আদায় করেছ ? তিনি বললেন, যে বস্তুটি আমার গোসল করার মধ্যে অম্ভরায় সৃষ্টি করেছিল আমি
এ সম্বন্ধে তাকে সংবাদ দিলাম এবং বললাম , আমি শুনেছি আল্লাহ তাআল৷ ইরশাদ করেন ও
অর্থাৎ এবং তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে
হত্যা করবে না ৷ আল্লাহ তেমািদের প্রতি পরম দয়ালু ৷ (৪ নিসা হ্র ২৯) রাসুলুল্লাহ্ (সা) হেসে
দিলেন ৷ তাকে আর কিছু বললেন না ৷
মুহাম্মাদ ইবন সালামা আমর ইবন আস (রা) এর আযাদকুত দাস আবু করেন (বা)
হতে অনুরুপ হাদীছ বর্ণনা করতে গিয়ে অতিরিক্ত বলেন, “এরপর তিনি লজ্জান্থান ধৌত করেন,
সালাতের জন্যে উয়ু করেন এবং উপস্থিত সাহাবায়ে কিরামকে দিয়ে সালাত আদায় করেন ৷ এ
বর্ণনায় তিনি তায়াম্মুমের কথা উল্লেখ করেননি ৷ তবে আবু দাউদের বর্ণনায় তায়াম্মুমের উল্লেখ
আছে ৷
ওয়ড়াকিদী আবু বকর ইবন হাযাম (রা) হতে বর্ণনা কদ্:রন, তিনি বলেন, যুদ্ধ থেকে
ফেরত আসার পথে অত্যন্ত ঠাণ্ডা রাতে সেনাপতি আমর ইবন আস (বা ) এর স্বপ্নদোষ হয় ৷ তিনি
তার সাথীদেরকে বললেন, আমার স্বপ্নদোষ হয়েছে তোমরা কী বল ? যদি আমি গোসল করি,
তাহলে আমার মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৷ তারপর তিনি পানি আনিয়ে লজ্জাস্থান বৌত
করলেন, উয়ু করলেন এবং তায়াম্মুমও করলেন ৷ তারপর তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করলেন,
তারপর সর্বপ্রথম আওফ ইবন মালিক (রা) কে সংবাদ বাহকরুপে মদীনায় প্রেরণ করেন ৷ আওফ
(বা) বলেন, “আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে ভোর রাতে সাক্ষাত করলাম ৷ তিনি ঘরে স ৷লাত
আদায় করছিলেন ৷ সালাত শেষে আমিও তাকে স৷ লা৷ম দিলাম ৷ তিনি বললেন, “ (ক ? আওফ ইবন
মালিক (বা) নাকি ? আমি বললাম , “জী হা” ৷ “আমি আ ওফ ইবন মালিক ইয়া রড়াসুলাল্লাহ্ ৷
তিনি বললেন, যবাইকারী আওফ ? ’শু উত্তরে আমি বললাম, জী ই৷ ৷ এরপর তিনি অতিরিক্ত আর
কিছু বলেননি ৷ তারপর বললেন, তারপর সংবাদ কী ? “আমি আমাদের সফরকালে যে যে ঘটনা
ঘটেছিল, আবু উবায়দা (বা) ও আমর ইবন আস (রা ) এর মধ্যে মতবিরোধ এবং আবু ওবায়দা
(বা ) কর্তৃক আনুগত্য স্বীকার ইত্যাদি সবিস্তারে বর্ণনা করলাম ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, “আবু
উবায়দা ইবনুল জাবৃরাহ এর প্রতি আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন ! রাবী বলেন, এরপর আমি সংবাদ
দিলাম যে, আমর (রা) জানাবাত অবস্থায় ণ্লাকজনকে নিয়ে সালাত আদায় করেছেন ৷ তার কাছে
পানি ছিল ৷ তিনি শুধুমাত্র লজ্জান্থান ধৌত করেন এবং উয়ু করেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) নীরব
থাকলেন ৷ যখন আমর (বা) রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে আগমন করেন ৷ তখন তিনি তাকে তার
