Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » উমরাতুল কাযা

উমরাতুল কাযা

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • মদীনায় উয়ায়ফ ইবনুল আযবাত আদ-দুয়ালীকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করেন ৷ কাযার উমরাহকে
    কিসাসের উমরাও বলা হয় ৷ কেননা, মক্কার মুশরিকগণ ৬ষ্ঠ হিজরীর যুলকাদাহর পবিত্র মাসে
    উমর৷ করার জন্য আগত রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তার সংগিগণকে বাধা প্রদান করেছিল ৷ পরবর্তী বছর
    একই নামে উমরা পালন করে পুর্বের অনুরুপ উমরা আদায় করেন ৷৩ তাই রাসুলুল্লাহ্ (সা) ৭ম
    হিজরীর যুলকাদ দামাসে উমরাহ পালনের জন্যে পবিত্র মক্কায় প্রবেশ করেন ৷ ইবন আব্বাস (বা)
    হতে বর্ণিত রয়েছে ৷ তিনি বলেন, “আল্লাহ তা লার এ সম্পর্কে অব৩৷ দীর্ণ করেন : , ন্ ৷ ,
    ৰু,ংএ অর্থাৎ সমস্ত পবিত্র বিষয় যার অবমাননা নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে সমান ( ২-বাক ৷রা ং
    ১৯৪ ) ৷ মুতামির (র) নিজ পিতা ৷র বরাতে তা ৷র মাগাযী গ্রন্থে বর্ণনা করেন যে, যখন রাসুলুল্লাহ্
    (সা) খায়রার থেকে প্রত্যাবর্তন করেন ও মদীনায় অবস্থান করেন তখন বিভিন্ন দিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র

    লোকজনকে তা পালনের জন্যে তৈ ৩রির ঘোষণা দেন ৷ লোকজন < বি হলেন এবং মক্কার
    উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে পড়লেন ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, “মুসলমানদের সাথে কাযার উমরাহ্তে এমন ব্যক্তিবর্গ ছিলেন যারা
    গত বছর উমরাহ পালনে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন ৷ এটা ৭ম হিজরীর ঘটনা ৷ মুসলমানদের
    আগমনের কথা শুনে মক্কাবাসীর৷ ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে এবং কৃরায়শরা ইত্যবসরে বলতে
    লাগল যে, মুহাম্মাদ দীনহীন ও অনটনগ্রস্ত ৷ ইবন ইসহাক বলেন, আমাকে আবদুল্লাহ ইবন
    আব্বাস (রা) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও৩ ৷র আসহাবের প্রতি ৩দৃষ্টি নিক্ষেপ করার
    জন্যে মক্কাবাসীরা৷ দা রুন নদ ওয়ার কাছে সারিবদ্ধভাবে দাড়াল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মসজিদে
    হারামে প্রবেশ করেন তখন রাম কীধের উপর এবং ডান বগলের নীচে চাদর স্থাপন করে ডান বাহু
    খোলা রাখেন ৷ এরপর বলেন, আজকে যে ব্যক্তি কাফিরদের সামনে শক্তিমত্তা প্রদর্শন করবে তার
    প্রতি হে আল্লাহ তাআল৷ রহম করুন ! হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করার পর দ্রুতগতিতে তিনি ও
    তার সাহাবীগণ তওয়াফ করেন ৷ অর্থাৎ বায়তৃল্লাহ-এর তওয়াফকালে রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও তার
    সাহাবীগণ রুকনে ইয়ামানী স্পর্শ করেন ৷ তারপর সাধারণ গতিতে চলতে থাকেন ও রুকনে
    আসওয়াদ চুম্বন করেন ৷ এরপর আবার দ্রুতগতিতে চলতে থাকেন ৷ এরুপে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তিনটি তওয়াফ দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করেন ৷ আর অন্য সবগুলােতে সাধারণভাবে তওয়াফ করেন ৷
    ইবন আব্বাস (রা) বলেন, লোকজনের ধারণা ছিল যে, এটা তাদের জন্যে করণীয় হিসেবে
    অনুমোদিত হবে না এবং এটা রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুরায়শদের দেখাব৷ র জন্যেই করেছিলেন ৷ কেননা,
    তারা ধারণা করেছিল ও বলেছিল যে, ঘুসলমানগণ মদীনায় জ্বর ভোগের পর কৃশকায় ও দুর্বল হয়ে
    পড়েছে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন বিদায় হজ্জ সম্পাদন করেন তখনও তিনি তা আদায় করেন ৷ তাই
    তা সুন্নত হিসেবে চলে আসছে ৷

    বুখারী (র) বলেন, আমাদেরকে ইবন আব্বাস (বা) হাদীছ বংনি৷ করেন ৷ তিনি
    বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা)-ও তার সংগিগণ উমরা পালনের জন্য মক্কা আগমন করলে ঘুশবিকরা
    বলতে লাগল যে, মুহাম্মাদ মক্কায় আসছেন তবে মদীনায় জ্বর তাকে এবং তার সংগীদেরকে দুর্বল
    করে দিয়েছে ৷ সেজন্য রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার সংগিগণকে তওয়াফের তিন পাকে রমল

    (দ্রুতগতিতে চলা) করার জন্যে এবং দৃই রুকনের ম ধ্যবতী জায়গায় সাধারণভাবে তওয়াফ করার
    জন্যে নির্দেশ প্রদান করলেন ৷ সবগুলো পাকে রমল করার জন্যে নির্দেশ প্রদান করার কারণ হল
    সর্বদাই এ আমলটি যেন র্তারা স্বাচ্ছন্দে করতে পারেন ৷

