“হে আল্লাহ্ ! সকল প্রশংসা আপনার ৷ হে আল্লাহ্ ৷ আপনি যা প্রসারিত করেন তা কেউ
সংকুচিত করতে পাংর না ৷ আপনি যা সংকুচিত করেন, কেউ তা প্রসারিত করতে পারে না ৷
আপনি যাকে গুমরাহ করেন, কেউ তাকে সৎপথ দেখাতে পারে না ৰু আপনি যাকে সৎপথ দেখান,
কেউ তাকে গুমরাহ করতে পারে না ৷ আপনি যা দান করেন, কেউ তা রুখতে পারে না ৷ আপনি
যা আটক করে রাখেন কেউ তা দান করতে পাবেনা ৷ আপনি যা নিকটবর্তী করে দেন কেউ তা
দুরে সরাতে পারে না ৷ আপনি যা দুরে সরিয়ে দেন, কেউ তা কাছে আনতে পাবেনা ৷ হে আল্লাহ্া
আপনার বরকত, রহমত, অনুগ্রহ ও রিয্ক আমাদের জন্যে সম্প্রসারিত করে দিন! হে আল্লাহ্
আমি আপনার নিকট চিরস্থায়ী নে’মত কামনা করছি যা পরিবর্তন ও বিনড়াশ হয়না ৷ হে আল্লাহ্ ৷
আমি ওই অভাবের দিবসের জন্যে আপনার নিআমত কামনা করছি ৷ ভয়ের দিবসের জন্যে
কামনা করছি নিরাপত্তা ৷ হে আল্লাহ্ ! আপনি আমাদেরকে যা দান করেছেন তার অকল্যাণ থেকে
এবং যা দান করে নি তার অকল্যাণ থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ৷ হে আল্লাহ্
ঈমানকে আমাদের নিকট প্রিয় করে দিন এবং আমাদের অম্ভরে সেটিকে আকর্ষণীয় করে দিন;
কুফরী পাপাচার ও অবাধ্যতড়াকে আমাদের নিকট ঘৃণা করে দিন ; আমাদেরকে হিদায়াতপ্রাপ্তদের
অন্তর্ভুক্ত করে দিন ৷
হে আল্লাহ্ ! আমাদেরকে মৃ৩দ্দু দিবেন মুসলমান অবস্থায়, জীবিত রাখবেন মুসলমান অবস্থায়
এবং আমাদেরকে সৎ কর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন ৷ আমাদের লাঞ্ছিত ও বিপদগ্রস্ত করবেন
না ৷ হে আল্লাহ্ ! কাফিরদেরকে ধ্বংস করুন যারা আপনার রাসুলদেরকে অস্বীকার করে এবং
৷পনার পথ থেকে লোকদেরকে বাধা দেয় ৷ আপনার আযাব ও শান্তি তাদের জন্যে অবধারিত
করে দিন ৷ হে আল্লাহ্! সত্য মা’বুদ! কিতাব প্রাপ্ত লোকদের মধ্যে যারা কুফরী করে আপনি
তাদেরকে ধ্বংস করে দিন ৷ ইমাম নাসাঈ (র) এই হাদী যিয়াদ ইবন আইয়ুব — — — — রিফাআ
সুত্রে আল ইয়াওম ওয়াল লায়লাহ’ অধ্যায়ে উদ্ধৃত করেছেন ৷
সা’দ ইবন রবী’র শাহাদত ও হযরত হামযার অঙ্গচ্ছেদ
ইবন ইসহাক বলেন,এক পর্যায়ে লোকজন নিজেদের নিহত ব্যক্তিদেরকে খুজতে শুরু করে ৷
বানুনাজ্জার গোত্রের মুহাম্মাদ ইবন আবদৃল্লাহ্ ইবন আবদুর রহমান মাযিনী আমাকে জানিয়েছেন
যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমার পক্ষে কে গিয়ে সা’দ ইবন রাবী এর খোজ নেবে সে কি
জীবিত আছে নাকি মারা গেছে ? জনৈক আনসারী বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আমি যাব তার খোজ
নিতে ৷ তিনি খুজতে খুজতে সা’দ ইবন রাবীকে নিহত ব্যক্তিদের মাঝে মুমুর্বু অবস্থায় পেলেন ৷
ঐ আনসারটি সা’দকে বললেন, আপনি জীবিত আছেন নাকি মারা গেছেন তা জানার জন্যে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে পাঠিয়েছেন ৷ সাদ বললেন, আমি এখন বলতে গেলে মৃতদের দলে ৷
আপনি রাসুলুল্লাহ্ (সা) কে আমার সালাম বলবেন এবং বলবেন যে সা’দ ইবন রাবী আপনার