সালাত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলেন ৷ তখন তিনি বললেন, যে সত্তা আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ
করেছেন তার শপথ, যদি আমি সেদিন গোসল করতাম৩ তাহলে আমি মারা যেতাম ৷ এ ধরনের
প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর আমি কোন দিন দেখিনি ৷ আল্লাহ্৩ তা জানা ইরশাদ করেনং
অর্থাৎ এবং তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে হত্যা
করবে না ৷ নিশ্চয়ই আ ল্লাহ্ তা আলা তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু ৷ (৪ নিসাং : ২৯) ৷
রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) এতে হেসে দিলেন ৷ আর এর অতিরিক্ত কোন কিছু বলেছেন
বলে আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই ৷
ইবন ইসহাক আওফ ইবন মালিক আল আশজাঈ (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি
বলেন, “যে যুদ্ধে রড়াসুলুল্লাহ্ (সা) আমর ইবনুল আস (রা)-কে প্রেরণ করেছিলেন যে যুদ্ধে আমি
অংশগ্রহণ করেছিলাম ৷ তা হচ্ছে যাতৃস সড়ালাসিলের যুদ্ধ ৷ আমি আবু বকর (বা) এবং উমর
(রা)-এরও সঙ্গী ছিলাম ৷ তারপর আমি এমন একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে আগমন করলাম যারা
একটি উট যবাই করেছে; কিন্তু চামড়া পৃথক করা ও গোশত টুকরা টুকরা করা তারা জানতো না ৷
আমি ছিলাম একজন দক্ষ কসাই ৷ আমি তাদেরকে রললাম, তোমরা কি আমাকে এক-দশমাংশ
গোশত প্রদান করবে ? আমি তোমাদের মধ্যে গোশৃত কেটে রণ্টন করে দেবাে ৷ ’ তারা বলল,
হী৷ ৷ এরপর আমি ছুরি হাতে নিলাম এবং গোশত বানিয়ে দিলাম ও একাৎশ আমি নিলাম ৷
আমার সাথীদের কাছে এ পােশত নিয়ে আসলাম, রান্না করলাম ও আমরা সকলে মিলে তা
থেলাম ৷ আবু বকর (বা) ও উমর (রা) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, এ গোশত তুমি কােখেকে
পেলে হে আওফ ? উত্তরে আমি তাদেরকে সব খুলে রললাম ৷ দুই জন্ৰুই বললেন, না, আল্লাহ্র
শপথ, তুমি আমাদেরকে এ গোশত (খতে দিয়ে ভাল কাজ করনি ৷ তারপর তারা পেটের ভিতর
হতে গোশত বের করার জন্যে বমি করতে চেষ্টা করলেন ৷ এ সফর থেকে যখন লোকজন
ফেরত আসল তাদের মধ্যে আমি ছিলাম প্রথম ব্যক্তি ৷ আমি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সাথে সাক্ষাত
করলাম ৷ তিনি তখন তার ঘরে সালাতে রত ছিলেন ৷ সালাতাস্তে আমি রললাম, আস্সালাঘু
আলাইকুম ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ওয়া রাহ্মাতৃল্পাহ ওয়া বারাকাতৃহু ৷ তিনি বললেন, কে আওফ ইবন
মালিক নাকি ? আমি বললাম , জী হী৷ , আপনার প্রতি আমার মাতাপিতা কুরবান হোন ৷ তখন তিনি
বললেন, যবাইকারী আওফ ? এরপর তিনি আর কিছু অতিরিক্ত বললেন না ৷
মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক অন্য এক একাধিক রাবী বিচ্ছিন্ন সনদে অনুরুপ বংনাি করেন ৷