    বুখারী (র) ইবন আব্বাস (রা) হতে বর্ণনা করেন ৷ ভ্রনি বলেন, “যখন রাসুলুল্লাহ্
    (সা ) মুশরিকদের স্বীকৃত নিরাপত্তার বছর উমরা পালনের জন্যে মক্কা আগমন করলেন, তখন
    লোকজনকে নির্দেশ দিলেন, “ তোমরা তওয়াফে রমল কর য্যাত মুশরিকগণ তোমাদের শক্তি
    অবলেড়াকন করতে পারে ৷ আর ষুশরিকগণ কুয়ায়কায়ান নড়ামী পাহাব্ডুৰ দিকে অবস্থান করছিল !
    উপরোক্ত বর্ণনাটি ইমাম মুসলিমও উদ্ধৃত করেছেন ৷ ইমাম বুখারী (র) আবুআওফা (বা)
    হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) উমরা পালন করছিলেন তখন আমরা
    মুশরিক বালকদের থেকে কেউ রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে ঘিরে র৷ খছিলাম , যাতে তাদের কেউ
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে কষ্ট না দিতে পারে ৷

    ইবন ইসহড়াক বলেন, “আবদুল্লাহ ইবন আবু বকর (রা) বংনাি করেন, তিনি বলেন,
    “রাসুলুল্লাহ্ (সা) উমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা প্রবেশ করেন এবং আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা (রা)
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর উট্রির লাগান ধরেছিলেন ও নিম্ন বর্ণিত কবিতা আবৃত্তি করছিলেন :

    হে কাফিরের গোষ্ঠী ! রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর রাস্তা থেকে তোমরা সরে পড় ৷ কেননা,
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পথেই যাবতীয় কল্যাণ নিহিত ৷ হে প্রতিপালক ! আমি নিশ্চয়ই র্তার কথায়
    বিশ্বাস স্থাপন করেছি ৷ আমি জানি যে, র্তাকে গ্রহণ করার মধ্যেই রয়েছে আল্লাহ প্রদত্ত সত্য ৷
    তোমাদের বিরুদ্ধে আমরা যুদ্ধ করছি র্তার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্যে যেমন আমরা
    তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি তার উপর অবতীর্ণ বাণীকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্যে ৷ এমন যুদ্ধ বা
    মাথার খুলিকে তার স্থান থেকে বিচ্যুত করে দেয় এবং বন্ধুকে বন্ধুর কথা ভুলিয়ে দেয় ৷

    ইবন হিশাম বলেন, উপরোক্ত পংক্তিগুলো আসলে আমার ইবন ইয়াসির (রা) এর যা তিনি
    সিফ্ফীনের যুদ্ধে আবৃত্তি করেছিলেন ৷ এটা সুহায়লীর অভিমত ৷ ইবন হিশাম আরো বলেন,
    উপরোক্ত দাবীর প্রমাণ হচ্ছে যে , আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহ৷ (রা ) মুশরিকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন
    অথচ মুশরিকগণ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্রতি অবতীর্ণ বাণীকে স্বীকার করে নাই ৷ আর স্বপ্ন
    বাস্তবায়নের জন্যে যুদ্ধ করা হয় ঐসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে যারা আসমানী বাণীকে স্বীকৃতি দিয়েছে ৷
    তাই এগুলো আমার ইবন ইয়াসির (রা) কর্তৃক আবৃত্তিকৃত কবিতা হওয়াই যুক্তিযুক্ত ৷

    লেখক বলেন, ইবন হিশামের এ যুক্তি সন্দেহাতীত নয় ৷ কেননা, হাফিয বায়হাকী
    আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “কাযার উমরা পালন করার জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা)

    যখন মক্কায় প্রবেশ করেন তখন আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা (রা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সামনে
    ইাটতেছিলেন ৷ অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, তিনি উষ্টীর রশি ধরে রেখেছিলেন এবং বলছিলেন :

    হে কাফিরের গোষ্ঠী ! রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর রাস্তা ছেণ্:ড় দাও ৷ তার প্ৰতি অবতীর্ণ বাণীতে

    আর আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়ছি তীর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্যে ৷

    উপরোক্ত অবিকল সনদের অন্য বর্ণনায় রয়েছে : হে কাফিরের গোষ্ঠী ! রাসুলুল্লাহ্ ( সা)-এর
    পথ থেকে সরে র্দাড়াও ৷ আজকে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে আসমানী বাণী প্রতিষ্ঠিত করার জন্য
    লড়ব ৷ এমন লড়াই যা তোমাদের মাথার খুলি ন্থানচ্যুত করে দেবে এবং যার ভয়াবহতায় বন্ধু
    বন্ধুকে ভুলে যাবে ৷ হে আমার প্রতিপালক ৷ আমি তীর কথায় আস্থা স্থাপন করেছি ৷

    ইউনুস ইবন বুকায়র (র) যায়দ ইবন আসলাম (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    “রাসুলুল্লাহ্ (সা) উমরাতুল কাযার বছর উমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কায় প্রবেশ করেন ৷ উন্থীর
    উপর সওয়ার অবস্থায় কাবা ঘরের তওয়াফ করেন ৷ ছড়ি দ্বারা হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করেন ৷

    ইবন হিশাম বলেন, কোন ওযর ছাড়াই তিনি ছড়ি দ্বারা চুম্বন করেন ৷ লোকজন তীর চতুদািক
    ভিড় জমিয়ে দিলেন ৷ এবং আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা (রা ) নিম্ন বর্ণিত কবিতত্নগুলো আবৃত্তি
    করেছিলেন ৷

    এ সভার নামে আমরা জিহাদ করছি যার অবতীর্ণ দ্বীন ব্যতীত অন্যকােন গ্রহ্ণীয় দীন নেই ৷
    হে কাফিরের গোষ্ঠী ! রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পথ ছেড়ে সরে দীড়াও ৷

