Home » অনুবাদকৃত বইসমুহ » আল বিদায়া ওয়ান্নিহায়া - খন্ড ৪ » উহুদ যুদ্ধে শহীদগগের সংখ্যা

উহুদ যুদ্ধে শহীদগগের সংখ্যা

  • 3000+ Premium WORDPRESS Themes and Plugins
  • Download PHP Scripts, Mobile App Source Code
  • ইমাম মুসলিম ও বায়হাকী (র) উভয়ে আর মুআবিয়া মাসৃরুক সুত্রে বর্ণনা
    করেছেন ৷ তিনি বলেছেন যে
    আয়াত সম্পর্কে আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (রা) কে জিজ্ঞেস
    করেছিলাম; তিনি বললেন, আমি এই বিষয়ে নিজে রাসুলুল্লাহ্ (স ) — কে জিজ্ঞেস করােছলাম,
    তখন তিনি বলেছেন, ওদের রুহ থাকবে সবুজ পাখীর পেটে, জ্যন্নাতের যেখানে ইচ্ছা তারা
    সেখানে ভ্রমণ করতে পারবে তারপর আরশের সাথে ঝুলানাে ফাণ্নুসে এসে আশ্রয় নেবে ৷ এমনি
    এক অবস্থায় স্বয়ং আল্লাহ্ তাআল৷ ওদের দিকে মনোনিবেশ করবেন ৷ তিনি বলবেন, তোমাদের
    যা কামনা বাসনা তা আমার নিকট চাও ৷ ওরা বলবেন, হে প্রভু! আমাদের চাওয়ার তাে কিছু নেই ৷
    আপনার দয়ায় আমরা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা যেতে পারছি ৷ আল্লাহ্ তাআলা তিনবার তাদেরকে
    এরুপ বলবেন ৷ তারা যখন দেখান যে, আল্লাহ্ তাআলা বার ন্থাধ্হ-৷ বলছেন, তখন তারা বলবে, হে
    প্রভু ! আমরা চাই যে, আপনি আমাদের দেহে রুহ পুনস্থাপন করে আমাদেরকে দৃনিয়াতে পাঠিয়ে
    দিন, যাতে করে আমরা পুনরায় আপনার পথে শহীদ হতে পারি, আল্লাহ তাআলা যখন দেখবেন
    তারা শুধু এটাই চাচ্ছে তখন তিনি তাদেরকে তাদের অবস্থায় রেখে দেবেন ৷

    উহুদ যুদ্ধে শহীদগণের সংখ্যা

    মুসা ইবন উকব৷ বলেন, উহুদ যুদ্ধে ঘুহাজির ও আনসার মিলিয়ে মোট ৪৯ জন শহীদ হন ৷
    সহীহ্ বুখাবীতে হযরত বর (বা ) থেকে বর্ণিত হাদীছে আছে যে সেদিন ৭০ জন সাহাবী শহীদ
    হয়েছিলেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জা নেন ৷

    হযরত আনাস (রা)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে কাতাদা (র ) বলেন যে উহুদ যুদ্ধে আনসারগণের সত্তর
    জন, বির-ইমাউনার ঘটনায় আনসারগণের সত্তর জন এবং ইয়ামামার যুদ্ধে আনসারগণের সত্তর
    জন শহীদ হয়েছিলেন ৷ হাম্মাদ ইবন সালাম৷ আনাস (রা ) সুত্রে বনাি করেছেন যে, তিনি বলতেন
    উহুদ যুদ্ধে, বির-ই-মাউনার ঘটনায়, মাওতার যুদ্ধে এবং ইয়ামামার যুদ্ধে প্রতিবেশী প্রায়
    সত্তরজন করে আনসার সাহাবী শহীদ হয়েছিলেন ৷

    মালিক সাঈদ ইবন মুসায়িাব থেকে বর্ণনা করেন যে, উহুদ যুদ্ধে এবং ইয়ামামার
    যুদ্ধে সত্তর জন করে আনসারী শহীদ হয়েছেন ৷ আবু উবায়দ এর নেতৃত্বে পরিচালিত সেতুর
    যুদ্ধের দিনেও সত্তর জন আনসাবী শহীদ হয়েছিলেন ৷ ইকরিমা, উরওয়া, যুহরী এবং মুহাম্মাদ ইবন
    ইসহাক উহুদের শহীদগণের সংখ্যা সম্পর্কে এরুপই বলেছেন ৷ আল্লাহ্৩ তা জানার নিম্নোক্ত বা