উদ্দেশ্যে বলেছেন “উম্মতের পক্ষ থেকে নবীকে যে প্রতিদান প্রদান করা হয় আল্লাহ তাআলা যেন
আমাদের পক্ষ থেকে তার সর্বোত্তম প্ৰতিদান প্রদান করেন ৷ আর আপনার সম্প্রদায়ের
€লাকজনকে আমার সালাম বলবেন, আর ৩াপেরওে বলরেন যে, সন্দ ইবন রাবী (আমাদের
উদ্দেশে বলেছে তোমাদের চক্ষু দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন ও সচল থাকা অবস্থায় কাফিরেরা যদি
তোমাদের নবীর কাছে ঘেষতে পারে র্তাকে আক্রমণ করতে পারে , তবে আল্লাহ্র দরবারে
তোমাদের কোন ওযর-আ পত্তি চলবে না ৷ আনসারী বলেন, একথা বলতে বলতে তিনি মৃত্যুর
কোলে চলে পড়লেন ৷ আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা)এর নিকট ফিরে ণ্হ্রসে র্দীকে এই সংবাদ জানাই ৷
আমি বলি , নিহত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে যিনি সাদ (রা)-কে খুজে বের করেছিলেন তিনি
হলেন মুহাম্মাদ ইবন সালামা ৷ মুহাম্মাদ ইবন সালামা ৷ মুহাম্মাদ ইবন উমর আল-ওয়াকিদী তাই
বলো;ছন ৷ তিনি এও বলেছেন যে, আনসারী লোকটি হযরত সাদ (রা)-কে প্রথমে দু’বার
ডেকেছিলেন ৷ কিন্তু তিনি কোন উত্তর দেননি ৷ শেষে তিনি যখন বললেন যে, আপনার খবর
নেয়ার জন্যে রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে পাঠিয়েছেন তখন তিনি অত্যন্ত ক্ষীণ স্বরে উত্তর দিলেন
এবং উপরোক্ত কথাগুলো বললেন ৷
আল-ইসভীআব গ্রন্থে শড়ায়খ আবু উমর বলেছেন যে, উবাই ইবন কাব (বা ) ই হযরত সাদ
(রা)-এর খোজ নিয়েছিলেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন ৷
সাদ ইবন রাবী ছিলেন, আকাবার শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যতম নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) সাদ (রা) ও আবদুর রহমান ইবন আওকের (বা ) মধ্যে ভ্রাতৃতৃ সম্পর্ক স্থাপন করে
দিয়েছিলেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) নিজে হযরত হামযা
(রা)-এর খোজে বের হয়েছিলেন ৷ বাতন আল ওয়াদী’তে তিনি তার লাশ খুজে পান ৷ তার পেট
চিরে কলিজা বের করে নেয়া হয়েছিল ৷ তার অঙ্গচ্ছেদ করা হয়েছিল, নাক ও কান দুটো কেটে
ফেলা হয়েছিল ৷ মুহাম্মাদ ইবন জাফর ইবন যুবায়র আমাকে জানিয়েছেন যে, হযরত হামযা
(রা)এর এ অবস্থা দেখে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন, সাফিয়্যা দুঃখ পারেন আর আমার
পরবভীকািলের জন্যে এটি যদি রেওয়াজে পরিণত হতে পারে এ আশঙ্কা না থাকলে আমি হামযা
(রা)-এর লাশ এভাবেই ফেলে রাখতাম তিনি পশু পাখীর থােরাক হতেন ৷ কোন স্থানে আল্লাহ
যদি আমাকে কুরায়শদের বিরুদ্ধে বিজয় দেন তবে ওদের ৩০ জনের আমি অঙ্গচ্ছেদ করে দেব,
নাককড়ান কেটে দেব ৷ হযরত হাময৷ (রা)-এর প্ৰতি এই অমানবিক আচরণের প্রেক্ষিতে
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দুঃখ ও ক্রোধ লক্ষ্য করে উপস্থিত মুসলমানগণ বললেন, আল্লাহর কসম ,
কােনদিন যদি আল্লাহ্ তাআলা ওদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে বিজয়ী করেন তবে আমরা ওদের