বায়হাকী আওফ ইবন মালিক (বা) হতে অনুরুপ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আওফ
ইবন মালিক (বা) বলেন , আমি গোশত সংগ্রহের বিষয়টি উমর (রা)-এর কাছে উত্থাপন করলাম ৷
তিনি এ সম্বন্ধে আমাকে জিজ্ঞেস করার আমি তাকে বিস্তারিত জানালাম ৷ তিনি বললেন, তু
তোমার পরিশ্রমের পারিশ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে তাড়াহুড়া করেছ ৷ (অর্থাৎ বিষয়টির বৈধ্তা সম্বন্ধে
তোমার কাউকে জিজ্ঞেস করে সঠিক পন্থা অবলম্বন করা উচিত ছিল ৷ এখন যা করেছ, তা বৈধ
নয় ৷” সুতরাং তিনি আর এ গোশত খেলেন না ৷
হাফিয বায়হাকী আমর ইবন আস (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, “রাসুলুল্লাহ্
(সা) আমাকে যাতৃস সালাসিল বাহিনীর সেনাপতি হিসেবে প্রেরণ করেন ৷ সেনাবাহিনীর মধ্যে আবু
বকর ধুরা) এবং উমর (রা)ও ছিলেন ৷ আমি মনে মনে তাবলাম, আবু বকর (রা) ও উমর
(রা)-কে সেনাপতি না করে আমাকে সেনাপতি করেছেন সম্ভবত সকলের চাইতে রাসুলুল্লাহ্
(না)-এর কাছে আমার মর্যাদাই বেশী ৷ তাই তার কাছে আমি আগমন করলাম এবং তার সামনে
রসলাম ও রললাম, হে আল্লাহ্র রাসুল ! আপনার কাছে প্রিয়তম ব্যক্তিটি কে ? রাসুলুল্লাহ্ (সা)
বললেন আইশা ৷ আমি বললাম , আমি আপনার পরিবার সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করছিনা ৷ তখন তিনি
বললেন, আইশার পিতা ৷ ’ আমি বললাম, এরপর কে ? ’ তিনি বললেন, উমর ৷ আমি বললাম,
তারপর ? এভাবে রাসুলুল্লাহ্ (সা) বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলেন ৷ তিনি বললেন,
এরপর মনে মনে বলতে লাগৃলাম, আর কােনদিন এ ধরনের প্রশ্ন করব না ৷ ’
এ হাদীছটি সহীহ্ বুখারী এবং সহীহ্ মুসলিমেও অনুরুপ বর্ণিত রয়েছে ৷
আমর (বা) বলেন, এরপর আমি চুপ করে গেলাম , এই তার যে, আমার নাম না সর্বশেষে
তিনি উল্লেখ করেন ৷
সাগর সৈকতে প্রেরিত আবু উবায়দা (রা)এর অভিযান১
ইমাম মালিক (র) জাবির (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা)
সাগর সৈকতের দিকে একটি সেনাদল প্রেরণ করেন ৷ র্তাদের আমীর ছিলেন আবু উবায়দা ইবনুল
জাবৃরাহ্ (বা) ৷ সেনাবাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ছিল তিন শ’ ৷ আমিও তাদের মধ্যে ছিলাম ৷ আমরা ঘর
থেকে বের হলাম বটে; কিন্তু রাস্তায় এসে আমাদের পাথেয় শেষ হয়ে যায় ৷ সেনাবাহিনীর সকল
সদস্য তাদের কাছে রক্ষিত খাবার সেনাপতি আবু ওবায়দা (রা)-এর আদেশ মুতাবিক তার কাছে
জমা দিলেন ৷ সেনাপতি প্রতিদিন কিছু কিছু করে সেনা সদস্যদেরকে খাবার দিতে লাগলেন ৷
খাবার ফুরিয়ে পেলে দৈনিক মাথা পিছু শুধু মাত্র একটি খেজুর বণ্টন শুরু হ্ল্ ৷ পরবর্তী রাবী
জাবির (রা)-কে জিজ্ঞেস করলেন, একটি খেজুর দিয়ে আপনাদের কীভাবে চলত ? তিনি বললেন,
যখন খাবার শেষ হয়ে গেল, তখন এই একটি ৫খজুরও আর জুটলনা ৷ তারপর আমরা সাগর