    মুসা ইবন উকবা, যুহরী (র) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “হুদায়বিরা সন্ধির পরবর্তী
    বছর রাসুলুল্লাহ্ (সা) ৭ম হিজরীর যুলকাদা মাসে উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের
    হলেন ৷ পুর্ববর্তী বছরের একই মাসে মক্কার মুশরিকগণ রাসুলুল্পাহ্ (সা) ও সাহাবায়ে কিরামকে
    মাসজিদ্বল্ হারাম হতে বিরত রেখেছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন ইয়াজিজ নামক স্থানে পৌছেন,
    তখন ঢাল, বর্য, তীর, বর্শা ইত্যাদি যাবতীয় অস্ত্র খুলে রাখেন এবং সাহারা কিরামসহ তিনি
    ভ্রমণকারীদের জন্যে সাধারণভাবে প্রযোজ্য অস্ত্র-শুধু তলােয়ার সাথে রাখেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    জাফর ইবন আবুতালিব (রা)ণ্কে মায়মুনা বিনত হারিছ আমিয়ীয়া (রা)-এর কাছে প্রেরণ করেন ৷
    তিনি র্তার কাছে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর পক্ষ থেকে বিবাহের প্রস্তাব দেন ৷ তিনি তীর ব্যাপারটি
    আব্বাস (রা)-ণ্এর নিকট সমর্পণ করেন ৷ কেননা, তীর বোন উম্মুল ফযল বিন্ত হারিছ (রা)
    ৫১

    আব্বাস (রা)-এর শ্রী ছিলেন ৷ এরপর আব্বাস (রা) মায়মুনা (রা)-কে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে
    বিয়ে দেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন মক্কায় উপস্থিত হন তখন তিনি তার সংগীদেরকে বাহুখুলে
    তওয়াফের সময় রমল করার নির্দেশ প্রদান করেন, যেন মুশরিকরা মুসলমানদের শৌর্য-বীর্য ও
    শক্তি-সামর্থ্য অবলোকন করতে পারে ৷ অন্যদিকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সম্ভাব্য উপায়ে মুশরিকদের
    যড়যস্তের মুকাবিলার ব্যবস্থা করেন ৷ ফলে মক্কাবাসীরা তাদের লোকজন , রমণী ও
    ছেলে-মেয়োদরভৈক তওয়াফরত রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও মুসলমানদের প্রতি অবলোকন করা থেকে
    বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে ৷ আবদুল্লাহ ইবন রাওয়াহা (রা) তালায়ারে সজ্জিত হয়ে ৷ এব্
    শীর্ষক পংক্তিত্তালা আবৃত্তি করেন ৷

    রাবী বলেন, “ণ্ক্রাধ্ , রাগ, রােষ , শত্রুতা, ঘৃণা ও হিংসার বশবর্তী হয়ে মুশরিকদের কতিপয়
    প্রধান ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর প্রতি অবলোকন করা থেকেও বিরত থাকে ৷ তারা মক্কা থেকে
    অনুপস্থিত হয়ে আলণ্খানদামা নামী পাহাড়ের দিকে চলে যায় ৷ রাসুলুল্লহ্ ( সা ) মক্কায় তিনদিন
    তিনরাত অবস্থান করেন ৷ হুদায়বিয়ার সন্ধিতে উল্লিখিত তিনদিনের তৃতীয় দিন শেষ হলে
    চতৃর্থদিনের সকাল বেলায় সুহায়ল ইবন আমর ও হুয়াইতিব ইবন আবদুল উযুযা রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর নিকট আগমন করল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তখন আনসারদের নিয়ে একটি মজলিসে
    উপস্থিত ছিলেন এবং মদীনায় সা’দ ইবন উবাদা (রা) এর সাথে কথা বলছিলেন ৷ কাফির সর্দার
    হুয়াইতিব ইবন আবদুল উবৃযা চীৎকার করে বলতে লাগল, “আমরা আল্লাহর শপথ উচ্চারণ করে
    বলছি, চুক্তির তিন দিন শেষ হয়ে গেছে ৷ তুমি আমাদের জনপদ থেকে এখনও (বর হয়ে গেলে
    না” ৷ সা’দ ইবন উবাদা (রা) বলেন, “তুমি মিথ্যা বলছ ৷ তোমার যা যেন হারিয়ে যায় এ যমীন
    তােমারও নয়, তোমার বাপ দাদারও নয় ৷ আল্লাহর শপথ, তিনি বের হবেন না ৷” এরপর
    বাসুলুল্লাহ্ (সা) সুহায়ল ও হুয়াইতিবকে ডেকে বললেন, “আমি তোমাদের এক রমণীকে বিয়ে
    করেছি ৷ তোমাদের কোন ক্ষতি হবে না যদি আমরা এখানে অবস্থান করি , খাদ্য তৈরী করি, আহার
    করি এবং তােমরাও আমাদের সাথে আহার কর ৷ তারা বলল, “আমরা এসব কিছু আমি না ও
    বুঝি না ৷ আল্লাহর শপথ উচ্চারণ করে তোমাকে আমরা আবারও বলছি ৷ তোমার চুক্তিতে বর্ণিত
    মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, বিত্তু ভুমি এখনও আমাদ্যে৷ এখান থেকে চুক্তি মুতাৰিক বের হচ্ছ না ৷
    এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবুরাফি (রা)-ণ্ক সৈন্যদের রওয়ানা হবার জন্যে ঘোষণা দেয়ার নির্দেশ
    প্রদান করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সওয়ার হলেন এবং বাতনে সারিফ নামক স্থানে অবতরণ
    করলেন ৷ মুসলমানগণও রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে সেখানে অবস্থান করলেন ৷ মায়মুনা (রা)-কে
    নিয়ে আসার জন্যে পুর্বেই আবু রাফি (রা)কে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কায় রেখে এসেছিলেন ৷
    মায়মুনা (বা) না আসা পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা) সাহাৰায়ে কিরামকে নিয়ে সারিফে অপেক্ষা করতে
    লাগলেন ৷ দৃকুতকারী মুশরিকৱা ও তাদের দৃষ্ট ছেলেমেয়েরা মায়মুনা (রা) ও তীর সার্থীদেরকে
    উত্যক্ত করে ৷ মায়মুনা (বা) যখন সারিফে আগমন করেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে তার
    বাসর হয় ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) রওয়ানা হয়ে মদীনায় গিয়ে পৌছলেন ৷ আল্লাহ তাআলা
    সারিফে মায়মুনার মৃত্যু নির্ধারণ করেন যেখানে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে তার বাসর ঘর
    হয়েকাি ৷ সুতরাং পরবর্তীকালে সেখানেই তার মৃত্যু হয় ৷