এমন অঙ্গহানি-অঙ্গকতন করব যা কোন আরব কখনো করেনি ৷ ইবন ইসহাক বলেন, বুরায়দা
ইবন সুফিয়ান ইবন ফারওয়৷ আসলামী ইবন আব্বাস (রা ) সুত্রে বর্ণনা করেন যে, এই
প্রেক্ষিতে ই আল্লাহ তাআলা ন৷ ৷যিল করলেন :
১ :
যদিও ওে ৷মর৷ প্ৰনিশো ধ গ্রহণ কর, তবে ঠিক ৩৩খানি করবে যতখানি অন্যায় তোমাদের
প্ৰতি ৩করা হয়েছে তবে তোমরা ধৈর্য ধারণ করলে ধৈর্যশীলদের জন্যে তা-ই উত্তম ( ১৬ নাহল :
১২৬) ৷
আয়াতটি নাযিল হওয়ার পর রাসুলুল্লাহ্ (সা) ওদেরকে ক্ষমা করে দেন, ধৈর্য অবলম্বন করেন
এবং শত্রুপক্ষের অঙ্গক৩ ন নিষে ধ করে দেন ৷
আমি বলি এ আয়াত মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে আর উহুদ য্দ্ব সংঘটিত হয়েছে মদীনায়
হিজররু৩ র তিন বছর পর ৷৩ তাহলে উপরোক্ত মন্তব্য যুক্তিসঙ্গত হয় কীভাবে ? আল্লাহ্ইভ
জানেন ৷
ইবন ইসহাক বলেন, হুমায়দ আততাবীল বর্ণনা করেছেন হাসান সুত্রে সামুরা থেকে ৷ তিনি
বলেছেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যে স্থানেই অবস্থান করেও তা ত্যাগ করেছেন ৷ সেখানেই সাদকার
নির্দেশ দিয়েছেন এবং অঙ্গকর্তন থেকে লোকজনকে বারণ করেছেন ৷ ইবন হিশাম বলেন, হামযা
(বা) এর লাশেব নিকট দা ৷ড়িয়ে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বলেছিলেন, আপনার মত ৩আঘাত কােনদিন কেউ
করেনি এবং এর চাইতে অধিক দুঃখজনক কোন স্থানে আমি কােনদিন দাড়াইনি ৷৩ তারপর তিনি
বললেন, জিবরাঈল (আ) এসে আমাকে বলে গেলেন, সাত আসমানে হামযা (রা)-এর পরিচয়
এভাবে লেখা হয়েছে যে, আবদুল মুত্তালিবের পুত্র হামযা, আল্লাহর সিত্হ এবং তার রাসুলের
সিংহ ৷ ইবন হিশাম বলেন, হামযা (রা ) এবং আবু সালামা ইবন আবদুল আসাদ দুজন ছিলেন
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দুধভইি ৷ আবু লাহাবের দাসী ছুওয়াইবা র্তাদের তিনজনকে দুধ পান
করিয়েছিলেন ৷
হযরত হামযা ও উহুদ যুদ্ধের শহীদগণের জানাযার নামায
ইবন ২পহাক র লেন , আহা৩াজন জৰুনক ব্যক্তি মিকসাম সুত্রে ইবন আব্বাস (বা) থেকে
বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নির্দেশে হযরত হামযা (রা)-কে একটি
চাদর দ্বারা কাফন পরানাে হল, তিনি তার জ নাযা পড়ালেন ৷ তাতে তিনি সাতবার তাকবীর
বললেন ৷ তারপর এক একজন শহীদ এনে৩ ৷তর পাশে রাখা হচ্ছিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) ওই শহীদের
নামায আদায় করছিলেন সাথে হযরত হামযা (রা)-এর নামায ও হচ্ছিল ৷ শেষ পর্যন্ত হযরত হামযা
(বা)-এর জানাযার নামাঘের সংখ্যা র্দাড়িয়েছিল ৭২-এ , এটি একটি একক বর্ণনা এটির সনদ
দুর্বল ৷ সুহায়লী বলেন, দেশ বিদেশের কোন উল্লেখযোগ্য আলিম এই বক্তব্য সমর্থন করেননি ৷
ইমাম আহমদ বলেন, আফ্ফান ইবন মাসউদ (রা) থেকে বংনাি করলেন ৷ তিনি বলেছেন,
মুসলিম মহিলাপণ উহুদ দিবসে মুসলিম পুরুষদের পেছনে অবস্থা ন করছিলেন ৷৩ তারা মৃশরিকদের
আক্রমণে আহত মুজাহিদদের সেবা শুশ্রাষা করছিলেন ৷ আমি যদি তখন আল্লাহর কসম করে