“হে সর্বশেষ নবী ! আপনি সত্য সহকারে প্রেরিত ৷ সকল সঠিক পথ আপনারই প্রদর্শিত ৷
আল্পাহ্ তার সৃষ্টিকুলের অম্ভরে আপনার প্রতি ভালবাসা প্রোথিত করেছেন এবং আপনার নাম
তিনি রেখেছেন মুহাম্মাদ (প্রশংসিত) ৷
এরপর আপনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি যারা পুর্ণ করেছে, তারা এমন এক সেনাদল যাদের প্রতি
আপনি পাঠিয়েছেন দাহ্হাককে ৷
যে এমন সােকষ্ণ্ যার কাছে রয়েছে তীক্ষ্ণ যুদ্ধাস্ত্র ৷ তাকে যখন শক্ররা ঘিরে ফেলে, তখন
সে যেন আপনাকে দেখতে পায় ৷
তখন যে নিজের নিকট-আত্মীয়দের উপর ঝাপিয়ে পড়লো ৷ সে চায় শুধু রাহ্মান আল্লাহ্র
সন্তুষ্টি এবং এরপর আপনার সন্তুষ্টি ৷
আপনার অবগতির জন্যে জানাচ্ছি যে, আমি তাকে দেখেছি রণাংগনে ধুলােবালির মধ্যে সে
চক্কর দিচ্ছে ও ঘুশরিকদের নিধন করছে ৷
কখনও সে দু হাত দিয়ে তাদের কা ধ জাপটে ধ্রছে ৷ কখনও ধারাল তলোয়ার দিয়ে আঘাত
হেনে তাদের দলকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে ৷
এবং তলোয়ারের আঘাতে বীর যােদ্ধার মাথার খুলি উড়িয়ে দিচ্ছে ৷ আমি যা প্রত্যক্ষ করেছি
তা যদি তুমি দেখতে ৷ তা হলে তোমার হৃদয় জুড়িয়ে যেত ৷
তার সম্মুখে বনু সুলায়ম হ্নিৰু অগ্রসরমান ৷ শত্রুর প্রতি তীর বল্লমের আঘাত হানতে হানতে
তারা এগিয়ে যাচ্ছিল ৷
এরা চলছিলো তার পতকােতলে ৷ তারা যেন বনের সিং আক্রমণ করতে উদ্যত ৷
তারা আপন আত্মীয়দের কাছে আত্মীয়তার আশা করে না ৷ তারা চায় আপন প্রতিপালকের
আনুগত্য ও আপনার ভালবাসা ৷
এই হচ্ছে আমাদের রণাংগনের দৃশ্য ৷ এগুলােই আমাদের ঐতিহ্য ৷ আর আমাদের
অভিভাবক ভো আপনাৱই বন্ধু ও প্রভু ৷
আব্বাস ইবন মিরদাস আরও বলেন :
“মাজদাল ও যাতালি’ জনশুন্য হয়ে গেছে ৷ অনুরুপ মাতলা আরীক এবং মাসানি’ সবই
বসতি শুন্য উজাড় ভুমিতে পরিণত হয়েছে ৷
হে জামলু ! আমাদের তো বাড়িঘৱ ছিল ৷ স্মরণ কর, যখন আমাদের জীবন যাপন ছিল খুবই
আনন্দময় ৷ আর কালের প্রবাহ জনপদে ঐক্য গড়ে তোলে ৷
স্মরণ কর, হাবীব গোত্রের কথা ৷ বিচ্ছিন্নতার জন্যে প্রবাস জীবন সেখানকার সৌন্দর্য মলিন
করে দিয়েছে ৷ অতীতের সে সুখের জীবন কি আর কখনও ফিরে আসবে ৷
তুমি যদি কাফিরদের দলভুক্ত হতে চাও, তাহলে তোমাকে কোন তিরস্কার করা হবে না ৷
কিন্তু জেনে ব্লেখ আমি নবীর সাহায্যকারী এবং তার অনুসারী ৷
হল খুযায়মা, মুরারা ও ওয়াসি’ ৷
দাউদ (আ)-এর পদ্ধতিতে তৈরি উৎকৃষ্ট বর্য ৷
উত্তম প্রতিনিধি দ্যা আমাদেরকে তাদের দিকে আহ্বান করেছে, আমি তাদেরকে চিনি ৷ তারা
আমরা তাদের বিরুদ্ধে বনু সৃলায়মের এক হাজার সৈন্যসহ আসলাম ৷ তাদের পরিধানে ছিল
