুহাম্মাদকে হত্যা করেছি ৷
মুসা ইবন উক্বা তীর মাপাযী গ্রন্থে সাঈদ ইবন মুসাব্যির থেকে বর্ণনা করেছেন যে, উবাই
ইবন খালফ ই হযরত ঘৃসআর (রা) কে হা করেছিল ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
১ বিশুদ্ধ উচ্চারণ হচ্ছে মুসায়লিমা ৷
আল্বিাদ্ায়া ওয়ান নিহায়া
ইবন ইসহাক বলেন, মুসআব ইবন উমায়র (রা ) নিহত হবার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত
আলী ইবন অড়াবী তড়ালিবেয় হাতে পতাক অর্পণ করেন ৷ তবে ইবন ইসহাকের উদ্ধৃতি দিয়ে
ইউনুস ইবন বুকায়র বলেছেন ৷ প্রথম থেকেই পতাকা ছিল হযরত আলীর হাতে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা )
যখন দেখলেন যে, মুশরিকদের পতাকা বহন করছে আবদুদ্দার গোত্রের লোকেরা ৷ তখন তিনি
বললেন, প্রতিশ্রুতি পুরণের আমরাই ওদের চেয়ে অধিক চর হকদার ৷ তখন তিনি আলী (রড়া) এর
হাত থেকে নিয়ে পতাকা মুসআব ইবন উমায়রের হারে অর্পণ করলেন ৷ হযরত মুসআব শহীদ
হওয়ার পর আবার পতাকা আলী (রা)-এর হাতে তুলে দেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, হযরত আলী (রা ) এবং অপর কতক মুসলিম যোদ্ধা বীর বিক্রমে যুদ্ধ
চালিয়ে যেতে লাগলেন ৷
ইবন হিশাম বলেন, মাসলামা ইবন আল কামা আল-মুযিনী আমাকে বলেছেন যে, উহুদ
প্রাতরে যখন যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করল তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) আনসারীদের পতাকার নীচে
বললেন ৷ হযরত আলী (রা ) বলে পাঠালেন যে , পতাকা এগিয়ে নিয়ে যাও ৷ হযরত আলী পতাকা
নিয়ে এগিয়ে গেলেন ৷ তিনি বলছিলেন আমি আবুল ক ৷সাম কতনিকারীর পিতা ৷ তার ঘোষণার
উত্তরে মুশরিকদের পতাকা বহনকারী আবু সাদ ইবন আবু তড়ালহা বলল, হে আবুল কাসাম ! দ্বন্দ্ব
যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে ৷ হযরত আলী (রা ) বলাত্বলন, অবশ্যই ৷ দুজন উভয় পক্ষের ম ধ্যখানে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে
অবতীর্ণ হলেন ৷ হযরত আলী (বা) তার উপর আক্রমণ করলেন ৷ সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল ৷
তাকে দ্বিখণ্ডিত না করেই তিনি ফিরে এলেন ৷ কেউ কেউ তাকে জিজ্ঞেস করল, আপনি ওকে
হত্যা না করে ফিরে এলেন কেন ? তিনি জবাবে বলেন যে বিবস্ত্র হয়ে পড়ায় তার প্রতি আমার
করুণার উদ্রেক হয় ৷ তবে বুঝে নিয়েছি যে তার মৃত্যু অবধারিত ৷ এরকম একটি ঘটনা
ঘটিয়েছিলেন হযরত আলী (রা) সিফফীনের যুদ্ধেও ৷ সেটি ছিল বুসর ইবন আবু আরতাতের
