ঐ যুদ্ধে আবুইয়ালা (রা) ও শহীদ হন ৷ তাকে আবু উমারাও বলা হতো ৷ ওই যুদ্ধে আল্লাহর
সিংহ এবং রাসুলের সিংহ উপাধিপ্রাপ্ত রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর চাচা হামযা (রা ) শহীদ হন ৷ হযরত
হামযা (বা) এবং আবু সালামা ইবন আবদ্যু৷ আসাদ দুজনই রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দুধ ভাই ছিলেন ৷
আবু লাহাবের দামী ছুওয়ায়বা তাদের তিনজনকে স্তন্যদান করেছিলেন ৷ বুখারী ও মুসলিমের হাদীছ
দ্বারা তা প্রমাণিত ৷ এই তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায় যে, হযরত হামযা (রাঃ যে দিন শহীদ হন যে
দিন তার বয়স পঞ্চাশ অতিক্রম করেছিল ৷ তিনি ছিলেন সাহসী বীর এবং প্রথম কাতারের
সিদ্দীক ৷ সেদিন তিনি সহ ৭০ জন সাহাবী (রা) শহীদ হন ৷ ওই বছরই রাসুলের কন্যা হযরত
উছমানের শ্রী রুকইিয়া (রা) ইনতিকাল করেন এবং তার ইনতিকালের পর হযরত উছমান (রা)
রাসুল-কন্যা উম্মু কুলছুম (রা)-কে বিবাহ করেন ৷ এই আক্দ সম্পন্ন হয় তৃভীয় হিজরী সনের
রবীউল আওয়াল মাসে ৷ তাদের বাসর সম্পন্ন হয় ওই বছর জুমাদাল উখৃরা মাসে ৷ বিষয়টি
ইতোপুর্বে আলোচিত হয়েছে ৷
ইবন জারীর বলেছেন, তৃতীয় হিজরীতে আলী ও ফাতিমা (রা)এর পুত্র হাসানের জন্ম হয় ৷
ওই বছরই ফাতিমা (রা) হুসায়নকে গর্ভে ধারণ করেন ৷
হিজরী চতুর্থ সন
এ বছর মুহাররম মাসে আবু সালামা ইবন আবদুল আসাদ আবু তৃলায়হা আসাদীর নেতৃত্বে
একটি অভিযান প্রেরিত হয় ৷ তারা “কাতান নামক স্থানে শিবির স্থাপন করেন ৷ এ প্রসংগে
ওয়াকিদী বলেন, উনার ইবন উছমান বর্ণনা করেছেন, সালামা ইবন আবদুল্লাহ ইবন উমার ইবন
আবুসালামা প্রমুখ থেকে ৷ তারা বলেছেন যে , হযরত আবু সালামা উহুদ যুদ্ধে ৎশ নিয়েছিলেন ৷
যুদ্ধে তিনি বাহুতে প্রচণ্ড আঘাত পান ৷ এক মাস ষাবত চিকিৎসা চলে ৷ হিজরতের ৩৫ মাসের
মাথায় মুহাররম মাসে রাসুলুল্লাহ (মা) তাকে ডেকে বললেন, এই অভিযান নিয়ে তুমি বের হও ৷
আমি তোমাকে ওদের নেতা মনোনীত করলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) নিজে পতাকা বেধে দেন ৷ তিনি
বললেন, নির্ধারিত মুজাহিদদেরকে নিয়ে তুমি যাত্রা কর ৷ বনু আসাদ গোত্রে পৌছে তোমরা
ওদেরকে আক্রমণ করবে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আবুসালামা এবং তার সাথীদেরকে তাকওয়া অবলম্বন
ও সৎ কাজের উপদেশ দিলেন ৷ ১৫০ জন মুজাহিদ নিয়ে আবু সালামা “কাতানে শিবির স্থাপন
করেন ৷ সেটি ছিল বনু আসাদ গোত্রের একটি জলাশয় ৷ ওখানে অবস্থান করছিল শত্রুপক্ষ
থুওয়াইলিদের পুত্রদ্বয় তৃলায়হা আসাদী এবং তার ভাই সালামা ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা )-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করার জন্যে বনু আসাদ গোত্রের সকল মিত্র গোত্রকে একত্রিত করেছিল ৷ ওদেরই একজন লোক
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট উপ ত হয়ে তৃলায়হা ও তার ভাইয়ের নেতৃত্বে যুদ্ধ প্রন্তুতির সংবাদ
তাকে জানায় ৷ ওই লোকের সাথেই তিনি আবু সালামার নেতৃত্বে অভিযান প্রেরণ করেন ৷
মুসলিম বাহিনী ওখানে পৌছার পর শত্রুপক্ষ ভয় পেয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায় ৷ তারা বহু
ধন-সম্পদ ফেলে যায় ৷ তার মধ্যে ছিল উট, বকরী ইত্যাদি ৷ আবুসালামা (রা) ও তার সাথীগণ
ওইসব ধন-সম্পদ দখল করে নেন ৷ তারা তিনজন ক্রীতদাসকে বন্দী করেন ৷ শত্রুপক্ষ পালিয়ে
যাওয়ার পর দলবলসহ আবুসালামা (রা) মদীনায় দিকে ফিরতি যাত্রা করেন ৷ আসাদ গোত্রের যে
ব্যক্তি গোপন সংবাদ জানিয়েছিল গনীমতের সাল থেকে প্রচুর পরিমাণ সম্পদ তাকেও দেওয়া হয় ৷
রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর জন্য একটি ক্রীতদাস এবং বিধিমুতাবিক মোট সম্পদের এক-পঞ্চমাংশ
রেখে দেওয়া হয় ৷ অবশিষ্ট মালামাল অভিযানে অংশ গ্রহণকারী মুজাহিদদের মধ্যে বন্টন করে
দেওয়া হয় ৷ তারপর তারা মদীনায় ফিরে এলেন ৷
উমর ইবন উছমান বলেন, আবদুল মালিক উমর ইবন আবু সালাম৷ (র৷ ) থেকে বর্ণিত যে,
তিনি বলেছেন, উহুদ যুদ্ধে যে কাফিৱ আমার পিতাকে যখন করেছিল যে ছিল আবু উসমাে
জাশামী ৷ প্রায় এক মাস যাবত আমার পিতা ওই যখমের চিকিৎসা করল ৷ তারপর তিনি সুস্থ হয়ে
উঠলে রাসুলুল্লাহ্ (সা) তাকে কতোন এলাকায় প্রেরণ করেন ৷ সময়টি জ্জি ৪র্থ হিজরীর মুহাররাম
মাস ৷ সফর উপলক্ষে দশ দিনের অধিরুহ্মাল তিনি মদীনায় বাহিরে ছিলেন ৷ মদীনায় প্রুত্যাবর্তনের
পর তার ক্ষতস্থান আবার দগদাগ হয়ে উঠে ৷ অবশেষে জুমদোল উলা মাসের তিনদিন অবশিষ্ট
থাকতে তার ইনতিকাল হয় ৷ উমর ইবন আবুসালামা বলেন আমার পিতার মৃত্যুতে আমার যা
যথারীতি ইদ্দত পালন করেন ৷ : মাস ১০ দিন ইদ্দত পালন্ণ্নর পর রাসুলুল্লাহ্-র সঙ্গে পরিণয়
সুত্রে আবদ্ধ হন ৷ শাওয়াল মাসের শেষ দিকে তাদের বাসর হয় ৷ এ প্রেক্ষিতে আমার মা বলভেন
“শাওয়াল সালে বিয়ে অনুষ্ঠান এবং বাসর উদযাপনে কোন দোষ নেই ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) আমাকে
বিয়ে করেছেন শাওয়াল মাসে এবং ঐ মাসেই আমাদের বাসর হয় ৷ বর্ণনকােরী বলেন, ৫৯ হিজ্জী
সনের যিলকদ-মাসে উম্মু সালমো (রা)-এর ওফাত হয় ৷ বায়হাকী (র) এটি বর্ণনা করেহ্নে৷ ৷ আমি
বলি, ৪র্থ হিজরী সনের শেষের দিকের ঘটনাবলী উল্লেখ করার সময় শাওয়াল মাসে উম্মু সালামার
সাথে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর বিবাহ এবং এতদৃসংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় যেমন মায়ের বিয়েতে পুক্রো
অভিভাবকভু, এ বিষয়ে উলামা-ই কিরামের মতভেদ ইত্যাদি উল্লেখ করব ইনশাআল্লাহ্ ৷
রাজীর লোমহর্ষক ঘটনা
ওয়াকিদী বলেন, এই ঘটনাটি ঘটেছিল : র্থ হিজরী সনের সফর মাসে ৷ রাসুলল্লাহ্ (সা) ওই
জামাআতকে প্রেরণ করেছিলেন মক্কাৰাসীদের প্রতি ৷ রাব্জী হল উছফান থেকে ৮ ম্াইলের
ব্যবধানে অবস্থিত একটি কুয়াে ৷ ইমাম বুখারী (র) বলেন, ইবরাহীম আবু হুরায়রা (রা)
সুত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) একদল গুপ্ত-চর পাঠিয়েছিলেন ৷ তাদের নেতা
মনোনীত করেছিলেন আসিম ইবন ছাৰিতকে ৷ আসিম ইবন ছাবিত ছিলেন আসিম ইবন উমার
বদৃযায়ল গোত্রের এক উপগােত্র বনু লাহয়ান তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয় ৷ ফলে ঐ
গোত্রের প্রায় একশ’ তীরন্দাজ ব্যক্তি ঐ ঘুসলিম জামাআতাক আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে বের হয় ৷
তাদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে শত্রুপক্ষ অগ্রসর হয় ৷ এক জায়গায় এসে তারা যাত্রা বিরতি করে ৷
সেখানে তারা কতক খেজুর বীঢি দেখতে পায় ৷ তারা বল্মবলি করতে লাগলো ওগুলে৷ তো
দেখছি মদীনায় খেজুর ৷ সফরের খাদ্য হিসেবে আসিম (বা ) ও তার সাথীরা সেগুলো সঙ্গে
এসেছিলেন ৷ দ্রুত বো:গ তারা ঐ জামলোতের পশ্চাদ্ধাবন করে ৷ তারা তাদের কাছে পৌছে
পেল ৷ আসিম ও তার সাথিগণ উপায়ান্তর না দেখে ফদ ফদ নামক একটি উচু টিলায় উঠে যায় ৷
শত্রুপক্ষ তাদেরকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে ৷ ওরা বলল, আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে তোমরা
যদি আমাদের নিকট আত্মসমর্পণ কর ৷ তার আমরা তোমাণ্দর কাউকে হত্যা করব না ৷ ষ্লেনেতা