বললেন, তুমি তার দিকে এগিয়ে যাও ৷ত তারপর তিনি দু আ করলেন “হে আল্লাহ এ কাজে
তাকে সাহায্য কর ৷” তাদের একজন অপরজনের নিকটবর্তী হলে এক প্রকাণ্ড প্র৷ ৷চীন বৃক্ষ উভয়ের
মধ্যে অতরায় হয়ে দাড়ায় (যে প্রাচীন বৃক্ষ থেকে অনবরত আটা নিগর্ত হতো ৷ তাদের একজন
অপরজনের থেকে এ বৃক্ষের মাধ্যমে, আত্মরক্ষা করছিলেন ৷ আর অপরজন নিজ তরবারি দ্বারা
বৃক্ষের আড়াল করা অং শে আঘাত করছিলেন ৷ শেষ পর্যন্ত উভয়ে মুখোমুখি হলেন ৷ এভাবে
বৃক্ষটা৩ তাদের উভয়ের মধ্যে দণ্ডায়মান একজন লোকের মত হয়ে যায় ৷ তখন মারহাব মুহাম্মাদ
ইবন মাসলামার উপর তরবারি দ্বারা আঘাত হানে আর তিনি৷ ঢ ৷ল দ্বারা এ আঘাত ঠেকান ৷ তিনি
তাদের উপর থেকে তরবারি টেনে বের করে নিয়ে ত ৷র ৷উপর পাল্টা আঘাত হানেন এবং এভাবে
মারহাবকে হত্যা করেন ৷ ইমাম আহমদ (র) ইয়াকুব ইবন ইব্রাহীম সুত্রে তিনি তার পিতা
থেকে আর তিনি ইবন ইসহাক থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেন ৷ ইবন ইসহাক (র) বলেন, কারো
কারো ধারণা, মুহাম্মাদ ইবন মাসলামা মারহাবকে হত্যা করার সময় নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি
করেছিলেন ৷
খায়বর জানে যে, আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আর মিষ্ট , যখন আমার অভিপ্রায় হয় ৷ আবার আমি
হলাহলও ৷ অনুরুপ জাবির প্রমুখ থেকে ওয়াকিদী বর্ণনা করেন যে, মুহাম্মাদ ইবন মাসলামাই ছিল
মারহাবের হত্যাকারী ৷ ওয়াকিদী (র) আরো উল্লেখ করেন যে, মুহাম্মাদ ইবন মাসলামা
মারহাবের পদদ্বয় কর্তন করলে সে বলে আমার জীবন লীলাই সাঙ্গ করে দাও ৷ তখন তিনি
বলেন, না (এভাবে সহজে তোমাকে মরতে দেওয়া হবে না, বরং) মাহমুদ ইবন মাসলামা
যেভাবে মৃত্যুর স্বাদ উপভোগ করেছে, তােমাকেও সেভাবে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে ৷
এরপর হযরত আলী (বা) তার নিকট দিয়ে অতিক্রমকালে তিনি মারহাবের মস্তক কর্তন করেন ৷
তারপর তারা উভয়ে মারহাবের অস্ত্র-শস্ত্র সম্পর্কে বিবাদে প্রবৃত্ত হন ৷ তারা এ বিরোধ নিয়ে
রাসুল (সা) এর দরবারে উপস্থিত হলে রাসুল করীম (সা) মুহাম্মাদ ইবন মাসলামাকে মারহাবের
তরবারি শিরস্ত্রাণ, বর্ম ও বশা দান করেন ৷ ওয়াকিদী (র) বলেন, তার তরবারির উপর এ কবিতাটি
লেখা ছিল০ ং
এটা হল মারহাবের তলােয়ার, যে ব্যক্তি এর স্বাদ গ্রহণ করবে, সে বিনাশ হবে ৷
ইবন ইসহাক (র) বলেন, মারহাবের মৃত্যুর পর তার ভাই ইয়াসির বেরিয়ে এসে বলে :
আমার সাথে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে পারে এমন কে আছে ? হিশাম ইবন উরওয়৷ ধারণা করেন