আমরা দুই পাহাড়ের মাঝখানে তার কাছে আনুগতের বায়আত গ্রহণ করি ৷ বন্তুতঃ
পাহাড়দ্বয়ের মাঝে আমরা আল্লা হ্ব হাক্কজী বায়আত করেছিলাম ৷
আমরা আমাদের তরবারি দিয়ে সহসা পিংষ ফেললাম মক্কা নগরী হিদয়েত দানকারীর সাথে
থেকে ৷ আর ধুলাৰালি চভুর্দিকে উৎক্ষিপ্ত ও বিক্ষিপ্ত হফ্লি ৷
এসব চলছিল্ প্রকাশ্য দিবালোকে ৷ আমাদের ঘোড়াগুলোর পিঠ ঘর্মাক্ত হয়ে গিয়েছিল ৷ আর
তাদের দেহাভ্যম্ভরের রক্ত টগবগ করে ফুটহ্নি! ৷
হুনায়নের দিন হাওয়াযিনরা যখন আমাদের দিকে ধোয় আসে, তখন ভয়ে আমাদের
লোকদের অংগ-প্রত্যত্গসমুহ শিথিল হয়ে পড়ে ৷
সে সময় আমরা দাহ্হাকের সাথে ধৈর্যের পরিচয় দিই ৷ ফলে শত্রুর আক্রমণ ও যুদ্ধের
ঘটনাবলী আমাদেরকে বিচলিত করতে পারেনি ৷
রাসুলুল্পাহ্র সামনে আমরা অটল হয়ে থাকি ৷ আর আমাদের মাথার উপরে উজ্জ্বল পতাকা
দ্রুতগামী মেঘের ন্যায় পতপত করে উড়ছিল ৷
পড্ড বেলায় দাহ্হাক ইবন সুফিয়ান যখ্যা রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর তলোয়ার শক্ত হাতে ধরে
এগিয়ে চলজ্যি, তখন মৃত্যু ছিল অতি নিকটবর্তী ৷
এভাবে আমরা বীচালাম আমাদের ভইিদেরকে ভাইদের হাত থেকে ৷ যদি আমরা সুযােগের
সন্ধানী হতাম তা হলে আত্মীয়দের সাথেই থেকে যেতাম ৷
কিন্তু, আল্লাহ্র দ্বীনই তাে মুহাম্মাদ (সা)-এর দীন ৷ এ দ্বীন পেয়েই আমরা সন্তুষ্ট ৷ এতে
আছে সঠিক পথের সন্ধান ও জীবনের বিধি-ৰিধান ৷
বিভ্রান্তির পর তিনি এ দীনের সাহ্যায্য আমাদেরকে সঠিক পথগামী করে দিয়েছেন ৷ আর যে
বিষয়টি আল্লাহ্ নির্ধারণ করে দেন তা কেউ প্রতিহত করতে পারে না ৷
আব্বাস নিম্নের কবিতায় আরও বলেন :
“শেষ পর্যন্ত উথু মুআম্মালের সাথে অবশিষ্ট সম্পভুকুও ছিন্ন হয়ে গেল ৷ পরে সে তার
ইচ্ছাও পরিবর্তন করে ফেলেছে ৷
অথচ সে আল্লাহ্র নামে শপথ করেছিল যে সে সম্পর্ক ছিন্ন করবে না ৷ সে শপথে সততার
পরিচয় দেয়নি এবং ন্ ৎগীকার রক্ষা করেনি ৷
সে তাে বনু খুফাফের লোক ৷ যারা গ্রীষ্মকাল কাটার বাত্নুল আকীকে ৷ আর অবতরণ করে
যাযাবরদের মাঝে ওজঃম কুয়াে ও আরাফায় ৷
উম্মু মুআম্মাল যদিও কাফিরদের অনুসরণ করে থাকে, তবু যে আমার হৃদয়ে সহানুভুতির
আবেগ সৃষ্টি করেছে — দুরে অবস্থান করা সত্বেও ৷
অচিরেই সংবাদ বাহক তাকে জানাবে যে আমরা কুফ্র অস্বীকার করেছি এবং আমাদের
প্রতিপালক ছাড়া কারও সাহায্য চাই না ৷
আমরা আছি পথ প্রদর্শক নবী মুহাম্মাদ (না)-এর সাথে ৷ আমাদের মধ্যে আছে হাজার সৈন্য ৷
অন্য কেউ তা পুরণ করতে পারেনি ৷