সঙ্গে ৷ তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে হযরত আলী (বা) তার উপর আক্রমণ চালিয়েছিলেন ৷ সে
তখন তার সম্মুখে নিজের লজ্জাস্থান উন্মুক্ত করে দেয় ৷ হযরত আলী (রা) তাকে ছেড়ে চলে
আসেন ৷ আমর ইবন আস ও সিফফীনের যুদ্ধে একবার তেমনটি করেছিলেন ৷ একদিন হযরত
আলী (বা) আমরের উপর আক্রমণ করেছিলেন ৷ তখন আমর নিজের লজ্জাস্থান উন্মুক্ত করে দেন ৷
হযরত আলী (বা ) তাকে ছেড়ে ফিরে যান ৷ এ সম্পর্কে হ্যরিছ ইবন নযর বলেন :
তিনি প্রতিদিন এমন সব অশ্বারোহীর মুখোমুখি হন যারা নিজেদের সতর উন্মুক্ত করে রাখে ৷
তা দেখে হযরত আলী তার উপর থেকে নিজের তরবারি ফিরিয়ে আনেন ৷ আর তা দেখে
নিজনে হাসতে থাকেন মুআবিয়া (রা) ৷
ইউনুস উল্লেখ করেছেন ইবন ইসহাক থেকে যে মুন্ারিকদের পতাকা বহনকারী তড়ালহা ইবন
আবু তালহা আবদারী সেদিন যুদ্ধ করার জন্যে ময়দানে হাযির হয়ে দ্বন্দ্ব যুদ্ধের আহবান জানাচ্ছিল ৷
মুসলিম সৈন্যগণ তার নিকট থেকে সরে থাকছিলেনঃ ৷ তখন ঘুবাযর ইবন আওয়াম তার
মুকা ৷বিলায় এগিয়ে গেলেন ৷ তিনি তার উপর বাপিয়ে পড়লেন ৷ এক সময়৩ তিনি তার উটের উপর
চড়ে বসেন ৷ তিনি তাকে ধরাশায়ী করে ফেলেন এবং নিজ তরবারি দিয়ে তাকে জব ই করে
ফেলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত যুবায়র (রা)-এর এ বীরত্বের প্রশংসা করে বললেন, প্রতোক
নবীর হাওয়ারী ও সাহায্যকারী থাকে, আমার হাওয়ারী হল যুরায়র ( বা ) ৷ তিনি আরো বললেন,
আমি যখন দেখলাম মসলিম সৈন্যগণ৩ তালহ৷ থেকে সরে থাকছে তখন যুবায়র যদি বেরিয়ে না
আসত তবে আমি নিজেই ৩ ৷র বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতাম ৷
ইবন ইসহাক বলেন, সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (রা) সেদিন আবু সা দ ইবন আবু তালহাকে
হত্যা করেছিলেন ৷ দ্বন্দু যুদ্ধে নেমেছিলেন আসিম ইবন ছাবিত ইবন আবু আফলাহ, ৷ তিনি নাফি
ইবন আবুতালহা ও তার ভাই জিলাসকে হত্যা করেন৷ তাদের উভয়েই তার প্ৰতি তীর নিক্ষেপ
করছিল ৷ সে৩ তার মায়ের নিকট আসত এবং তার কোলে মাথা রাখত ৷ তার মা বলত বৎসা
তোমাকে কে আঘাত করলো ? সে বলত মা , আমার প্রতি ৩ ৷র নিক্ষেপ করার সময় আমি এক
ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি, সে বলছিল , এটি গ্রহণ কর, আমি আবুআফলাহ্ এর পুত্র ৷ তখন তার মা
মানত করেছিল যে, যদি কোনদিন সে আসিম ( রা)-এর মাথা হাতে তে পারে তবে ওই মাথার
থুলিতে শরাব পান করবে ৷ হযরত আসিম (রা ) ও আল্লাহ্র সাথে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়েছিলেন যেন