সৈকতে পেলাম এবং আমরা পাহাড়ের ন্যায় একটি সামুদ্রিক মাছ দেখতে পেলাম ৷
রাবী বলেন, সেনাবাহিনী এটাকে আঠার দিন যাবত খেলেন ৷ তারপর একদিন আবুউবায়দা
(বা) মাছটির পাজরের দুইটি বৃহৎ হাড় নিয়ে দীড় করাতে নির্দেশ দিলেন ৷ এ দুটো হাড়ের নিচ
দিয়ে একজন সৈনিক তার সাওয়ারী নিয়ে পার হয়ে গেল, কিন্তু এ দুটো হাড়কে স্পর্শ করল না ৷
সহীহ্ বুখারী ও সহীহ্ মুসলিমে অনুরুপ বর্ণনা পাওয়া যায় ৷ তবে তাদের ভাষায় জাবির
(রা)-এর ভাষ্য নিম্নরুপ : “রাসুল (সা) আমাদেরকে তিনশ’ অশ্বারোহী সহ এক অভিযানে প্রেরণ
করেন ৷ আমাদের আমীর ছিলেন আবুউবায়দা ইবনুল জাবৃরাহ্ (বা) ৷ আমরা কুরায়শদের একটি
কাফেলার অপেক্ষায় ছিলাম ৷ এরপর আমরা অত্যন্ত ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম ৷ খাদ্যের অভাবে আমরা
গাছের পাতা যেতে বাধ্য হলাম ৷ তাই এই সেনাবাহিনীকে খাবৃতের যুদ্ধ বলা হয় ৷ ২ রাবী বলেন,
এক ব্যক্তি প্রথম দিন তিনটি উট যবেহ করলেন, দ্বিতীয় দিন আরো তিনটি উট যবেহ করলেন
এবং তৃতীয় দিন আরো তিনটি উট যবেহ করলেন ৷ এরপর আবু ওবায়দা (যা) তাকে উট ঘবাই
করতে নিষেধ করলেন ৷ রাবী বলেন, সাগর থেকে একটি বিশাল মাছ উঠে আসল, যাকে বলা
হয় আম্বর ৷ এই মাছটি আমরা ১৫ দিন পর্যন্ত থেলাম এবং আমরা তার থেকে তেল সংগ্রহ করে
শরীরে মাখলাম ৷ ফলে আমাদের শরীর সুস্থ হয়ে উঠল ৷ এরপর পাজরের অস্থির ঘটনা বর্ণনা করা
হয় ৷ উপরোক্ত হাদীছের মধ্যে উল্লিখিত, “আমরা কুরায়শদের একটি কাফেলার অপেক্ষায় ছিলাম’
এ বাক্যটির দ্বারা বুঝা যায় যে, এ অভিযান প্রেরণের ঘটনাটি ছিল হুদায়বিয়ার পুর্বেকার ঘটনা ৷
আল্লাহ তাআলা অধিক পরিজ্ঞাত ৷ যে ব্যক্তিটি উট যবেহ করেছিলেন তার নাম ছিল কায়স ইবন
সাদ ইবন উবায়দা (রা) ৷
হাফিয বায়হার্কীর উদ্ধৃত জাবির (রা)-এর বর্ণনায় অতিরিক্ত আছে ৷ আমাদের পাথেয়
১ একে সীকুল বাহার অভিযান বলা হয়ে থাকে ৷ সম্পাদকদ্বয়
২ খাবত অর্থ গাছের পাতা ৷
ছিল কেবল এক ঝুড়ি খেজুর ৷ এছ ৷ড়৷ আমাদের খাওয়ার মতে ৷ কোন কিছুই ছিলনা ৷৩ তাই আবু
উবায়দা (রা) আমাদেরকে একটি একটি খেজুর দৈনিক খেতে দিতেন ৷ আমরা ঐ একটি খেজুর
চুষতে থাকতাম যেমন শিশুরা করে থাকে ৷ তারপর আমি পানি পান করতাম ৷ এতে আমাদের
একটি দিবারাত চলে যেত ৷ আর আমরা আমাদের লাঠি৷ দ্ব ৷র৷ গাছের পাতায় পাতায় আঘাত
করতাম ৷ সেই পাতা ৷পানির মধ্যে ভিজিয়ে রাখতাম ৷ এরপর আমরা উক্ত পাতা খেতাম ৷ রাবী
বলেন, এরপর আমরা সাগরের তীরে চলে গেলাম এবং বিরাট বালির ন্তুপের ন্যায় একটি প্রকাণ্ড
মাছ সাগরের তীরে আমাদের জন্যে ভেসে আসল ৷ এটার নিবল্ট এসে দেখি এটা একটি বিরাট
প্রাণী যাকে বলা হয় আম্বর ৷ আবু উবায়দা (রা) বললেন, এটাতো মৃত তাই এটা খাওয়া যাবে না ৷
এরপর তিনি বললেন, “না বরং আমরা আল্লাহর রাসুল (সা) এর দুত, আমরা আল্লাহ্র রাস্তায়