সাথে ছিল বনু সুলায়মের সত্যনিষ্ঠ শক্তিশালী যুবকরা ৷ তারা তার আনুগত্য করেছে তার
নির্দেশের এক অক্ষরও অমান্য করেনি ৷
খুফাফ, যাকওয়ান ও আওফ গোত্রের লোকদের মনে হচ্ছিল যে, কঠিন দুর্যোগ তাদেরকে
পর্বুদন্ত করে দিয়েছে ৷ কাল মলিন হয়ে গেছে তাদের অবয়ব ৷
যেন রক্তিম ও শ্বেত বর্ণের পোশাক রয়েছে তাদের পরিধানে ৷ তারা সিংহের ন্যায় ৷ তারা
তাদের ঘাটিতে সমবেত হয়েছে ৷
আমাদের দ্বারা আল্পাহ্র দীন শক্তিশালী হয়েছে দুর্বল হয়নি ৷ তার সংগে যারা চলে আমরা
তাদের সংখ্যা দ্বিগুণ করে দিয়েছি ৷
আমরা যখন মক্কায় আসলাম, তখন আমাদের পতাকা যেন বাজপাখী ৷ যে তার লক্ষ্য স্থির
করার পর ছে৷ মারার জন্যে উদ্যত ৷
তন্কিয়ে দেখলে (তামার ম্ন্থন হবে যখন তা চারপাশে ঘুরতে থাকে যেন বায়ুর শনশন শব্দ
যে দিন প্রভাত বেলা আমরা মুশরিকদের পদতলে দলিত করি, যে দিন আমরা আল্লাহ্র
রাসুলের নির্দেশের সামান্য ব্যতিক্রম করিনি ৷
সে দিন রণক্ষেত্রের মাঝে মানুষ আমাদের হীকডাক ও তলোয়ারের ঝনঝনানী শব্দ ব্যতীত
আর কোন শব্দ শুনতে পাইনি ৷
শুভ্র তরবারির আঘাতে মাথার খুলি তার স্থান থেকে উড়ে যেত এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত বীর
যোদ্ধার ঘাড় ৷
কত যে নিহ্তের লাশ আমরা ফেলে ব্লেখেছি ছিন্ন জ্যি করে ৷ আর কত বিধবা যে তাদের
স্বামীদের জন্যে বিলাপ শুরু করেছে ৷
আমরা চাই আল্লাহ্র সন্তুষ্টি ৷ মানুষের সন্তুষ্টি চাই না ৷ যা প্রকাশ পায় ও যা গোপন থাকে
সবই তাে আল্পাহ্র জন্যে ৷
আব্বাস (বা) আরও বলেন ঘ্র
“কি হলো তোমার চোখের যে যন্ত্রণা ও অফ্লি৷ লেগে আছে, উপরে চোখের পাতা বন্ধ হয়ে
আছে, গলার রাখার মত বিচলিত মনে হয় ৷
দুশ্চিন্তায় এ চোখের নানারুপ পরিবর্তন ঘটে ৷ কখনও চোখের পানি শুকিয়ে যায়, কখনও
পানিতে ভরে ওঠে, আবার কখনও পানি গড়িয়ে পড়ে ৷
চোখ দিয়ে পানির কেটি৷ যখন গড়িয়ে পড়ে তখন দেখলে মনে হয় এ যেন মুক্তার দানা ৷ যে
মালা গ্রেখেছে তার হাতে সুতা ছিড়ে যেয়ে একের পর এক দানাগুলো ঝড়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে
পড়েছে ৷
ওহে দুর-দুরাত্তরের বসতবাটি-তুমি যার ভালবাসা কামনা করছে! এবং যে সেখানে এসেছে
তার ৷ জ্যি যে পথের বাধা হচ্ছে সুদৃঢ় পাথর ও পানা-খন্দ ৷
অতীত যৌবনের কথা ভুলে যাও ৷ সে যৌবন তো পালিয়ে গেছে আর আগমন করেছে
বৃদ্ধকাল ও টাকমাথা ৷
ভুমি বরং স্মরণ কর বিভিন্ন রণক্ষেত্রে বনু সুলায়মের ভ্যাগ-তির্তীক্ষার কথা ৷ বন্তু ত
বনু-সুলায়মের সে ত্যাগের মধ্যে রয়েছে পৌরবকারীদের জান্য গৌরবের অনেক কিছু ৷