তিনি কোনদিন কোন মুশরিককে স্পর্শ না করেন এবং কোন মুশরিক ও তাকে স্পর্শ করতে না
পারে ৷ এজন্যে “রাজী দিবসের ঘটনায় কোন মুশরিকের স্পর্শ থেকে আল্লাহ্ তাআল৷ তার
লাশকে রক্ষা করেছিলেন ৷ রাজী দিবসের ঘটনা অবিলম্বে বর্ণনা করা হবে ৷
ইবন ইসহাক বলেন, হানযাল৷ ইবন আবু আমির মুখোমুখি হলেন আবু সুফিয়ানেয় ৷
হানযালার পিতা আবু আমিরের নাম ছিল আমর ৷ তাকে আবদ আমর ইবন সায়ফীও বলা হত ৷
জাহেলী যুগে সে রাহিব অর্থাৎ ধর্ম যাজক উপাধি পেরু২ ছিল ৷ এটি হয়েছিল তার প্রচুর ইবাদত
বন্দেগীর প্রেক্ষিতে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে ফাসিক তথা পাপাচারী নামে আখ্যায়িত করেছিলেন ৷
কারণ ইসলামী যুগে সে সত্য ও মত ৷পন্থীদের অর্থাৎ ইসলাম ও মুসলমানদের বিরোধিতা
করেছিল ৷ সে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর বিরোধিতা করতে গিয়ে এবং ইসলাম গ্রহণ থেকে দুরে
থাকার উদ্দেশ্যে মদীনা ছেড়ে মক্কায় পালিয়ে গিয়েছিল ৷ আলোচ্য হানযাল৷ হলেন ফেরেশতাদের
গোসল প্রাপ্ত হানযাল৷ ৷ ফেরেশতাপণ তাকে গোসল দিয়েছিলেন ৷ ওই ঘটনা পরে উল্লেখ করা
হবে ৷ বস্তুতঃ হানযাল৷ এবং আবু সুফিয়ান সাখর ইবন ;হ্ারব পরস্পর মুখোমুখি হলেন ৷ হানযালা
যখন আবু সুফিয়ানকে পরাস্ত করছিলেন এবং তার ববুকের উপর উঠে বসেন তখন শাদ্দাদ ইবন
আওস ওরফে ইবন শাউব তাকে দেখে ফেলে এবং তার উপর আক্রমণ করে তাকে হত্যা করে ৷
তার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন “তোমাদের স৷ ৷থী হানযালাকে এখন ফেরেশতাগণ
গোসল দিচ্ছে, তার পরিবারকে জিজ্ঞেস করে দেখ তো ব্যাপার কী ৷৩ তার ত্রীকে এ বিষয়ে
জিজ্ঞেস করা হয়েছিল ৷ ওয়াকিদী বলেন, তার শ্রী হলেন জামীলা বিনত উবাই ইবন সালুল ৷ মাত্র
ওই রাতেই তিনি নববধুরুপে হানযালার গৃহে আগমন করেছিলেন ৷ তিনি জানালেন, হানযালার
গোসল ফরয হয়েছিল ৷ যুদ্ধের অহ্বান শুনে গোসলন্ না করেই তিনি জিহাদে বেরিয়ে পড়েন ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, এজন্যেই ফেরেশতাগণ তাকে গোসল দিয়েছেন ৷
মুসা ইবন উকবা উল্লেখ করেছেন যে ; হানযাল৷ (রা)-এর পিতা তার বুকে পদাঘাত করেছিল
এবং রলেছিল , তুই দুটো অপরাধ করেছিল ৷ এখানে আসতে আমি তােকে নিষেধ করেছিলাম ৷
আল্লাহর কসম , তৃইতাে আত্মীয় রৎসল এবং পিতৃভক্ত ছিলি ৷
ইবন ইসহাক বলেন এ সম্পর্কে ইবন রলেছিল-
আমি অবশ্যই রক্ষা করব আমার সাথীকে এবং আমার নিজেকে সৃয় কিরণ তুলা একটি বর্শা