    অতঃপর রাবী হামযা (রা) এর কন্যার ঘটনা বর্ণনা করেন এবং বলেন, “কাযার উমরা সম্বন্ধে
    আল্লাহ ৷
    )০ান্ অর্থাৎ পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে সমস্ত পবিত্র বিষয় যার অবমাননা নিষিদ্ধ তার
    জন্যে কি সাস ৷ (২ সুরা বাকারাং ১৯) পরবর্তীতে রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) যে পবিত্র মাসে বাধাপ্রস্ত হন
    যে মাসেই উমরা আদায় করেন ৷

    ইবন লাহীআ অন্য এক সনদে উপরোক্ত ঘটনা বর্ণনা করেন ৷ বিভিন্ন হাদীছেও এ ঘটনার
    সমর্থন পাওয়া যায় ৷ সহীহ্ বুখারীতে ইবন উমর (বা) হতে ৩বর্ণিভ্র রয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    উমরাহ এর উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন, কিন্তু কুরায়শের কাফিরবা হুদায়বিয়া নামক স্থানে র্তাকে
    বাধা প্রদান করে ৷ তাই রাসুলুল্লাহ্ (সা) সেখানেই কুরবানী করেন ও মাথা মুন্ডন করেন৷ আর
    কাফিরদের সাথে সন্ধি মৃত তাবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, পরবর্তী বছর তিনি উমরা পালন করবেন
    এবং সৎগে তলোয়ার ব্যতীত অন্য কোন অস্ত্র বহন করবেন না ৷ য়তদিন মুশরিকগণ পসন্দ করবে
    ততদিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কায় অবস্থান করবেন ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ (সা ) পরবর্তী বছর উমরা
    পালনার্থে মুশরিকদের সাথে কৃত সন্ধি মুতাবিক মক্কায় প্রবেশ করেন ৷ তথায় তিন দিন অবস্থান
    করার পর মুশরিকর৷ র্তাকে বের হয়ে যেতে বললে, তিনি বের হয়ে যান ৷

    ওয়াকিদী — ইবন উমর (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, এটা কাযার উমরা পালন
    ছিলনা; বরং এটা ছিল মুসলমানদের উপর একটি শর্ত যে যে সালে তারা মুশরিকগণ কর্তৃক
    বাধাগ্রুস্ত হয়েছিলেন ঠিক ঐ মাসেই তারা পরবর্তী বছর উমরা পালন করবেন ৷

    আবু দাউদ (র) মাইমুন ইবন মিহ্রাণ (র) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, যে
    বছর সিরিয়ার অধিবাসীরা আবদুল্লাহ্ইবন যুবায়র (বা) কে মক্কায় অবরোধ করেছিল সে বছর আমি
    উমরা পালনের জান্য ঘর থেকে বের হলাম ৷ আমার সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক লোক আমার সাথে
    তাদের কৃরবানীর পশু প্রেরণ করেন ৷” তিনি আরো বলেন, যখন সিরীয় সেনাদলের কাছে আমি
    পৌছলাম তখন তারা আমাকে হেরেম শরীফে প্রবেশে বাধা কিং ৷ তখন আমি যে স্থানেই কুরবানী
    করলাম ও হালাল হলাম এবং বাড়ী ফিরে আসলাম ৷ পরের বছর গত বছরের উমরা পালন করার
    জন্যে আমি ঘর থেকে বের হলাম ৷ এরপর আমি ইবন আব্বাস (রা)-এর কাছে হাযির হয়ে
    কুরবানী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম ৷ তিনি বললেন, “গত বছরের কুরবানীর পরিবর্তে নতুন করে
    এ বছর একটি কুরবানী আদায় কর ৷ কেননা, রাসুলুল্লাহ (সা) সাহাবায়ে কিরামকে নির্দেশ
    দিয়েছিলেন যে, হুদায়বিয়ার বহ্ব যে কুরবানী দিয়েছ তার পরিবর্তে এ বছর কাযার উমরা পালনের
    সময়ও কুরবানী কর ৷” এটি আবু দাউদ (র)-এর একক বর্ণনা ৷

    হাফিয বায়হাকী (র) আমর ইবন মায়মুন হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “আমার
    পিতা উমরা পালনকারী বহু লোককে জিজ্ঞেস করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) হুদায়বিয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে
    যে কুরবানী করেছিলেন পরের বছর কি তার পরিবর্তে অন্য একটি কুরবানী করেছিলেন : কিন্তু
    কারোর কাছে উত্তর পেলেন না ৷ পরে আমি তার কাছে শুনেছি যে, তিনি আবু হাযির
    আল-হিমৃইয়ারীকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন ৷ তিনি তাকে বলেন, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিবেইি
    তৃমি জিজ্ঞেস করেছ ৷ ইবন যুবায়র (রা)-কে যে বছর অবরোধ করা হয় সে বছর আমি হজ্জ

    করতে বের হয়েছিলাম এবং কৃরবানীর পশুও খরিদ করেছিলাম ৷ সিরিয়াবাসী সৈন্যরা আমার ও
    বায়তুল্লার মাঝখানে অম্ভরায় হয়ে দাড়াল ৷ তখন আমি হেরেম শরীফে কুরবানী করলাম ও
    ইয়ামানে ফিরে গেলাম এবং নিজে নিজে বলতে লাগলাম, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর আদর্শ আমার
    জন্য যথেষ্ট ৷ পরের বছর হজ্জ পালন করার জন্যে আমি মক্কায় আগমন করলাম ৷ হ্যজ্জা অন্যান্য
    আহকাম আদায় করার পর আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) এর সাথে সাক্ষাত করে গত বছরের
    কৃত কুরবানী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে এটার পরিবতে কি নতন করে কৃরবানী করতে হবে ?
    তিনি বললেন, “হ্যা, এটার পরিবর্তে আরো একটি নতু নকুরবানী কর ৷ কেননা, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও

    তার সাহাবায়ে কিরাম হুদায়ৰিয়ায় যে কুরবানী করেছিলেন কাযার উমর৷ পালনের সময় তার
    পরিবর্তে নতুন করে কুরবানী করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ৷ তাতে উটের অপ্রতুলত৷ দেখা দেয় তখন
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাহাবায়ে কিরামকে গরু কুরবানী করার অনুমতি দেন ৷

    ওয়াকিদী ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “ রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    নাজীয়া ইবন জুনদুব অর্শ্বলআসলড়ামী (রা) কে কৃরবানীর জন্তুকে বন্য গাছ ণ্া৷হুড়ায় চরিয়ে রাখার
    জন্যে নিযুক্ত করেন ৷ তার সাথে ছিল আসলাম গোত্রের আরো চার ব্যক্তি ৷ কায়ার উমরা পালনের
    কালে রাসুলুল্লাহ্ (সা) যাটটি কৃরবানীর পশু প্রেরণ করেছিলেন ৷

    আবুহ্বায়রা (রা) বলেন, আমি উট ছুাকাবার জন্যে উটের মালিকের সাথে হ্নিা৷ম ৷

    ওয়াকিদী বলেন “রাসুলুল্লাহ্ সাে) ইহরাম বাধার পর তালবিয়া পড়ছিলেন ৷ মুহাম্মাদ ইবন
    মাসলাম৷ (রা) ঘোড়াগুলোকে নিয়ে মার্কয যাহ্ৱানে পৌছলেন এবং সেখানে কুরায়শের কিছু
    ৎখাক লোকের সাথে সাক্ষাত করলেন ৷ তারা মুহাম্মাদ ইবন মাসলাম৷ (রা)এর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে
    জিজ্ঞেস করল ৷ উত্তরে তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা) আগামী দিন ভোরে এ মানৃযিলে পৌছবেন ৷
    তারা বাণীর ইবন সাদ (রা) এর কাছে বহু অস্ত্রশস্ত্র দেখতে গেল এবং তারা ওখান থেকে
    তৎক্ষণাং বের হয়ে গেল ৷ তারা বা কিছু অস্ত্রশস্ত্র ও ঘোড়া ই৩ ৷৷দি দেখল এ সম্বন্ধে
    কুরায়শদেরকে অবহিত ৩করল ৷ কুরায়শরা৩ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ল আর বলতে লাগল, আল্লাহ্র
    শপথ ! আমাদের এখানে কী ঘটে (গল ৷ আমরাতে৷ চুক্তিবদ্ধ আছি ৷ মুহাম্মাদ ও তার সাথীদের
    আমাদের সাথে কী করতে চ চ্ছেন ? রাসুলুল্লাহ্ (সা) মার্কয য়াহ্রানে উপনীত হলেন এবং অস্ত্রশস্ত্র
    বাতনে ইয়াজিজে অগ্রে পাঠিয়ে দেন যেখান থেকে হেরেম শরীফ অবলোকন করা যায় ৷
    কুর য়শগণ মিকরায ইবন হাফস ইবন আহ নাফ এর নেতৃত্বে কুরায়শদের কিছু সংখ্যক লোককে
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর কাছে প্রেরণ করে ও তারা বাতনে ইয়াজ্যিজ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে
    সাক্ষাত করে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) কুববানীর পশু ও অস্ত্রশস্ত্রসহ সাহাবায়ে কিরাম পরিবেষ্টিত অবস্থায়
    অবস্থান করছিলেন ৷৩ তারা বলতে লাগল, হে মুহাম্মাদ ! আপনি আপনার শৈশব ও কিশোর কোন
    কালেই বিশ্বাসঘাতকতার জন্যে অভিযুক্ত হননি ৷ আর এখন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নিজ সম্প্রদায়ের
    বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে হেরেম শয়ীফে প্রবেশ করছেন ? অথচ আপনি তাদের সাথে সন্ধি
    করেছেন এই বলে যে, তলোয়ার খাপে রখে মুসাফিরের ন্যায় হেরেম শরীফে প্রবেশ করবেন ৷”
    রাসুলুল্পাহ্ (সা) বললেন, £আমি তামাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হেরেম
    শরীফে প্রবেশ করব না ৷ তখন মুকরিয ইবন হাফস বলল, ইনি তো এমন এক সত্তা, যে