তারা সেই সম্প্রদায়, যারা রাহমানের দীনের সাহায্য করেছে এবং রাসুলের দীনের অনুসরণ
করেছে ৷ পক্ষাস্তরে অন্যান্য লোক ছিল পরস্পর দ্বন্দু সংঘর্ষে লিপ্ত ৷ তারা তাদের বাগানের মধ্যে
লাগার না থেজ্বরের চারা এবং তাঃদ্যা আহ্গিনার সামনে গাভী হাষা রবেও ডাকে না ৷ তবে তাদের
বাড়িতে আছে রাজের ন্যায় দ্রুতগামী অশ্ব আর তার চারপাশে আছে বিপুল সংখ্যক উট ও
তালায়ার ৷
তাদের পাশে থাকতে আহ্বান করা হয়েছিল খুফাফ, আওফ ও নিররুপ্ক্ষে দৃর্বলচিত্ত যাকওয়ান
গোত্রকে ৷
তারা মুশরিক বাহিনীর উপর দিবসের পুর্বাহ্নে আঘাত হ,ানে এই মক্কা উপত্যাকায় ৷ তখন
তাদের প্রাণগুলাে দ্রুত বের হয়ে যাচ্ছিল ৷
অবশেষে আমরা যুদ্ধে ক্ষান্ত হই ৷ তাদের লাশগুলাে তখন পড়েছিল উন্মুক্ত উপত্যকায়
কর্তিত খেজুর গাছের ন্যায় ৷
হ্লায়নের যুদ্ধে আমরা অংশ গ্রহণ করি ৷ আমাদের উপস্থিতি যেন দীনের জন্যে শজ্যি কারণ
জ্জি ৷ আর আল্লাহর কাছে তা সঞ্চিত হয়ে আছে ৷
যখন আমরা মৃভ্যুকে মুকাবিলা করি এক সবুজ ও কঠিন স্থানে ৷ তখন অশ্বগুলাে খুরের
আঘাত করছিল যার ফলে ধুলোবালি উর্থক্ষিপ্ত হয়ে উড়ছিল ৷
আমরা যুদ্ধ কৱছিলাম দাহ্হাকের পতাকা তলে ৷ তিনি আমাদের সম্মুখে থেকে এগিয়ে
যাচ্ছিলেন ৷ যেভাবে এগিয়ে চলে সিংহ বনের মধ্যে তার আবাসস্থুলের দিকে ৷
যুদ্ধ করছিলাম এক সংর্কীর্ণ ও কঠিন বিপদ সংকুল ঘাটিতে ৷ যার প্রচণ্ডতায় মনে হচ্ছিল যেন
চন্দ্র-সুর্য অস্তমিত হয়ে যাচ্ছে ৷
আমরা আওতাসের যুদ্ধে ধৈর্য প্রদর্শন করি ৷ আমরা বর্শা নিক্ষেপ করি আল্লাহ্র জন্যে ৷ আমরা
যাকে ইচ্ছা সাহায্য করি ও প্রতিশোধ নেই ৷ অবশেষে সকল সম্প্রদায়ের লোক আপন আপন
বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করে ৷ যদি আল্লাহ্ মালিক সাহায্যকারী না হতেন এবং আমরা যদি যুদ্ধে
অংশ্যাহণকারী না হতাম , তাহলে তারা কখনও ফিরে যেত না ৷
এমন কোন জনগোষ্ঠী তুমি দেখবে না — ৎখ্যায় তারা কম হোক বা বেশী — যাদের মধ্যে
আমাদের কিছু না কিছু নিদর্শন নেই ৷”
আব্বাস ইবন মিরদাস আরও বলেন :
“হে যাত্রী ! যাকে নিয়ে চলছে সবল-স্বাস্থব্রবতী শক্ত ক্ষুর বিশিষ্ট উটনী ৷
তোমার কাছে আমার এটুকু দাবী যে, যখন তুমি নবীর কাছে পৌছবে, তখন মজলিস থেমে
যাওয়ার পর তীকে বলবে ৷
“যারা উষ্টে আরোহণ করে কিংবা যারা মাটির উপর দিয়ে হেটে চলে সে সব মানুষের যখন
হিসেব নেওয়া হয়, তখন আপনিই তাদের মধ্যে সেরা মানব ৷
আপনি আমাদের থেকে যে অংপীকার নিয়েছেন আমরা তা পুরণ করেছি ৷ আর অশ্বারোহী
বাহিনী বীরত্বের সাথে প্রতিহত করে ও হতাহত করে ৷