যে, যুবায়র (রা)ত ৷র সম্মুখে উপস্থিত হলে তার মা অ ৷বদৃল মুত্তালিব-এর কন্যা সাফিয়্যা বললেন ং
ইয়৷ রাসুলাল্লাহ্ ! আমার সন্তান তো মারা পড়বে ৷ রাসুল করীম (সা) বললেন, না, বরং তোমার
পুত্র তাকে হত্যা করবে ইনশাআল্লাহ্৷ তারপর উভয়ে লড়াইয়ে প্রবৃত্ত হলে যুবায়র (রা) তাকে বধ
করেন ৷ ইবন ইসহাক (র) বলেন, এরপর যুবায়রকে যখন বলা হতো, আল্লাহ্র শপথ, সেদিন
তোমার তরবারি ছিল খুব ধারালো ৷ তখন তিনি বলতেন : আল্লাহ্র কসম , তা ধারালো ছিল না,
বরং তরবারির উব্রে চাপে আমি তাকে বধ করেছি ৷
রাসুল করীম (সা)-এর আযাদকৃত গোলাম আবু রাফে সুত্রে ইবন ইসহাক এর বরাতে
ইউনুস বর্ণনা করেন যে, আবুরাফে বলেন :
“রাসুল করীম (সা) আলী (রা) কে তার পতাকা দিয়ে যখন খায়বরে প্রেরণ করেন তখন তার
সঙ্গে আমরাও ছিলাম ৷ তিনি দুর্গের নিকটবর্তী হলে দুর্গের বাসিন্দারা বেরিয়ে তার কাছে আসে ৷
তিনি একা তাদের সঙ্গে লড়াই করেন ৷ জনৈক য়াহ্রদী তার প্ৰতি আঘাত হানলে তিনি তার হাত
থেকে ঢাল ছুড়ে ফেলে দিয়ে দুর্গের দরজাকে ঢাল বানিয়ে নেন আর তা দ্বারা প্রতিরোধ করেন ৷
দুর্গ জয় করা পর্যন্ত এ দরজা তার হাতে ছিল ৷ দুর্গের দরজা হাতে নিয়ে লড়াই করতে করতে
আল্লাহ তাকে বিজয় দান করেন ৷ তারপর তিনি হাত থেকে দরজাটি ছুড়ে ফেলে দেন ৷ আবু
রাফে বলেন, আমরা ৮জন লোক মিলে (যাদের মধ্যে আমি ছিলাম ৮ম ব্যক্তি) দরজাটা এক স্থান
থেকে অন্য স্থানে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েও সক্ষম হইনি ৷ অবশ্য এর সনদে একজন অজ্ঞাতনামা
রাবী রয়েছেন ৷ সনদটি বিচ্ছিন্নও বটে ৷
অবশ্য হাফিয রায়হাকী (র)ও হাকিম (র) মুত্তলিব ইবন যিয়াদ শ্জাবিয় সুত্রে বর্ণনা করেনঃ
জাবির (রা) বলেন : খায়বরের দিন আলী (রা), একটা দরজা উত্তোলন করেন এবং
মুসলমানগণ তার উপর আরোহণ করে খড়ায়বর জয় করেন ৷ পরবর্তীতে : : জন লোক অনেক
চেষ্টা করেও দরজাটি উত্তোলন করতে পারেননি ৷ এ বর্ণনাতেও দুর্বলতা আছে ৷ এ ছাড়া এক দুর্বল
বর্ণনায় হযরত জাবির থেকে বর্ণিত আছে যে, ৭০ জন লোক চেষ্টা করেও দরজাটি (যথাস্থানে)
পুনঃস্থাপন করতে ব্যর্থ হন ৷ ইমাম বুখারী (র) মাকী ইবন ইব্রাহীম ইবন আবুউবায়দ
সুত্রে বর্ণনা করেন :
যে তিনি বলেছেন, সালামার পায়ের গােছায় আঘাতের চিহ্ন দেখে আমি জিজ্ঞাসা করি; আবু
মুসলিম ! এটা কিসের চিহ্ন ? জবাবে তিনি বললেন : এটা খড়ায়বরের দিন আঘাতের চিহ্ন ৷
লোকেরা বলাবলি করে যে, সালামা বুঝি মারাই পেল ৷ তখন আমি নবী করীম (সা)-এর খিদমতে
উপস্থিত হলে তিনি (আঘাতের স্থানে) তিনবার কু দিলে অদ্যাবধি আমি আর যে স্থানে ব্যথা
অনুভব করিনি ৷ ইমাম বুখারী (র) আবদুল্লাহ ইবন মাসলামা সহল সুত্রে বর্ণনা করেন :