    ৎগীকার রক্ষা ও পুণ্য কাজ সম্পাদনে অত্যন্ত সুপরিচিত ৷ এরপর সে তার সংপীদের নিয়ে মক্কায়
    ফিরে পেল ৷ মুকরিয ইবন হাফ্স যখন রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর সংবাদ নিয়ে মক্কায় আগমন করল
    তখন কুরায়শগণ পরিবার-পরিজন নিয়ে মক্কা ত্যাগ করে পাহাড়ের চুড়ায় উঠে গেল এবং বলতে
    লাগল “আমরা মুহাম্মাদ ও তার সঙ্গীদের দিকে তাকিয়েও দেখব না ৷” রাসুলুল্পাহ্ (সা) কুরবানীর
    পশুগুলোকে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্যে নির্দেশ দিলেন ৷ আর যখন তিনি যুতাওয়া’
    পৌছলেন তখন তিনি ও তীর সাহাবীগণ তালবিয়া পড়তে শুরু করলেন ৷ তারা তলোয়ার সজ্জিত
    ছিলেন এবং রাস লুল্পাহ্ (সা) ছিলেন, তার উষ্টী কাসওয়ার উপবিষ্ট ৷ যখন তারা যুতাওয়ার শেষ
    প্রান্তে পৌছলেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) কাসওয়ার উপর উপবিষ্ট অবস্থায় থেমে গেলেন ৷ আবদুল্লাহ
    ইবন রাওয়াহা (রা) ট্ষ্টীর লাপাম ধরে যুদ্ধ কবিতা আবৃত্তি করছিলেন এবং বলছিলেন, “হে
    কাফিরের গোষ্ঠী ৷ রাসৃলুল্লাহ্ (সা) এর পথ তোমরা ছেড়ে দাও, রাসৃলুল্লাহ্ (সা)-এর রাস্তা থেকে
    তোমরা সরে র্দাড়াও ৷
    সহীহ্ বুখারী ও সহীহ্ ঘুসলিমে আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা) হতেবর্ণিত রয়েছে ৷ তিনি
    বলেন, “সপ্তম হিজরীর যুলকা’দা মাসের চার তারিখ ভোরে রাসুলুল্লাহ্ (সা ) ও তার সাহাবায়ে
    কিরাম মক্কায় আগমন করলেন ৷ তখন মুশরিকরা বলতে লাগল, মুহাম্মাদ তোমাদের কাছে
    বিদেশী প্রতিনিধির বেশে আসছেন তবে ইয়াসরিবের জ্বর ও বিরুপ আবহাওয়া তাকে এবং তার
    ৎগীদেরকে দুর্বল করে দিয়েছে ৷ এ কারণে রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাহাবাদেরকে তওয়াফের সময় তিন
    পাকে রমল করার জ্যন্য নির্দেশ দেন এবং বাকী চার থাকে ও দুই ৰুকনের মধ্যবর্তী জায়গায়
    সাধারণভাবে চলার আদেশ দেন ৷ যেহেতু এ হুকুমটি স্থায়ী সেহেতু সম্ভবত রাসুলুল্লাহ্ (সা) সকল
    পাকে রমল করতে নির্দেশ দেননি ৷
    ইমাম আহমদ ইবন আব্বাস (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    উমরাহ পালনের লক্ষে যখন মার্কহ যাহ্রানে অবতরণ করেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে এ
    সংবাদ পৌছে যে, কুরায়শগণ মুসলমানদের সম্পর্কে এ অপবাদ রটাচ্ছে যে, মুসলমানগণ
    দৃর্বলতার কারণে একে অন্যের কাছে গিয়ে কুশল ৰিনিময়ও করতে পারেনা ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    সাহাবীগণ বললেন, আমাদের অনুমতি দিন, যেন আমরা আমাদের কোন বাহন পশু যবেহ করি
    তারপর তার পােশত ও ঝোল খেয়ে পরদিন সকালে জনসমাবেশে যাই যাতে করে আমাদের
    মধ্যে স্বস্তির ভাব পরিলক্ষিত হয় ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, না এরুপ করবেন); বরং তোমাদের যা
    আছে তা নিয়ে আমার কাছে আস ৷ তারা তাদের নিকট রক্ষিত থাদ্যদ্রব্যাদি নিয়ে রাসুলুল্লাহ্
    (না)-এর কাছে একত্রিত করলেন এবং দস্তরখান পাতা হল ৷ তারা পেট ভরে খেলেন এবং
    প্রত্যেকে নিজ নিজ পাত্র পুর্ণ করে নিলেন ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) অগ্রসর হয়ে মাসজিদুল
    হারামে প্রবেশ করলেন ৷ আর কুরায়শরা হাতিমের দিকে বসে রইল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ডান বাহু
    খোলা রেখে বাম হাতের বগলের নীচে চাদর পরিধান করেন এবং সাহাবীদেরকে লক্ষ্য করে
    বললেন, “কুরায়শ সম্প্রদায় যেন ণ্তামাদের মধ্যে কোন দৃর্বলতার চিহ্ন দেখতে না পায় ৷ হজরে
    আসওয়াদ চুম্বন কর এবং রমল কর ৷ তারপর রুকনে ইয়ামানী হতে হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত
    স্বাভাবিকভাবে চল ৷ ” কুরায়শরা বলতে লাগল, “মুসলমানরা সাধারণভাবে হীটতে রাযী নয়, তারা
    যেন হরিণের ন্যায় দৌড়াচ্ছে ৷ ’ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ও সাহাবীগণ তিন পাকে রমল করেন এবং তা

    সুন্নত হিসেবে পরিগণিত হয় ৷ রাবী আবুতু ফায়ল বলেন, ইবন আব্বাস (বা) বর্ণনা করেছেন যে,
    রাসুলুল্লাহ্ (সা) বিদায় হয়ুজ্জও এরুপ রমল করেছেন ৷ এটি ইমাম আহমদ (র) এর একক বর্ণনা ৷

    ইমাম মুসলিম ও ইবন আব্বাস (বা ) হতে অনুরুপ বর্ণনা করেন ৷ জমহুর উলামাব
    মতে তওয়াফে রমল করা সুন্নত ৷ কেননা, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কাযার উম রা পালনের সময় রমল
    করেছেন ৷ জিয়িরানার উমরা পালনের সময়ও রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) তওয়াফে রমল করেছেন ৷ ইমাম
    আবুদাউদ এবং ইমাম ইবন মাজাহ ও ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম
    মুসলিম প্রমুখ জা ৷বির (বা) হতে তও বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বিদায় হবুজ্জর তওয়াফে
    রমল ব রেছেন ৷ উমর (রা ) রমল সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, এখন আর রমলের কী
    প্রয়োজন ? আল্লাহ্ তাআলা তো ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন ৷ তা সত্বেও রাসুলুল্পাহ্ (সা)
    কোন কাজ করেছেন বলে প্রমাণিত হলে আমরা যে কাজ করা থেকে বিরত থাকা না ৷ এ বিষয়ে
    কিতাবৃল আহকামে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে ৷

    প্রসিদ্ধ মতে ইবন আব্বাস (বা) তওয়াফে রমল করাকে সুন্নত মনে করতেন না ৷ সহীহ্
    বুথারী ও মুসলিমে ইবন আব্বাস (বা) হতে বর্ণনা রয়েছে যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কাবা
    ঘর ও সাফ৷ মারওয়৷ পাহাড়দ্বয়ে যে সাঈ করেছেন তা মুশরিকদের কাছে মুসলমানদের শক্তি
    প্রদর্শন করার জন্যে ৷ এটা হচ্ছে বুখাবীর ভাষ্য ৷