বুহছা গোত্রের চারদিক থেকে যখন সৈন্যপণ এসে গেল, তখন পাহাড়ের সমস্ত পথ-ঘাট
(হয়ে ফেললো এবং র্কাপিয়ে তুললো ৷
যখন আমরা উষা-লশ্নে মক্কায় পৌছলাম তখন বিপুল অত্রে সজ্জিত এক বিশাল ৷৷াদুলর সাথে
সাক্ষাৎ হল, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন এক নির্তীক বীর ৷ এ দলে ছিল সুলায়ম গোত্রের সকল বীর
যোদ্ধা ৷ তাদের পরিধানে ছিল মজবুত শ্বেত বর্ম ও শিরস্ত্রাণ ৷
রক্তে রঞ্জিত করে ফেললাে বর্শাগুৰ্লাকে যখন তারা বাড়াপিয়ে পড়লো রণক্ষেত্রে ৷ দেখলে
তোমার মনে হবে এ যেন ক্ষ্যপাে সিংহ ৷
গোটা বাহিনী ছিল বিশেষ চিহ্নে চিহ্নিত ৷ তাদের হাতে ছিল তীরের ফলক ও ভীক্ষ্ণ বর্শাষ্ যা
তারা ব্যবহার করতো ৷
হুনায়নে আমাদের সমবেত হওয়ায় হাজার সংখ্যা পুর্ণ হয় ৷ এর দ্বারা রাসুলুল্লাহ্ (সা) বিরাট
সাহায্য লাভ করেন ৷
তারা মু’মিনদ্দের সম্মুখভাগে ছিল নিরাপত্তা বিধায়ক হিসেবে ৷ সে দিন তাদের উপরে এক সুর্য
পরিণত হয় বহু সুর্যে (অস্থের আভায়) ৷
আমরা অতিক্রম করে চললাম, আল্লাহ্ তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে আমাদের হি ন্নাযত করেন ৷
আল্লাহর কসম, তিনি যাকে হিফাযত করেন, সে কখনও ধ্বংস হয় না ৷
আমরা মানাকিবে আমাদের ঘাটি স্থাপন করি ৷ এতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন ৷ কত উত্তম সে
ঘীটি
আওতাস যুদ্ধে প্রাতঃকালেই আমরা প্রচণ্ড আঘাত হান্ান্ন্মাম ৷ সে আঘাতেই ণত্রুরা কাবু হয়ে
গেল এবং তাদের পক্ষ থেকে বলা হল — যুদ্ধ বন্ধ কর, ক্ষা ন্ত হও ৷
হওয়াযিনগণ আমাদের মধ্যকার ভ্রাতৃতু সম্পর্কের দো হাই দিল ৷ বন্তুত দৃশ্চে র শুকিয়ে যাওয়া
ওলান ধরেই হাওয়াযিনরা টানাটানি করছে ৷
অবশেষে আমরা তাদের দলবলকে পরিত্যাগ করলা ৷ ৷ তখন তাদের অবস্থা এমন মনে হল
যেন, তারা এমন একটা কাফিলা যাদেরকে হিংস্র ৰুনাে জা নােয়ার তাড়া করে ফিরছে ৷”
আব্বাস ইবন মিরদাস কবিতায় আরও বলেন :
“এমন কে আছে, যে সকল সম্প্রদায়কে এ সংবাদটা পৌছে দিয়ে যে, মুহাম্মাদ (সা ) আল্লাহ্র
রাসুল ৷ তিনি যে দিকে যেতে চান সে দিকেই সঠিক পথে থাকেন ৷
তিনি তার প্রতিপালককে আহ্বান করেন এবং এক আল্পাহ্র নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করেন ৷
ফলে আল্লাহ্ ভীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুর্ণ করে দেন ও অনুগ্রহ বর্ষণ করেন ৷
আমরা যাত্রা শুরু করলাম এবং পুর্ব নির্ধারিত কুদায়দ নামক স্থানে গিয়ে মুহাম্মাদ (না)-এর
সাথে মিলিত হলাম ৷ তিনি আমাদেরকে নিয়ে আল্লাহ্ৱ নির্দেশক্রমে এক দৃঢ় সংকল্প করেন ৷