যে , কোন এক যুদ্ধে নবী করীম (সা) এবং মুশরিকরা সম্মুখ যুদ্ধে প্রবৃত্ত হন ৷ উভয় পক্ষে
তুমুল যুদ্ধ হয় ৷ উভয় পক্ষ নিজ নিজ সেনাদলের দিকে ধাবিত হয় ৷ আর মুসলমানদের মধ্যে
এমন একজন লোক ছিল, যে কোন মুশরিককে একা পেলে পেছন থেকে তরবারী দ্বারা আঘাত না
করে ছাড়তে৷ না ৷ কোন একজন বললাে , ইয়া রাসুলাল্লাহ্! অমুক ব্যক্তি এমন কাজ করেছে যা
ইতিপুর্বে আমাদের মধ্যে আর কেউ করেনি? রাসুলুল্লাহ্ (সা) বললেন : সে জাহান্নামী ৷ তখন
লোকেরা বললাে, সে যদি জাহান্নড়ামী হয় তবে আমাদের মধ্যে আর কে জান্নড়াতী হবে ? তখন
সকলের মধ্য থেকে একজন বললাে : আমি তার পেছনে লেগে থাকবাে; সে দ্রুত গমন করুক
আর ধীরে গতিতে, (সবাবস্থায়) আমি তার সঙ্গে থাকবাে ৷ আহত হয়ে লোকটি দ্রুত মৃত্যু কামনা
করল ৷ সে তরবারির হড়াতল মাটিতে স্থাপন করে এবং ধারালো অংশ বুকের সঙ্গে চেপে ধরে
সজােরে চাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে ৷ তখন পেছনে লেগে থাকা লোকটি রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর
নিকট এসে বললাে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহর রাসুল! তিনি জিজ্ঞেস করলেন :
ব্যাপার কী ? লোকটি রাসুল কবীম (সা) কে সকল কথা খুলে বললে তিনি বললেন : একজন
লোক মানুষের দৃষ্টিতে বাহ্যত৪ জান্নাতী ব্যক্তির ন্যায় আমল করে; কিন্তু আসলে সে জাহান্নামী;
পক্ষম্ভেরে অপর ব্যক্তি বাহ্য দৃষ্টিতে জাহান্নামীর মতো আমল করে; কিন্তু পরিণামে সে হবে
জান্নাতী ৷ ইমাম বুখারী (র) কুতায়বা সহল সুত্রেও হাদীছটি অনুরুপ বর্ণনা করেছেন ৷ ইমাম বুখারী
আবুল ইয়ামড়ান আবুহ্বায়রা সুত্রে বর্ণনা করেন বলে :
“খায়বর (যুদ্ধে) আমরা উপস্থিত ছিলাম ৷ রাসুল কবীম (সা) ইসলামের দাবীদার তার জনৈক
সফর সঙ্গী সম্পর্কে বললেন : এ ব্যক্তি জাহান্নড়ামী ৷ যুদ্ধ ক্ষেত্রে উপস্থিত হয়ে লোকটি প্রচণ্ড লড়াই
করে ৷ লোকটি অনেক আঘাত পেল ৷ (রাসুল কবীম (সা) এর উক্তি সম্পর্কে) অনেকের সন্দিহড়ান
হওয়ার উপক্রম হল ৷ লোকটি আঘাতের প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলো ৷ সে তুণীরে হাত দিয়ে তা
থেকে কয়েকটি তীর বের করলো আর সেগুলোর দ্বারা নিজের জীবন নস্পে করলো ৷ ব্যাপারটা
অনেকের কাছে গুরুতর ঠেকলাে ৷ তারা রাসুল কবীম (সা) কে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ্! আল্লাহ্
তাআলা আপনার কথা সত্যে পরিণত করেছেন ৷ সেতে৷ নিজেকে যবাই করে আত্মহত্যা করছে ৷
তখন রাসুল কবীম (সা) বললেন : হে অমুক ৷ উঠে দাড়াও এবং ঘোষণা দাও যে, ঘুমিন ব্যক্তি