    ওয়াকিদী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) কাযার উমরা পালনের সময় যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন
    করে কাব৷ ঘরে প্রবেশ করলেন এবং সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করলেন ৷ বিলাল (রা)

    কা বার ছাদে উঠে যুহরের সালাতের আযান দেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)৩ তাকে এরুপ করার নির্দেশ
    দিয়েছিলেন ৷ ইকরাম৷ ইবন আবু জাহ্ল বলল, আল্লাহ্ আবুল হ ৷কাম ( আবু জাহ্ল) কে মৃত্যু দান
    করে সম্মানিত করেছেন; কেননা, এই দাসের উচ্চারিত শব্দমাল৷ তাকে শুনতে হচ্ছে না ৷
    সাফ্ওয়ান ইবন উমইিয়া বলল, আল্লাহর জন্যে সমস্ত প্রশংসা, যিনি আমার পিতাকে এসব দেখার
    পুর্বে উঠিয়ে নিয়ে গেছেন ৷ ’ খালিদ ইবন ওসায়দ বলল, “আল্লাহর জন্যে সমস্ত প্রশংসা, যিনি
    আমার পি৩ ৷কে মৃত্যুদান করেছেন ৷ কেননা, আজ ঘরের ছাদে দাড়িয়ে বিলাল যে হাক দিচ্ছে তা
    তাকে দেখতে হয়নি ৷” সুহায়ল ইবন আমর ও তার সাথে কিছু সংখ্যক লোক যখন আযানের

    আওয়ায শুনল, তখন তারা তাদের চেহারা ঢেকে নিল ৷ হাফিয বায়হাকী (র ) বলেন, পরবর্তীকালে
    প্রায় সকলেই তাদের আল্লাহ্ তাআলা ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন ৷

    গ্রন্থকার বলেন, ওয়াকিদীর মাধ্যমে বায়হাকী (র) উল্লেখ করেছেন যে, এটি ছিল কাযার
    উমরা পালনের ঘটনা; কিন্তু প্রসিদ্ধ অভিমত হল যে, এ ঘটনাটি মক্কা বিজয়ের বছর ঘটেছিল ৷
    আল্লাহ্তাআলাই অধিক জ্ঞাত ৷

    মায়মুনা (ৱা)এর সাথে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিবাহের ঘটনা

    ইবন ইসহাক ইবন আব্বাস (বা) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    তার এ সফরে (কাযার উমরাহ) হযরত মায়মুনা বিনৃত হারিছ (রা)-কে বিবাহ করেন ৷ তিনি
    ছিলেন (ইহরামের অবস্থায়) ৷ আব্বাস ইবন আবদুল মুত্তালিব র্তাকে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সাথে
    বিবাহ দেন ৷

    ইবন হিশাম বলেন, মায়মুনা (বা) তার বিবাহের দায়িতুটি তীর বোন উম্মুল ফযলের কাছে
    সমর্পণ করেন ৷ উম্মুল ফলে তার স্বামী আব্বাস (রা)-এর নিকট এ দায়িতুটি সমর্পণ করেন এবং
    আব্বাস (রা) ভীকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সঙ্গে বিবাহ দিয়ে দেন ৷ আর রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর পক্ষ
    থেকে তাকে চারশ’ দিরহাম মহর আদায় করেন ৷ সুহায়লী উল্লেখ করেন, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    বিবাহের প্রস্তাব যখন মায়মুনা (রা)-এর কাছে পৌছে, তখন তিনি উটের উপর সওয়ার ছিলেন
    তাই তিনি বললেন, উট এবং উটের উপর যা কিছু রয়েছে সবই রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর ৷ সুহায়লী
    আরো বলেন, মায়মুনা (রা)-এর সম্পর্কে নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয় ৷

    অর্থাৎ এবং কোন মুমিন নারী যদি নবীর নিকট নিজেকে নিবেদন করে এবং নবীও তাকে

    বিবাহ করতে মনস্থু করেন তাও বৈধ ৷ এটা বিশেষ করে তােমারই জন্য, অন্য মু’মিনদের জন্যে
    নয়” (৩৩ আহ্যাব ৫০) ৷

    ইমাম বুখারী (র) — ইবনআব্রবাস (বা) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “যখন
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) মায়মুনা (রা)-কে বিবাহ করেন তখন তিনি ইহ্রাম অবস্থায় ছিলেন ৷ আর যখন
    বাসর ঘর উদযাপন করেন তখন তিনি ছিলেন ইহরামমুক্ত ৷ মায়মুনা (রা) সারিফে ইনতিকাল
    করেন ৷

    বায়হাকী ও সারা কুতনী ইবন আব্বাস (রা ) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন,
    “রাসুলুল্লাহ্ (সা ) যখন মায়মুনা (রা) কে বিবাহ করেন, তখন তিনি ছিলেন ইহ্রামমুক্ত ৷ উলামায়ে
    কিরাম ইবন আব্বাস (রা) এর প্রথম ব্যাখ্যা প্রসংগে বলেন, “তিনি ছিলেন ইহ্রাম অবস্থায়” এর
    অর্থ হল তিনি হারাম মাসে (যুলকাদা) অবস্থান করছিলেন ৷ কোন এক করি বলেন, তারা উছমান
    ইবন আফ্ফান খলীফাকে ঘুহরিম অবস্থায় হত্যা করেছিল বলতে হারাম মাস বুঝানো হয়েছে ৷
    তখন তিনি আহ্বান করেন, বিভু তার মত নিঃসঙ্গ আর কাউকে দেখিনি ৷