রয়েছি আর আমরা নিরুপায় অবস্থায় আছি, কাজেই তোমরা তা খেতে পর ৷ রাবী বলেন, আমরা
এখানে প্রায় একমাস অবস্থান করলাম ৷ আমরা ছিলাম তিনশ’ জন ৷ আমরা মোটা তাজা হয়ে
গেলাম ৷ মাছের চোখের উপরিতাগ থেকে আমরা মটকার সাহাব:হ্বা৷ তেল সংগ্রহ করতাম ৷ আর
প্রতিদিন একটি র্ষাড়ের পরিমাণ অংশ কেটে নেয়া হত ৷ আবু উবায়দ৷ (রা) আমাদের মধ্য হতে
তেব জনকে মাছের চোখের উপর বসিয়ে দিলেন এবং পাজরের হাড়গুলে৷ হতে একটি হাড় হাতে
নিলেন ও দাড় করালেন ৷ত তারপর সবচেয়ে বড় সাওয়ারীটিকে তার নীচে দিয়ে যাবার আদেশ
দিলেন ৷ আমরা তা থেকে কিছু অংশ রান্না করে পাথেয় হিসেবে সংগে নিলাম ৷ যখন আমরা
মদীনায় আগমন করলাম তখন রাসুল (সা) এর দরবারে হাযির হয়ে সমস্ত ঘটনা বর্ণনা করলাম ৷
তিনি বললেন, আল্লাহ্ তাআলা দয়া করে তোমাদের জন্যে খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন ৷
ত তার কিছু অংশ কি তোমাদের কাছে আছে এবং আমাকে খেতে দিতে পার দ্রা রা ৷বী বলেন, আমরা
কিছু অং শ তার খিদমতে পেশ করলাম এবং৩ তিনি তা খেলেন ৷ ইমাম মুসলিম ও উপরের
হাদীছটি জাবির আনসা ৷রী (রা)-এর বরাতে উল্লেখ করেছেন ৷
উপরোল্লিখিত অধিকাংশ হাদীছের আলোকে বুঝা যায় যে, অভিযানটি ছিল হুদায়বিয়া সন্ধির
পুর্বেকার ঘটনা ৷ কিন্তু ইমাম বায়হাকীর অনুকরণেত তা এখানে উল্লেখ করা হল ৷ কেননা, তিনি এ
ঘটনাটি মুত তা যুদ্ধের পর ও মক্কা বিজয়ের পুর্বে উল্লেখ করেছেন ৷ আল্লাহ্৩ তা আলাই অধিক
পরিজ্ঞাত ৷
ইমাম বুখারী (র) মুতা যুদ্ধের পর জুহায়ন৷ গোত্রের হরুকাত এলাকায় উসাম৷ ইবন যায়দ
(রা)-এব অভিযানের বর্ণনার পরে উল্লেখ করেছেন ৷ উসাম৷ (রা) বলেন, “রাসুলুল্পাহ্ (সা)
আমাদেরকে হুরুকাত এলাকার অভিযানে প্রেরণ করেন ৷ আমরা ভোর বেলায় শত্রুর উপর হামলা
করি ও তাদেরকে পরাজিত করি ৷ আমিও আমার এক আনসারী ভাই দুশমনদের এক লোককে
আক্রমণ করি ৷ যখন তাকে আমরা করে করে ফেললাম তখন লোকটি বলে উঠলং ৰু৷ ৷ ন্থএ ৷ ১া
ধ্া৷ ৷ আনসারী তাই তাকে আঘাত করা থেকে নিবৃত্ত থাকলেন; কিন্তু আমি বর্শা নিক্ষেপ করে
তাকে হত্যা করলাম ৷ যখন আমরা মদীনায় ফিরে এলাম তখন রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে ঘটনা টি
উল্লেখ করা হলেও তিনি বললেন, হে উসাম৷ ৷ তুমি কি তাকে বলার পরও হত্যা
করেছ ? আমি বললাম, যে ছিল তা ৷শ্রয়গ্রহণকাবী অর্থাৎ এটা ছিল তার আত্মরক্ষার একটি অজুহাত
মাত্র ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) র্তার বাক্যটি বারবার বলছিলেন ৷ এমন কি আমি মনে মনে ইচ্ছা পোষণ
করতে লাপলাম যে, ঐ দিনের ঘটনার আগ পর্যন্ত যদি আমি মুসলমান না হতাম তাহলে কতইনা
ভাল হত ৷ এ হাদীছটি প্রয়োজনীয় মন্তব্য ও ব্যাথ্যাসহ পুর্বে উল্লেখ করা হয়েছে ৷
এরপর ইমাম বুখারী (র ) সালামা ইবনুল আকওয়া (রা)-এর বরাতে হাদীছ উল্লেখ করে