ভোর বেলা আমাদেরকে দেখে প্রথমে তারা সন্দেহে পড়ে ৷ পরিশেষে ভোর থাকতেই
তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, এ হচ্ছে একদল যুবক ও প্রচুর লম্বা বর্শার সমারোহ ৷
এরা অম্বের উপর যাওয়ার ৷ আমাদের দেহের উপর বর্ম বাধা ৷ আর একদল জ্যি পদাতিক ৷
সে বিশাল বাহিনী দেখতে জ্যি প্রবল বন্যার ন্যায় ৷
তুমি যদি জিজ্ঞেস কর, তবে বলবো শ্রেষ্ঠ গোত্র হলো সুলায়ম ৷ আর তাদের মধ্যে এমন
কিছু সংখ্যক ণ্লাকও আছে যারা নিজেদেরকে সুলায়ম বলে দাবি করে ৷
আনসারদের মধ্য হতে একটি বাহিনী আছে যারা র্তাকে বাধা দ্যোনি; বরং আনুগত্য করেছে ৷
তিনি যা বলেছেন, তারা তার অবাধ্য হয়নি কখনও ৷
আপনি যদি কওমের মধ্যে খালিদকে নেতা বানিয়ে থাকেন ও অগ্রগামী করে থাকেন ৷ তা
হলে সে কারণেই সে এগিয়ে গিয়েছে একটি বাহিনী নিয়ে ৷ আল্পাহ্ তাকে সঠিক পথ
দেখিয়েছেন ৷ আপনি তার মুল পরিচালক ৷ আপনি শান্তি দিয়ে থাকেন তার দ্বারা ঐসব লোকদের
যারা যুলুমের পথ অবলম্বন করে ৷
আমি শপথ করে যে উত্তম অংগীকার করেছিলাম মুহাম্মাদ (সা)প্এর কাছে, আমি তা পুর্ণ
করেছি এক হাজার সাগাম বিশিষ্ট ঘোড়া দিয়ে ৷
মু’মিনদের নবী নির্দেশ দিলেন : অগ্রসর হও ! বন্তুতঃ আমাদের কাস্ন্প্’ইি ছিল যে, আমরা
অগ্রসর হই ৷
আমরা রাত কাটালাম মসতাদীর কুয়োর কাছে ৷ আমাদের ছিল শ্৷ হ্;কহ্বন ভয়-ভীতি ৷ কিন্তু
ছিল তীব্র অপ্রেহ ও দৃঢ় সংকল্প ৷
আমরা আপনার আনুগত্য করে চললাম ৷ অবশেষে সমুদয় লোক আত্মসমর্পণ করলো এবং
প্রত্যুষে ইয়ালামলামবাসীদের উপর আমরা আক্রমণ করলাম ৷
দিনের বেলা বলিষ্ঠ ও সাদা-কাল গোলাপী রং এর ঘোড়াটি হারিয়ে যায় লোকের ভীড়ে ৷
তারপর তাকে চিহ্নিত না করা পর্যন্ত দলপতি স্বস্তিতে থাকতে পারেননি ৷
আমরা তাদের উপর হামলা করলাম সকালে তাড়িয়ে দেওয়া বন্য হীসের মত ৷ তুমি তাদের
প্ৰত্যেককে দেখবে যে নিজের ভাই থেকে আত্মগােপন করে রেড়াচ্ছে ৷
সকাল থেকে এভাবে আমরা লড়াই করতে থাকি ৷ অবশেষে সন্ধ্যাকালে আমরা হুনায়ন
ত্যাগ করি ৷ তখন দেখা গেল সেখানকার নালাগুলো দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে ৷
ইচ্ছা করলে তুমি দেখতে পাবে সেখানকার সর্বত্রই পড়ে আছে লম্বা লম্বা ঘোড়া, আরও
দেখবে সওয়ারীরা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে এবং ভাংগা বর্শাসমুহ ৷
হাওয়াযিন আমাদের আক্রমণ থেকে তাদের সম্পদ রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল ৷ তারা চাচ্ছিল
যে, আমরা ব্যর্থ হই এবং বঞ্চিত হই ৷