ব্যতীত অন্য কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না ৷ আর আল্লাহ তাআলা ফাসিক পাপাচারী ব্যক্তি
দ্বারাও দীনের সাহায্য করেন ৷ মুসা ইবন উকবা যুহ্রী সুত্রে জনৈক কৃষ্ণাঙ্গ দাসের কাহিনী উল্লেখ
করেছেন ৷ যাকে আল্লাহ্ একই সঙ্গে ঈমান এবং শাহাদতের দৌলতে ধন্য করেছেন ৷ অনুরুপ-
ভাবে ইরনু লাহিআ আবুল আসওয়াদ ও উরওয়া সুত্রেও এ কাহিনীটি বর্ণনা করেন : তা নিম্নরুপ :
“খায়বরবাসীদের নিকট র্জ্যনক কাফ্রী ক্রীতদাস এলো, যে ছিল তার মালিকের ছাপপালের
রাখাল ৷ সে যখন দেখতে পেলো যে, খায়বরবাসীরা অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে, তখন সে তাদেরকে
জিজ্ঞাসা করে তোমরা কী চড়াও ? তারা বললো : আমরা এ ব্যক্তির সঙ্গে লড়াই করবো, যে
নিজেকে নবী বলে দাবী করছে ৷ এতে তার মনে নবীর কথা জাগলো ৷ তাই সে বকবী নিয়ে রাসুল
কবীম (সা) এর সমীপে হাযির হলো ৷ জিজ্ঞেস করলো, আপনি কিসের দিকে আহ্বান জানান ?
তিনি বললেন : আমি তোমাকে ইসলামের দিকে আহ্বান জানাই ৷ আমি এজন্য আহ্বান জানাই
যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে অল্লোহ্ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ্ নেই আর আমি আল্লাহ্র রাসুল ৷ আর
তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করবে না ৷ রাবী বলেন, তখন গোলাম বললো, আমি যদি
একথার সাক্ষ্য দেই এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনি তাহলে আমি কি পাবো ? রাসুল কবীম (সা)
বললেন, একথার অৰিচল থেকে মৃত্যুবরণ করতে পারলে তুমি জড়ান্নাত লাভ করবে ৷ তখন
গোলামটি ঈমান এনে বললো : ইয়া রাসুলাল্লাহ্ ৷ এসব বকরীতেড়া আমার নিকট আমানত ৷ তখন
রাসুল কবীম (সা) বললেন : এসব বকরীকে কংকর নিক্ষেপে আমাদের সৈন্যদলের আওতা
থেকে তাড়িয়ে দাও ৷ আল্লাহ্ তাআলড়া তোমার আমানত যথাস্থানে পৌছাবেন ৷ সে তাই করলো
আর বকরীগুলো তার মালিকের নিকট ফিরে পেল ৷ তখন য়াহ্রদী আচ করতে পারলো যে, তার
গোলামটি ইসলাম গ্রহণ করেছে ৷ তখন রাসুল কবীম (সা) দাড়িয়ে লোকদেরকে উপদেশ
দিলেন ৷ এরপর রাবী আলী (রা)-কে পতাকা দেন ৷ য়াহুদীদের দুর্গের নিকট হযরত আলী
(রা)-এর গমন এবং মারহাবকে হত্যড়া করার কথাও উল্লেখ করলেন ৷ সাথে সাথে আলীর সঙ্গে
মিলে সেই কৃষ্ণাঙ্গ দাসের লড়াই করা এবং তার মৃতদেহ মুসলিম সেনা ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া
এসবই তিনি উল্লেখ করলেন ৷ লোকজনের ধারণা, রাসুল করীম (সা) সেনা ছাউনিতে উপস্থিত হন
এবং সাহাবীগণকে সেখানে প্রত ত্যক্ষ করেন ৷ তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তা আলা এ দাসকে