    তাদের বক্তব্য সমর্থন এ ৷

    ৷ ১১১ কী ব্যাপার ! যখন৫ আমাদের উপর মৃসিবত এল তখন ণ্ডে তামর৷ বললে এটি কোথেকে
    এল ? অথচ তোমরা তো ওদের উপর দ্বিগুণ বিপদ ঘটিয়েছিলে ৷ (৩ আলে-ইমরানং : ১৬৫) ৷

    এখানে বদরের যুদ্ধে কাফিরদের ৭০ জন নিহত এবং ৭০ জন বন্দী হওয়ার দািকা ইঙ্গিত
    করা হয়েছে ৷

    ইবন ইসহাক থেকে বর্ণিত যে, উহুদ দিবসে আনসারগণের মধ্য থেকে ৬৫ জন শহীদ
    হয়েছিলেন ৷ সম্ভবতঃ এখানে আনসারগণের মধ্য থেকে “শব্দ না হয়ে” মুসলমানদের মধ্য থেকে

    হবে ৷ কারণ, পরবর্তীতে তিনি বলেছেন যে, ৬৫ জনের মধ্যে : জন ঘুহাজির আর অবশিষ্টগণ
    আনসার ছিলেন ৷ মুহাজির চারজন হলেন হাময৷ (রা), আবদুল্লাহ ইবন জাহ্শ (বা ) , মুসআব
    ইবন উমায়র (বা) এবং শাম্মাস ইবন উছমান (বা) ৷ গোত্রপরিচয়সহ তিনি আনসারী শহীদগণের
    নামও উল্লেখ করেছেন ৷

    ইবন হিশাম শহীদগণের সংখ্যা আরো ৫ জন বাড়িয়ে বলেছেন ৷ ফলে ভীর বক্তব্যানুসারে
    শহীদ সংখ্যা মোট ৭০ ৷ ওই যুদ্ধে যে সকল মুশরিক নিহত হয়েছিল ইবন ইসহাক তাদের নামও
    উল্লেখ করেছেন ৷ ওদের সংখ্যা ছিল বাইশ ৷ উরওয়৷ বলেন, উহুদ যুদ্ধের শহীদের সংখ্যা ৪৪
    কিৎবা ৪৭ ৷ মুসা ইবন উকবা বলেন, মুসলমান শহীদের সংখ্যা : ৯ জন আর কাফির নিহত
    হয়েছিল ১৬ জন ৷ উরওয়৷ (র)-এর মতে নিহত কাফিরের সংখ্যা ১ ৯ ৷

    ইবন ইসহ্াক বলেছেন, সেদিন কাফিরদের বাইশ জন নিহত হয়েছিল ন্ শাফিঈ (র)এর
    উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনাক৷ রী রবী (র) বলেন যে, সেদিন শুধু একজন মুশরিক মুসলমানদের হাতে বন্দী
    হয়েছিল ৷৩ তার না ন আবু আয্যা জুমাহী ৷ সে বদর যুদ্ধে ও মুসলমানদের হাতে ৩বন্দী হয়েছিল ৷
    তখন দয়া পরবশ হয়ে কোন মুক্তিপণ ছাড়াই রাসুলুল্লাহ্ (সা ৷) তাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন তবে শর্ত
    ছিল যে, স কোনদিন, আর মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না ৷ শর্তভঙ্গ করে সে উহুদ যুদ্ধে
    অংশ গ্রহণ করে ৷ এদিন বন্দী হবার পর সে বলেছিল, হে মুহাম্মাদ ৷ আমার কন্যা সন্তানদের
    খাতিরে আমার প্রতি দয়া করুন ৷ আমি অঙ্গীকার করছি যে, আর কোনদিন আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
    করব না ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, তোমাকে আর ছাড়ব না ৷ তোমাকে এই সুযোগ দেবনা যে,
    ভুমি মক্কায় গিয়ে দু পাজরে হাত বুলাবে আর বলবে “আমি দু দুবার মুহাম্মাদকে ঠকিয়েছি ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) এর আদেশে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল ৷ কেউ কেউ বলেন যে ওই দিনই
    রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বলেছিলেন ঈমানদার মানুষ এক গর্ত
    থেকে দুবার দৎশিত হয় না ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, উহুদ যুদ্ধ শেষে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় পথে ফিরতি যাত্রা করলেন ৷
    পথে তীর সাথে সাক্ষাত হয় হামন৷ যিনত জাহাশের ৷ লোকজন তীকে তীর ভাই আবদুল্লাহ ইবন