বলেন যে, তিনি বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর সাথে সাতটি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি ৷ আর
যেসব জায়গায় রাসুলুল্লাহ্ (সা) গমন না করে সৈন্যদল প্রেরণ করেছেন এরুপ নয়টি অভিযানে
আমি অংশ নিয়েছি ৷ কোন কোন সময় আবু বকর (রা) ছিলেন আমাদের আমীর ৷ আবার কোন
কোন সময় উসামা (রা) ছিলেন আমাদের আমীর ৷
এরপর বায়হাকী হাবশার শাসনকর্তা নাজ্জাশীর মুসলমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ, তার মৃত্যু
সম্পর্কে মুসলমানদের কাছে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সংবাদ পরিবেশন ও তার জানাযার সালাত
আদায়ের ঘটনা উল্লেখ করেন ৷ আবু হুরায়রা (রা)-এব বরাতে তিনি বলেন, যেদিন নাজ্জাশী
ইনতিকাল করেন, সেদিন রাসুলুল্লাহ্ (না)-তীর মৃত্যু সংবাদ পরিবেশন করেন এবং
মুসলমানদেরকে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন ও চার তাকবীরসহ তার জানাযার সালাত আদায়
করেন ৷ বুখারী এবং মুসলিম আবু হুরায়রা (রা)-এর বরাতে অনুরুপ হাদীছ বর্ণনা করেন ৷ বুখড়ারী
ও মুসলিম জাবির (রা)-এর বরাতে বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) ইরশাদ করেন, আজকে একজন
পুণ্যবান ব্যক্তি ইনতিকাল করেছেন ৷ তোমরা আশৃহামার (নাজ্জাশীর শাসনকর্তা) জানাযার সালাতে
অংশ গ্রহণ কর ৷ এ হাদীছটি পুর্বেই বর্ণনা করা হয়েছে ৷
বলবােহুল্য যে, মক্কা বিজয়ের বহু পুর্বেই নজােশী ইনতিকাল করেছিলেন ৷ সহীহ্ ঘুসলিমে
একটি বর্ণনা আছে যে, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন রাজা বাদশাহদের কাছে পত্র লিখেছিলেন তখন
নাজ্জাশীর কাছেও একটি পত্র দিয়েছিলেন ৷ সে নাজ্জাশী মুসলমান ছিলেন না ৷ অবশ্য ওয়াকিদী
প্রমুখ ঐতিহাসিকগণ মনে করেন যে, তিনি তখন মুসলমান ছিলেন ৷ আল্লাহ্ তাআলাই অধিক
পরিজ্ঞাত ৷
বায়হাকী উম্মে কুলসুম (বা) হতে বর্ণনা করেন ৷ তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যখন
উম্মে সালামা (রা)-কে বিবাহ করেন তখন উম্মে সালামা নাজ্জাশীর কাছে কিছু পরিমাণ মিশৃক ও
একজােড়া কাপড় হাদিয়া স্বরুপ পাঠান ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন, আমার ধারণা, নাজ্জাশী মৃত্যু
বরণ করেছেন ৷ এবং তার কাছে প্রেরিত হাদিয়া অচিরেই ফেরত আসবে ৷ এরপর এগুলো আমি
তোমাদের মধ্যে বণ্টন করব অথবা তোমাকে দিয়ে দেব ৷ রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ্ (সা) যা
বলেছিলেন, বাস্তবে তাই ঘটল ৷ নাজ্জাশী ইনতিকাল করেন তাই হাদিয়াও ফেরত আসে ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার এক সহধ্র্মিণীকে কিছু পরিমাণ মিশৃক দান করলেন, কাপড় জোড়াসহ বাকী
সবটাও উম্মে সালামাকে দিয়ে দিলেন ৷ আল্লাহ্ই অধিক পরিজ্ঞাত ৷