সম্মানিত করেছেন আর তাকে মঙ্গল ও কল্যাণের পথে পরিচালিত তকরেছেন ৷ সত্যিক৷ ৷র অর্থে
ইসলাম তার অন্তরে স্থান করে নিয়েছিল আর আমি তার শিয়রে দু’জন আয়তলোচনা হুর দেখতে
পেয়েছি ৷ হাফিয বায়হাকী (র) ইবন ওয়াহাব জাবির ইবন আবদুল্লাহ সুত্রে বর্ণনা করেন
যে, খায়বর যুদ্ধে আমরা রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর সঙ্গে ছিলাম ৷ সৈন্যদের একটি ছোট দল রওয়ানা
হল ৷ তারা একজন লোককে পাকড়াও করলো, যার সঙ্গে বকরী ছিল ৷ লোকটি বকরীগুলাে
চরাচ্ছিল ৷ এভাবে কৃষ্ণাঙ্গ দাসের কাহিনীর মতে৷ কাহিনী উল্লেখ করে তাতে শেষে বললেন : সে
শহীদ হিসাবে মৃত্যু বরণ করে; অথচ সে আল্লাহকে একটা সিজদাও করেনি ৷
বায়হাকী (রা) মুহাম্মাদ ইবন মুহাম্মাদ — আনাস (বা) থেকে বংনাি করেন : জনৈক ব্যক্তি
রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে আরয করল : ইয়া রাসুলাল্লাহ্ (সা) ! আমি একজন
কৃষ্ণকায় কদাকার ব্যক্তি ৷ আমার কোন অর্থ-সম্পদ নেই ৷ আমি যদি এদের সঙ্গে লড়াই করতে
করতে মারা যাই তবে কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো ? রাসুলুল্ল৷ হ্ (সা) বললেন, হা, তুমি
জান্নাতে যাবে ৷ লোকটি এগিয়ে এসে লড়াই করতে করতে জীবন দিল ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার
লাশের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেনং আল্লাহ্৫৩ তোমার ঘুখমণ্ডল উজ্জ্বল করুন, তোমার আত্মাকে
পবিত্র করভ্রুন ৷ আ তোমার সম্পদ বর্ধিত করুন এবং বললেনং আমি তার দু জন আয়তলোচনা
হুর ত্রীকে তাকে নিয়ে বিবাদ করতে দেখেছি,৩ ৷ ৷রা তার দেহ আর জুব্বার মধ্যে কে আগে প্রবেশ
করবে এ ব্যাপারে ঝগড়া করছিল ৷ বায়হাকী (র) ইবন জুরায়জ — ইবনুল হাদ সুত্রে বর্ণনা
করেন :
জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে ঈমান আনলে৷ , আনুগত্য প্রকাশ
করলো ৷ সে বললো, আমি আপনার সঙ্গে হিজরত করবো ৷ তাই রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার ব্যাপারে
কোনও একজন সাহাবীকে ওসীয়ত করলেন ৷ খায়বর যুদ্ধ সংঘটিত হলে রাসুল করীম (সা)
গনীমতের মাল লাভ করেন এবং সে মাল বণ্টনকালে বণ্টনে তিনি তাকে অং শীদ৷ ৷র করলেন ৷
তাকে যে অংশ তিনি দিয়েছিলেন জনৈক সঙ্গী সাহাবীগণ ৷তা তার নিকট পৌছিয়ে দেয় ৷ লোকটি
বকরী চরাত ৷ লোকটি উপস্থিত হলে তার বন্ধু বা তাকে তার অংশ পৌছিয়ে দিল ৷ সে বললোং :
এটা কি? জবাবে তারা জান ৷,লাে র ৷সুলুল্লাহ্ (সা ) তোমাকে এ অংশ দান করেছেন ৷ তখন লোকটি
রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর নিকট উপস্থিত হয়েত ৷র গনীমতে অংশ লাভের কথা নিশ্চিত করে বললো০ ং