ইমাম মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক আব্বাস ইবন মিরদাস সুলামীর এসব কাসীদা তার কিভাবে
উল্লেখ করেছেন ৷ আলোচনা দীর্ঘ হওয়ার ও বিরক্তি উদ্রেক হওয়ার আশংকায় আরও কিছু কাসীদা
উল্লেখ করা থেকে আমি বিরত থাকলাম ৷ ইবন মিরদাস ছাড়া অন্যের কবিতাও তিনি উল্লেখ
করেছেন ৷ প্রয়োজন পরিমাণ আমরা এখানে উল্লেখ করেছি ৷
তায়েফ যুদ্ধ
উরওয়া ও মুসা ইবন উকবা যুহরী থেকে বর্ণনা করেন : অষ্টম হিজরীর শাওয়াল মাসে
রাসুলুল্লাহ্ (সা) হুনায়নের যুদ্ধ ও তায়েফ অবরোধ করেন ৷ মুহাম্মাদ ইবন ইসহাক বলেন :
ছাকীফের পলাতক সৈন্যরা তায়েফে এসে শহরের প্রবেশ দ্বদ্বরগুলাে বন্ধ করে দেয় এবং যুদ্ধের
জন্যে বিভিন্ন রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করে ৷ উরওয়া ইবন মাসউদ এবং গায়লান ইবন সালামা হুনায়ন
যুদ্ধে ও তায়েফ অবরোধে উপস্থিত ছিলেন না ৷ তারা তখন জারাশ নগরীতে অবস্থান করছিলেন
এবং দাবৃবাবাত ৷ মানজানীক ও দাবৃবুর ( ;ণ্প্রুণ্ন্ প্রু বিশেষ)
তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) হুনড়ায়নের যুদ্ধ শেষে তায়েফ অভিমুখে যাত্রা করেন
এ প্রসংগে কাব ইবন মালিক কবিতায় বলেন :
“আমরা তিহামা ও খায়বর থেকে সকল সন্দেহের অবসান ঘটিয়ে আমাদের তলোয়ারগুলাে
সংগ্রহ করে একত্রিত করলাম ৷
আমরা তলোয়ারগুলোকে এখতিয়ার দিই ৷ যদি সেগুলো কথা বলতে সক্ষম হতো, তবে
অবশ্যই এ কথা বলতে৷ যে , ওরা এখন দাওস ছার্কীফ গোত্রকে নিধন করবে ৷
আমাদের মধ্য থেকে হাজার হাজার সৈন্য যদি তোমাদের বাড়ির আত্গিনায় না দেখ তবে
বলছি আমি কোন মায়ের সন্তান নই ৷
বাত্নে ওয়াংজ্জা ঘরসমুহের ছাদ আমরা খুলে ফেলবাে ৷ ফলে তোমাদের বাড়িগুলাে হয়ে
যাবে মানবশুন্য ৷
তোমাদের কাছে দ্রুত পৌছে যাবে আমাদের অশ্বারোহী দল ৷ তার তাদের পশ্চাতে ছেড়ে
আসবে এক বিশাল বাহিনী ৷
তারা যখন অবতরণ করবে তোমাদের আত্গিনায় ৷ তখন তোমরা শুনতে পাবে সেখানে উট
বসানাের শোরগােল ৷
তাদের হাতে রয়েছে ভীক্ষ্ণ ধারাল তরবারি ৷ সে তরবারির আঘাতপ্রাপ্ত আহত ব্যক্তিরা সাক্ষাৎ
করবে মৃত্যুর সাথে , সেগুলো এমন স্বচ্ছ তল্যেয়ার যা তৈরী করেছে ভারতের কর্মকাররা র্খাটি
ধাতব দিয়ে যার সাথে কোন তলোয়ারের তুলনা হয় না ৷
বীর যােদ্ধাদের বসার গদিগুল্যেকে যুদ্ধের দিনে মনে হবে জাফরান রং এ রণ্ডিভে ৷
তাদের রক্ষার জন্যে কি কেউ চেষ্টা করছে ? মানুষের মধ্যে কেউ কি তাদেরকে সৎ উপদেশ
দেওয়ার মত নেই ? যে আমাদের সম্পর্কে ভালরুপে জানে ৷ যে ব্যক্তি তাদেরকে এ সংবাদ দিবে