    গ্রন্থকার (র) বলেন, এ ধরনের ব্যাখ্যা প্রশ্নন্ধতীত নয় ৷ কেননা, ইবন আব্বাস (বা) হতে
    দৃ১ ৰু;ঠুাষ্ৰু, ৷ঠুপ্রু ন্নেব্লুঠুৰু, অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ্ (না) যখন বিবাহ করেন তখন তিনি ছিলেন মুহরিম আর
    যখন বাসর উদযাপন করেন তখন তিনি ছিলেন হালাল ৷ কেননা, বাসর ঘর উদযাপন ও যুলকাদা
    মাসেই হয়েছিল ৷ অথচ এটাও ছিল হারাম মাস ৷ বিভিন্ন সনদে এ বর্ণনাটি পাওয়া যায় ৷

    সাঈদ ইবন মুসইিয়িব (র) বলেন, ইবন আব্বাসের এ ধারণাটি সঠিক ছিল না যদিও মায়মুনা
    (বা) তার খালা ছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) হালাল হওয়ার পরই তীকে বিবাহ করেছিলেন ৷ কেননা,

    রাসুলুল্লাহ্ (সা) মক্কায় আগমন করেন ৷ সে সময় তিনি হালাল ছিলেন এবং তখনই বিবাহও
    অনুষ্ঠিত হয় ৷

    ইমাম মুসলিম ও সুনানের সংকলকগণ মায়মুন৷ বিনত আল-হারিছ (বা) হতে ৩বর্ণনা
    করেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে বিবাহ করেন তখন আমরা সারিফে ইহরামযুক্ত
    ছিলাম ৷ ”

    হাফিয বায়হার্কী আবু রাফি (রা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসৃল্লুল্লাহ্ (না)
    যখন মায়মুন৷ (রা) কে বিবাহ করেন, তখন তিনি ছিলেন ইহ্রামযুক্ত এবষ্ তার সাথে বাসর
    উদযাপন করেন তখনও তিনি ছিলেন ইহরামযুক্ত ৷ আমি র্তাদের উভয়ের মাধ্যম ছিলাম ৷ তিরর্বৃমষী
    ও নাসাঈ অনুরুপ বং৷ ৷ করেন ৷ তিরমিযী বর্ণনাটিকোহাস ন’ বলে অভিহিত করেছেন ৷
    গ্রন্থকার বলেন, “মায়মুনা (রা) সারিফে ৬৩ ইিজরী মতাতরে ৬০ ৰিজ্রয়ীতে ইনতিকাল
    করেন ৷

    কফোর উমর৷ পালনের পর মক্কা থেকে মদীনায় প্রত্যাবর্তনের বিবরণ

    মুসা ইবন উক্বা বর্ণনা করেন, কুরায়শগণ রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর কাছে চার দিন অতিবাহিত
    হওয়ার পর ১ হুয়াইতিব ইবন আবদুল উয্যাকে প্রেরণ করল যেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) শর্ত মৃতাবিক
    মক্কা থেকে চলে যান ৷ কাফিরদেরকে আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে তাদের কাছে মায়মুনা (রা)-এর
    বিবাহের পর ওলীমা করার জন্যে রাসুলুল্পাহ্ (না) প্রস্তাব দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান
    করে এবং বলে, আপনি আমাদের এখান থেকে চলে যান ৷ তখন তিনি চলে গেলেন ৷ ইবন
    ইসহাকও অনুরুপ বর্ণনা পেশ করেন ৷
    ইমাম বুখ৷ ৷রী (র) আ ল বারা (রা) থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    ষুলকা ’দ৷ মাসে ওমরাহ পালন করতে আসেন ৷ মক্কাবাসীর৷ তাকে মক্কায় প্রবেশ করার অনুমতি
    দিতে অস্বীকৃতি ৩জানায় ৷ তিনি তাদের সাথে সন্ধি করেন যে, পরবর্তী বছর তারা তাকে মক্কা য় তিন
    দিন থাকতে দেবে ৷ যখন তারা সন্ধিপত্র লিখল লিখা হল যে এটা একটি সন্ধিনামা যা মুহাম্মাদুর
    রাসুলুল্লাহ্ সম্পাদন করেন ৷ কাফিরর৷ বলল, “আমরা এটা মানিন ৷ ৷ আমরা যদি আপনাকে রাসুল
    বলে জানতামই তাহলে আমরা আপনার জন্যে কিছুই নিষেধ করতাম না তবে আপনি মুহাম্মাদ
    ইবন আবদুল্লাহ ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন আমি আল্লাহর রাসুল এবং আমি মুহাম্মাদ ইবন
    আবদৃল্লাহ্ও বটে ৷ এরপর রাসুলুল্লাহ্ (সা) আলী ইবন আবু৩ তালিব (বা) কে বললেন, “তুমি
    রাসুলুল্লাহ্’ শব্দটি মুছে ফেল ৷” তিনি বললেন, না, আল্লাহর শপথ ! আ ৷মি আপনার নাম কখনও
    মুছতে পারব না ৷ ’ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) সন্ধিনড়ামাটি হাতে ৩নািলন এবং তিনি খুব ভ ৷ল লিখতে
    পারতেন না ৷ তবুও৩ তিনি লিখবেন, এটা এমন একটি সন্ধিনামা যা মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ
    সম্পাদন করলেন যে, তিনি তলোয়ার কোষবদ্ধ রেখে মক্কায় প্রবেশ করবেন, মক্কাবাসীদের কেউ
    যদি তা ৷র অনুগত হয়ে মক্কা থেকে বের হয়ে যেতে চায় তাহলে তিনি তাকে বের করে নেবেন না,
    প্াক্ষাম্ভরে রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাহাবীগণেব মধ্য থেকে যদি কেউ মক্কায় থেকে ’,যতে চায়
    তাহলে৩ তিনি তা নিষেধ করতে পারবেন না ৷ রাসৃলুল্লাহ্ (সা) যখন সন্ধি মুতাবিক মক্কায় প্রবেশ
    করলেন এবং নির্ধারিত সময় অতিক্রা ৷ম্ভ হয়ে গেল তখন কাফিবর৷ হযরত আলী (র, ) এর কাছে

    ১ ইবন হিশামের মতে তিন দিন ৷ ন্ষ্সস্পাদকদ্বয়

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ উমরাতুল কাযা Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.