আমি এ মাসের জন্য আপনার আনুগত্য নিশ্চিত হয়ে করিনি; বরং আমিতে৷ আপনার আনুগত্য
স্বীকার করেছি এজন্য যে, আমি এ দিকে তীর নিক্ষেপ করবো একথা বলে সে তীর দ্বারা গলার
দিকে ইশারা করে আর এভাবে মৃত্যু বরণ করে আমি জান্নাতে প্রবেশ করবো ৷ তখন রাসুলুল্লাহ্
(সা) বললেন, তোমার নিয়াতের যদি সত্য হয়ে থাকে তবে আল্লাহ তা পুরণ করবেন ৷ এরপর
দৃশমনের সঙ্গে লড়াই করার জন্য সকলেই রওয়ানা হলেন ৷ (লোকটিও তাদের সঙ্গে ছিল এবং
লড়াই এ জীবন দান করলো) ৷ লড়াই শেষে লোকটির মৃতদেহ রাসুলুল্লাহ্ (না)-এর সমীপে
উপস্থিত করা হলো ৷ (দেখা গেল) সে যেখানে ইশার৷ করেছিল, সেখানেই ভীরের আঘাত
লেগেছে ৷ তখন নবী বত্মীম (সা) বললেন : এ যে ব্যক্তি ? লোকেরা বললো , ত্মী হা ৷ তখন নবী
করীম (সা) বললেন, যে আল্লাহর সঙ্গে সত্য অঙ্গীকার করেছিল, আল্লাহ তার অঙ্গীকারকে সত্যে
পরিণত করেছেন ৷ লোকটিকে নবী করীম (সা) তার নিজের জুব্বা দ্বারা কাফন পরান এবং তার
লাশ সম্মুখে রেখে জানযাের নামায পড়ান এবং (সালাত শেষে রাসুলুল্লাহ্ (সা)-এর মুখ থেকে) এ
দুআ স্পষ্ট শোনা গেল :
হে আল্লাহ! লোকটি তোমারই রান্দা ৷ তোমার রাস্তায় হিজরত করে বের হয়েছে ৷ শহীদ
হিসাবে সে মৃত্যুবরণ করেছে, আমি এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছি ৷
মুত্আ বিবাহ প্রভৃতি নিষিদ্ধ হওয়া
ইবন ইসহাক (র) বলেন : রাসুলুল্লাহ্ (সা) তার কাছে নিয়ে আসা গনীমতের মাল পর্যায়ক্রমে
গ্রহণ করতেন আর এক এক করে দুর্গ জয় করবেন ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) সর্বপ্রথম তাদের যে দুর্পটি
জয় করেন তা ছিল ’নাএম’ দুর্গ ৷ এ দুর্গের নিকটেই হত্যা করা হয় মাহমুদ ইবন মাসলামাহকে ৷
তাকে হত্যা করা হয় উপর থেকে মাতা নিক্ষেপ করে ৷ এরপর জয় করা হয় কামুস দুর্গ এটি ছিল
বনু আবুল হুকায়ক-এর দুর্গ ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) খায়বরের য়াহুদীদের মধ্য থেকে অনেককে বন্দী
করেন ৷ এসব বন্দীদের মধ্যে সাফিয়্যা বিনৃত হুয়াই ইবন আখতাবও ছিলেন ৷ ইনি ছিলেন কিনানা
ইবন রবী ইবন আবুল হুকায়কের শ্রী ৷ সাফিয়্যার দু’জন চাচাতো বোনও ছিলেন বন্দীদের মধ্যে ৷
রাসুলুল্লাহ্ (সা) হযরত সাফিয়্যাকে নিজের জন্য পসন্দ করেন ৷ দিহ্ইয়া ইবন খলীফা আল-কালবী
(রা) হযরত সাফিয়্যার জন্য রাসুলুল্লাহ্ (সা) এর দরবারে আবেদন জানিয়ে ছিলেন ৷ তিনি (সা)
হযরত সাফিয়্যাকে নিজের জন্য পসন্দ করেন আর দিহ্ইয়াকে দেন সাফিয়্যার দুই চাচাতো বোন ৷
ইবন ইসহাক (র) বলেন, খায়বরের প্রচুর বন্দী মুসলমানদের হস্তগত হয় এবং লোকেরা সেদিন