দ্বারা ৷ ইবন শাউব বলেন :
ণ্হ ইবন হারর আ মি ৷যদি প্ৰাতরোধ করতাম এবং উপন্থিত৷ না থাকতাম তবে তুমি যুদ্ধের
দিন কা ৷উকে তোমার ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্যে ৫পতেন৷ ৷
এ প্রস গে আবু সুফিয়ান ও একটি দীর্ঘ কবিত তা আবৃত্তি করেছিল ৷ আর হাসৃসান ইবন ছাবিত
প্রতুত্তেরে আরেকটি কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন ৷
উহুদ যুদ্ধের শেষ পর্যড়ায়ও ফলাফল
ইবন হল হ৷ ক বলেন এরপর আলাহ্ তা আল৷ মুসলমানদের প্ৰতি তার সাহায্য অবতীর্ণ
ক রে ন ; তিনি : র ওয়াদ ৷ পুরণ করেন ৷ মুসলমানগণ শত্রুপক্ষকে অবিরত হত্যা করতে থাকেন
এবং ওদেরকে ছত্রড়ঙ্গ করে যেনলন ৷ কাফিরদের পরাজয় সুনিশ্চিত হয়ে উঠে ৷ ইয়াহ্য়৷ ইবন
আ ররাদ তীর পিতা আব্বাদ ইবন আরদুল্লাহ্ইবন যুরায়র থেকে এবং তিনি যুবায়র (রা) থেকে
বর্ণন৷ করেছেন যে , তিনি বলেছেন, ওই সময় হিনৃদৃ বিন্ত উতবার নুপুরের দিকে আমার নজর
পড়ে ৷ সে এবং তার সঙ্গিনী কুরায়শী মহিলারা পায়ের কাপড় গুটিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিল ৷ শত্রুপক্ষ
তাদের মালপত্র ছেড়ে ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া র পর আমাদের তীরন্দাজ বাহিনী ওদের মাল-
পত্র সংগ্রহে বা৷ পািয় পড়ে ৷ আমাদের পশ্চাতের ণিবি পথ তারা শত্রুপক্ষের অশ্বারোহী বাহিনীর
জন্যে অবারিত করে দয় ৷ ফলে র ৷ পেছনের দিক থেকে এসে আমাদের উপর আক্রমণ
চালায় ৷ তখন জনৈক £ৰুষ্ট্ট৷ ৷ষক ঘোষণা দো ন্ যে , মুহাম্মাদ নিহত হয়েছেন ৷ এ অবস্থায় আমরা আবার র
পাল্টা আক্রমণ করলাম ৷ ওরা’ও আক্রমণ করল ৷ ওদের পতাকাবাহী নিহত হল ৷ কিন্তু ওদের
পাক্ষর কেউই পতাকাটি তুলে নিতে এগিয়ে আসছিল না ৷ জনৈক বিজ্ঞ ব্যক্তির বরাতে ইবন
ইসহাক যে, পতাকাটি দী ৷র্ঘক্ষণ মাটিতে পড়েই ছিল ৷ শেষে বনু হারিছ পােত্রীয় উমরা বিনৃত
ন্সালকাম৷ এসে তা লেতু নিল ৷ সে পতাকাটি কুরায়শদের নিকট নিয়ে পেল ৷ তারা পুনরায় সেটি
দৃঢ়ভাবে উত্তোলন করল ৷ ওদের ওই পতাকাটি ছিল বানু আবু তালহ৷ গোত্রের হারশী বালক
সাওয়াবেব হাতে ৷ সে ছিল ওদের শেষ পতাকবােহী ! পতাকা নিয়েই সে যুদ্ধ করছিল এক সময়
তার হাত দুটি কাটা গেল ৷ তারপর সে উপুড় হয়ে বলে তার বুক ঘাড় দিয়ে পতাকাটি ধরে রাখে ৷
শেষ পর্যন্ত পতাকা রক্ষার প্রা:চষ্টারত অবস্থায়ই নিহ্তয় হয় ৷ সে তখন বলছিল, হে আল্লাহ! আপনি
কি আমার ওমর ও অক্ষৰুঘত৷ গ্রহণ হস্-রেছেনঃ এ প্রেক্ষিতে হযরত হাসৃসান ইবন ছাবিত বলেছেন :