    জাহ্শের শহীদ হওয়ার সংবাদ জানায় ৷ তিনি ইন্না লিল্লাহ্ পাঠ করেন ৷ এবং আপন
    ভাইয়ের জন্যে মাগফিরাত কামনা করে দৃআ করেন ৷ এরপর তীর মামা হামযা (রা)-এর শহীদ
    হওয়ার সংবাদ র্তাকে জানানো হয় ৷ তিনি “ইন্ন৷ লিল্লাহ্ পাঠ করে তীর জন্যেও

    মাগফিরাতের দু“আ করলেন ৷ এরপর তীকে তীর স্বামী মৃসআব ইবন উমায়রের (রা ) শাহাদাত
    সংবাদ জানানো হল ৷ এটি শুনে তিনি চীৎকার করে কান্নকােটি করতে থাকেন ৷ এবং আহাজারি
    করতে থাকেন ৷ ভাই ও মামার মৃত্যু সংবাদে মোটামুটি ন্থিরত৷ এবং স্বামীর মৃত্যু সংবাদে তার
    চীৎকার ও আহাজ বি দেখে রাসুলুল্পাহ (সা) বললেনচ্;
    নিকট আপন স্ব৷ ৷মীর গুরুত্হু অবশ্যই অ৩ ত্যধিক ৷

    ইবন মাজ৷ উল্লেখ করেছেন যে, মুহাম্মাদ ইবন ইয়াহ্য়া — হামনা বিনৃত জাহাশ (বা)
    থেকে বর্ণনা করেন যে, তীকে বলা হয়েছিল তােমা র ভাইন্ ৷হীদ হয়েছেন, তিনি বলেছেন, ,
    অর্থাৎ আল্লাহ্৩ তাকে দয়া করুন, আমরা আল্লাব্লছুরই
    মালির্কানাধীন এবং ৩ারই নিকট আমাদের প্রত্যাবর্তন ৷ এরপর লোকজন তাকে বলেছিল

    “তোমার স্বামী শহীদ হয়েছেন ৷” তখন তিনি আহাজারি করে বলেছিলেন, হায় কপাল এ অবস্থা
    দেখে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, ত্রীর নিকট আপন স্বামীর এমন এক গুরুতুপুর্ণ অবস্থান আছে যা
    অন কিছুর জন্যেই নেই ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, আবদুল ওয়াইিদ সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (বা) থেকে বর্ণনা
    করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বানু দীনার গোত্রের এক মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন ৷
    মহিলার স্বামী, ভাইও পি৩ ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথী হয়ে যুদ্ধ করতে করতে উহুদ ময়দানে
    শহীদ হয়েছিলেন ৷ ওদের মৃত্যু সংবাদ র্তাকে শোনানাের পর র্জিন বলেছিলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    (কমন আছেন ? লোকজন বলল, হে অমুকের যা! আপনি যেমন কামনা করেছেন আলহামদু
    লিল্লাহ্ তিনি ভাল আছেন ৷ তিনি বললেন, তাকে একটু দেখান আমি তাকে এক নজর দেখে
    নিই ! রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর প্রতি ইশারা করে তন্াকে দেখানো হন ৷ বস্লুল্লাহ্ (সা) £ক দেখে তিনি
    বলে উঠলেন, হয়৷ বাসুলাল্ল হ পনান্থক সুস্থ দেখার পর সকল
    বিপদ আমার নিকটত তুচ্ছ ৷ ইবন হিশাম বলেন, ,া৷ ন্ শব্দটি কম এবং বেশী উভয় অর্থে ব্যবহৃত
    হয় এখানে শব্দটি কম অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ৷

    কাব ইমর৷ উল কা য়স বলেছেনহ্র;

    বানু আসাদ তাদের রাজাকে হত্যা করেছে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা ৷ ওই রাজা
    ব্যতীত সব কিছুই পৌণ ও৩ তুচ্ছ ৷ এখানে ট্রুা শু শব্দটিঙু চছ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় পৌছে র্তার তরবারিটি ফাতেম৷ (রা) এর
    হাতে সমর্পণ করলেন ৷ তিনি বললেন, মা রে! তরবারির রক্তগুলাে ধুয়ে ফেল এটি আজ আমাকে
    পুর্ণ সহযোগিতা করেছে ৷ হযরত আলী (বা) তা ৷র তরব৷ ৷রিটি ফা৩ ৷তিম৷ (রা) কে দিয়ে বললেন রক্ত
    ধুয়ে (ফল, এটি আজ সত্যিই আমাকে সহযোগিতা করেছে ৷ রাসৃলুল্লাহ্ (সা) বল ,লন হে আলী
    আজ তুমি পুর্ণ যুদ্ধ করেছ বটে; তবে তোমার সাথী হয়ে সাহ্ল ইবন হুনায়ফ এ য়০ আবু দৃজ ৷নাও
    পুরো মাত্রায় যুদ্ধ করেছেন ৷