যে, আমরা সমবেত করেছি অভিজাত অশ্বারোহী ও তাজি ঘোড়া ৷
আমরা তাদের কাছে এসেছি এক বিশাল বাহিনী নিয়ে যারা তাদের দুর্গের প্রাচীর অবরোধ
করবে সারিবদ্ধ হয়ে ৷
তাদের সেনাপতি স্বয়ং নবী করীম (সা) ৷ তিনি অতি দৃঢ়পদ ৷ পবিত্র-চিত্ত ৷ ধৈর্যশীল ও
সংযমী ৷
সঠিক সিদ্ধাম্ভদাতা, প্রজ্ঞাশীল, জ্ঞানী ও সহিষ্ণু ৷ চঞ্চল ও আরেগপ্রবণ নন ৷
আমরা আনুগত্য করি আমাদের নবীর ৷ আমরা আনুগত্য করি এমন প্রতিপালকের যিনি অতি
দয়ালু ও আমাদের প্রতি করুণাময় ৷
তোমরা যদি আমাদের কাছে শাস্তির প্রস্তাব দাও, তবে আমরা তা গ্রহণ করবো ৷ আর
তোমাদেরকে বানাবো আমাদের জন্যে শক্তি ও শাস্তির বাহক ৷
আর যদি তোমরা অস্বীকার কর, তা হলে আমরা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো ধৈর্যের
সাথে আমাদের তৎপরতা কখনও দ্বিধাযুক্ত ও দুর্বল হয়ে না ৷
আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব যতক্ষণ বেচে থাকবাে ; অথবা তোমরা ফিরে আসবে ইসলামের
দিকে আনুগত্যের সাথে ও ভদ্রভাবে ৷
আমরা যুদ্ধ করবো, কারও কোন পরোয়া করবো না, যার সাশেইিচু মুকাবিলা হোক না কেন ৷
স্থায়ী বাসিন্দা ও অস্থায়ী বাসিন্দা সকলকেই আমরা সমানে ধ্বংস করবো ৷
কত গোত্রই তো আমাদের বিরুদ্ধে এলো — যাদের মধ্যে অনেকেই ছিল দৃঢ় সংকল্পকারী ৷
আরও এসেজ্যি তাদের মিত্ররা ৷
তারা এসেছিল আমাদের উদ্দেশ্যে ৷ তারা ধারণা করেছিল তাদের সমকক্ষ কেউ নেই ৷
আমরা তাদের নাক-কান কেটে দিয়েছিলাম ৷
কেটেছিলাম ভারতীয় হালকা শানিত তরবারি দ্বারা ৷ এর সাহায্যে আমরা তাদেরকে ঘাড় ধরে
তাড়িয়ে নিয়ে আমি-
আল্লাহর নির্দেশ পালন ও ইসলামের দিকে যাতে দীন প্রতিষ্ঠিত হয় — ভারসাম্যপুর্ণ ও
একনিষ্ঠভাবে ৷
আর যাতে লোকে ভ্যুল যায় লাত , উঘৃযা ও উদকে এবং আমরা ছিনিয়ে নিব ওদের গলার হার
ও কানের দৃল ৷
এর ফলে মানুষ স্থিতি ফিরে পায় ও শান্তি লাভ করে ৷ আর যারা বিরত হবে না তারা হবে
অপমানিত ৷”
ইবন ইসহাক বলেন : কিনানা ইবন আবদ ইয়ালীল ইবন আমর ইবন উমায়র ছাকাফী উক্ত
কবিতার জবাব দেয় ৷
আমি বলি, এ ঘটনার পর কিনানা ইবন আবদ ইয়ালীল ছাকীফ গোত্রের একটি প্রতিনিধি
দলের সাথে এসে রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর নিকট একই সাথে ইসলাম গ্রহণ করে ৷ মুসা ইবন উকবা,
আবু ইসহাক, আবু উমার ইবন আবদুল বাবু, ইবনুল আহীর প্রমুখ এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন ৷
বিৎ মাদায়িনী বলেছেন যে , কিনানা ইসলাম গ্রহণ করেনি; বরং সে রােমে চলে যায় এবং খৃক্ট ধর্ম
গ্রহণ করে তার মৃত্যুও সেখানে হয় !