    মুসা ইবন উকবা অনাএ বণেছেন যে, ব ৷সুলুন্ধুা৷ ২ (সা) হযব৩ আলী (রা) এর রক্ত মাথা
    তরবারি দেখে বলেছিলেন, আজ তুমি যুদ্ধের মত যুদ্ধ করেছ বহ্ট, তবে আসিম ইবন ছাবিত
    ইবন আবুল আফলাহ্, হারিছ ইবন সস্ফোহ্ ও না হল ইবন হুণ্নায়ফও খুব ভাল যুদ্ধ করেছে ৷

    বায়হাকী (রা) বলেন, সুফিয়ান ইবন উয়ায়ন৷ ইবন আব্বাস (যা) থেকে বর্ণনা করেন
    যে, তিনি বলেছেন, উহুদ দিবসে হযরত আলী (রা) তীর তরবারি নিয়ে ফিরে এলেন, তরবারিটি
    বেকে গিয়েছিল ৷ তিনি হযরত ফা৩ ৷তিম৷ (রা) কে বললেন, প্রশংসা যোগ্য এই তরবারিটি নাও,
    এটি আমাকে পরিতু ষ্ট করেছে ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বললেন, আজ তমি তােমারৎ তরবারি দ্বারা
    খুবই ভাল আঘাত করেছ বটে,৩ তবে নতুন ইবন হুনায়ফ , আবু দৃজ৷ না, আসিম ইবন ছাবিত এবং
    হারিছ ইবন স ৷ম্মাহ্ প্রমুথও ভ৷ ৷ল লড়েছেন ৷

    ইবন হিশাম বলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর এই তরবারিঢির নাম ছিল যুলফিকার ৷ তিনি আরো
    বলেন, কেউ কেউ বর্ণনা করেছেন, ইবন আবু নাজীহ সুত্রে যে, সেদিন জনৈক ঘোযক উহুদ

    ময়দানে ঘোষণা দিয়েছিল যে, যুলফিকার ব্যতীত উল্লেখযেগ্যে কোন তরবারি নেই ৷ ইবন ইসহাক
    বলেন, কেউ কেউ আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত আলী (রা)-কে

    বলেছিলেন “আল্লাহ্ আমাদেরকে পুর্ণ বিজয় দানের পুর্বে মুশরিকগণ আমাদের আর এরুপ ক্ষতি
    করতে পারবে না ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বানুআবদ আশহাল গোত্রের পাশ দিয়ে গেলেন ৷ উক্ত
    গোত্রের নিহত লোকদের শোকে অন্দর মহলে কান্নাকাঢির শব্দ <;পরুলন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
    দুচােখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে লাগালা , তিনি বললেন, “তবে হামযা (বা ) -এর জন্যে কান্নক্যেটি করার
    কেউ নেই ৷ তার জন্যে শোক প্রকাশ করার, কান্নাকাটি করার কেউ নেই ৷ সাদ ইবন মুআয ও
    উসায়দ ইবন হুজায়র বানু আবৃদে আশৃহাল গোত্রের নিকট গিয়ে ওদের মহিলাদেরকে হযরত
    হামযা (রা)-এর জন্যে শোক প্রকাশ করার নির্দেশ দিলেন ৷ হাকীম ইবন হাকীম — বানু
    আবদুল আশহাল গোত্রের জনৈক ব্যক্তি থেকে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেছেন, হযরত হামযা
    (রা)-এর গোকে ওই মহিলাদের আহাজারি ও কান্নাকাটি ণ্ডান রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাদের নিকট
    উপস্থিত হলেন ৷ তারা ছিলেন মসজিদ-ই-নববীর সম্মুখে ৷ তিনি বলেন, এবার তোমরা ফিরে যাও ৷
    মহান আল্লাহ তোমাদের প্রতি সদর হোন ! তোমরা তো নিজেরা এসে সহানুভুতি প্রকাশ করলে ৷

    ইবন ইসহাক বলেন, সেদিন থেকে রাসুলুল্লাহ্ (সা) মৃত ব্যক্তির জন্যে ৰিলাপ ও চীত্কার
    করে কান্নাকাটি নিষিদ্ধ করেছেন, ইবন হিশামও এরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ বর্ণনার এই অংশটুকু
    বিচ্ছিন্ন সনদে বর্ণিত, তবে এটি মুরসাল পদ্ধতিতেও বর্ণিত হয়েছে ৷ ইমাম আহমদ (র) এই
    হাদীছটি পুর্ণ সনদসহ উদ্ধৃত করেছেন ৷ ইমাম আহমদ (র) বলেছেন, যায়দ ইবন হুবাব —
    ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) উহুদ প্রান্তর থেকে মদীনায় দিকে
    এলেন ৷ তখন নিজ নিজ স্বামীর মৃত্যু সংবাদ শুনে শহীদগণের স্তীগণ কান্নাকাটি ও শোক প্রকাশ
    করতে লাপলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, হায় ! হামযার (বা ) জন্যে কান্নার কেউ নেই ৷ এক
    সময় রাসুলুল্লাহ্ (সা) ঘুমিয়ে পড়লেন ৷ পরে র্তাকে সজাগ করা হল ৷ তখনও মহিলাগণ
    র্কাদছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) শুনে বললেন, এখন তো দেখছি ওরা হামযা (রা)-এর জন্যে
    র্কাদছে ৷ এই বর্ণনাটি ইমাম মুসলিমের শর্তে উত্তীর্ণ ৷ এ প্রসংরুগ ইবন মাজা (র) হারুন ইবন
    সাঈদ — ইবন উমর (রা) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা ) বানু আবদুল আশহাল
    গোত্রের মহিলাদের নিকট পেলেন ৷ তখন তারা উহুদ যুদ্ধে নিহত তাদের আত্মীয়দের শোকে
    কান্নকােটি করছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন হায় ! হামযার (বা) জন্যে কান্নাকাটি করার কেউ
    নেই ৷ এরপর আনসারী মহিলাগণ এসে হযরত হামযার জন্যে শোক প্রকাশ করে কান্নড়াকাটি
    করতে লাপলেন ৷ কিছুক্ষণের মধ্যে রড়াসুলুল্লাহ্ (সা ) ঘুম থেকে জেগে উঠলেন ৷ এবার তিনি
    বললেন, দুঃখ এই মহিলাদের জন্যে যাওয়ার পর এরা এখন ফিরে এল কেন ? ওরা যেন চলে যায়
    এবং আজ থেকে কোন মৃত ব্যক্তির জন্যে কান্নকােটি না করে ৷

    মুসা ইবন উকবা বলেন রাসুলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় গলিপথে প্রবেশের পর শুনতে পেলেন যে,
    ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে ৷ তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ব্যাপার কী ?
    লোকজন বলল, এরা আনসারী মহিলা ৷ র্তাদের ঘনিষ্ঠ লোকদের শহীদ হওয়ার কারণে তীরা

    কান্নাকাটি করছেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : কিন্তু হামযার জন্যে কোন ক্রন্দনকারী নেই ৷ তিনি
    হাময৷ (রা)এর জন্যে ইসৃতিগফারও করলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর এই বক্তব্য শুনেছিলেন
    হযরত সাদ ইবন ঘুআয, সাদ ইবন উবাদা, মুআয ইবন জাবাল এবং আবদ্যু;া৷হ্ ইবন রাওয়াহ৷ ৷
    রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর একথা শুনে তারা নিজেদের মহল্লায় যান এবং মদীনায় সকল ক্রন্দনকারী
    মহিলাকে একত্রিত করেন ৷ তারা মহিলাদেরকে বললেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর চাচা হামযা
    (রা)এর জন্যে না কেদে তোমরা কোন শহীদের জন্যে র্কাদভ্রুব না ৷ কারণ, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    বলেছেন যে, মদীনায় হামযার জন্যে কাদার কেউ নেই ৷ ঐতিহাসিকদের ধারণা যে, ক্রন্দনকারী
    মহিলাদেরকে একত্রিত করেছিলেন আবদৃল্লাহ্ ইবন রাওয়াহ৷ ৷ হযরা১ হাময৷ (রা ) এর জন্যে যখন
    মহিলাগণ কান্নাকাটি করছিলেন তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, ব্যপার কী ? আনসারগণ তাদের
    মহিলাদেরকে একত্রিত করেছেন বলে তাকে জানানো হল ৷ তিনি আনসারদের জন্যে ইসতিগফার
    করলেন এবং তাদের প্রশংসা করলেন ৷ তারপর তিনি বলাম্পো, আমি মুলত কথাটি এ উদ্দেশ্যে
    বলিনি, আর আমি এরুপ কান্নাকাটি পসন্দ করি না ৷ বন্তুত তিনি এরুপ কান্নাকাটি নিষিদ্ধ করে
    দিলেন ৷ ইবন লাহ্ইয়াহ্ আবুল আসওয়াদ সুত্রে উরওয়াহ্ ইবন যুবায়র থেকে অনুরুপ বর্ণনা
    করেছেন

    মুসা ইবন উকবা বলেন, মুসলমানদের কান্নাকাটি ও শোক প্রকাশের এ সময়ে মুনাফিকরা
    নানা ষড়যগ্রে লিপ্ত হয় ৷ তারা মুসলমানদের দুঃখ ও হতাশা বৃদ্ধি এবং তাদেরকে রাসুলুল্লাহ্ (সা)
    থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যে জোর প্রচেষ্টা চালায় ৷ এ সময়ে ইয়াহ্রদীদের বিশ্বাসঘাতকতা ও শত্রুতা
    প্রকাশ্য রুপ নেয় ৷ মুনাফিকদের অপপ্ৰচার ও উত্তেজনা সৃষ্টির ফলে মদীনা ফুটম্ভ কড়াইয়ের ন্যায়
    টগবগ করতে থাকে ৷ ইয়াহুদীরা বলছিল যে, মুহাম্মাদ যদি নবী হতেন তবে শক্রপক্ষ তার উপর
    জয়ী হতে পারতনা এবং তিনি এভাবে যখমপ্রাপ্ত ও বিপদ্যাস্ত হতেন না ৷ বরং তিনি ক্ষমতালোভী
    (নাউযুৰিল্লাহ্) ৷ সকল ক্ষমতা করায়ত্ত করাই তার উদ্দেশ্য ৷ মুনাফিকর৷ ইয়াহুদীদের মত
    উস্কানিমুলক প্রচারণা চালাচ্ছিল ৷ তারা মুসলমানদেৱকে বলতে লাগল যে , তোমরা যদি আমাদের
    অনুসরণ করে ফিরে আসতে তবে এই বিপদেৱ সম্মুখীন হতেনা ৷ এ প্রেক্ষাপটে অনুগত
    মুসলমানদের আনুগত্যের প্রশংসা, মুনাফিকদের অপকর্মের বিবরণ এবং শহীদ মুসলমানদের প্ৰতি

    সাম্ভনা স্বরুপ আল্লাহ্ তা জানা এ আয়াত নাযিল করলেন :
    ৷ স্মরণ করুন ৷ যখন আপনি আপনার
    পরিজনবশ্চেরি নিকট থেকে প্ৰ৩ ত্যুষে বের হয়ে যুদ্ধের জন্যে মু’মিনদেরকে ঘাটিতে স্থাপন
    করছিলেন ৷ এবং আল্লাহ্ সর্বগ্রোতা, সর্বজ্ঞ (৩ আলে-ইমরান : ১ ২১) ৷ তাফসীর গ্রন্থে আমরা এ
    বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ৷

    আহত হওয়া সত্বেও রাসুলুল্লড়াহ্ (সা) ও সাহাবাগণের আবু সুফিয়ানের
    পশ্চাদ্ধাবন

    উহুদ যুদ্ধের বর্ণনা এবং সেখান থেকে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর মদীনায় প্রত্যাবর্তনের বিবরণ

    সম্পর্কিত পোস্ট:


    নোটঃ উহুদ যুদ্ধে শহীদগগের সংখ্যা Download করতে কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানান। যোগাযোগ করতে এখানে ক্লিক করুন।

    মীযান জামাতের সমস্ত কিতাব PDF Download

    নাহবেমীর জামাতের কিতাব PDF Download

    হেদায়াতুন নাহু জামাতের কিতাব PDF Download

    কাফিয়া জামাতের কিতাব PDF Download

    শরহে জামী জামাতের কিতাব PDF Download

    জালালাইন জামাতের কিতাব PDF Download

    মেশকাত জামাতের কিতাব PDF Download

    দাওরায়ে হাদিসের কিতাব সমূহ PDF Download

    মাদানী নেসাবের কিতাবসমূহ PDF Download

    Leave a Comment

    This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.