গাধার গোশৃত ভক্ষণ করে ৷ রাসুলুল্লাহ্ (সা) পাধার গোশৃত ভক্ষণ করতে তাদেরকে নিষেধ করার
কথা ইবন ইসহাক উল্লেখ করেছেন ৷ ইমাম ৰুখারী (র) গাধার গোস্ত ভক্ষণ করা নিষেধ-এ
পর্যায়ের হাদীছগুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এবং অতি উত্তম সনদে সংকলন করেন ৷ প্রাচীন
যুগের ও পরবর্তীকালের অধিকাংশ আলিমের মতে গড়াধার গোশত ভক্ষণ করা হারাম ৷ চার ইমাম
এরও এ মত ৷ তবে হযরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (বা) প্রমুখ কিছু সংখ্যক আলিম পাধার
গোশত খাওয়া বৈধ বলেছেন ৷ যে সব হাদীছে গধোর গোশত হারাম বলা হয়েছে, তারা এর বিভিন্ন
জবাবও দিয়েছেন ৷ যথা ভারবহনের কাজে পাধা ব্যবহার করা হয়, তখন পর্যন্ত থুমুস তথা এক-
পঞ্চমাৎশ বের করা হয়নি, অথবা পাধা নাপাক বস্তু আহার করে ৷ বিশুদ্ধ কথা এই যে, পাধা
মুলতই হারাম ৷ বিশুদ্ধ হাদীছে বণিতি আছে যে, রাসুলুল্পাহ্ (সা) এর ঘোষক ঘোষণা করেন :
আল্লাহ্ এবং তার রাসুল (সা) তোমাদেরকে গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন ৷ কারণ,
তা নাপাক ৷ তাই তোমরা গাধার গোশত ফেলে দাও, (আর এ নির্দেশ জারী করার সময় গাধার
গোশত) ডেকচীতে টগবগ করে ফুটছিল ৷ কিতাবুল আহকাম-এ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
করা হয়েছে ৷ ইবন ইসহাক (ব) সালামা ইবন কারকারা জাবির ইবন আবদৃল্লাহ্ সুত্রে
বর্ণনা করেন, আর জাবির খায়বর যুদ্ধে শরীক ছিলেন না :
রাসুল করীম (সা) যখন সােকজনকে পাধার গোশত যেতে ধারণ করেন, যে সময় তিনি
তাদেরকে ঘোড়ার গোশত খাওয়ার অনুমতি দান করেন ৷ বৃখারী ও মুসলিম শরীফে এ হাদীছটি
হাম্মাদ ইবন যায়দ জাবির (রা) সুত্রে বর্ণিত হাদীছে এর সমর্থন পাওয়া যায় ৷ বৃখারী
শরীফের ভাষায় বর্ণিত হয়েছে :
—
খায়বরের দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন ৷ তবে তিনি ঘোড়ার
গোশত খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন ৷ ইবন ইসহাক (র) আবদুল্লাহ্ ইবন আবু নাজীহ মাকহ্রল সুত্রে
বর্ণনা করেন :
নবী করীম (সা) সেদিন (খায়বরের দিন) চারটি বিষয় নিষেধ করেছেন : (১) যুদ্ধবন্দী
অন্তঃসত্ত্ব৷ নারীর সঙ্গে সঙ্গম (২) গাধার গোশত খাওয়া (৩) নখর বিশিষ্ট হিংস্র জন্তুর গোশত
খাওয়া এবং (৪) বন্টন করার আগে গনীমতের মাল বিক্রয় করা ৷
এ হাদীছটি মুরসাল পর্যায়ের ৷
ইবন ইসহাক (র) ইয়াযীদ ইবন আবুহাবীব হাসান সানআনী সুত্রে বর্ণনা করেন :
আমরা রুওয়াইফে ইবন ছাবিত আল-আনসারীর সঙ্গে মাগরিব দেশের এবল্টা জনপদে,
যাকে বলা হতো জিরবা’ লড়াই করি ৷ তিনি উক্ত জনপদ জয় করে সেখানে দাড়িয়ে ভাষণ দান
করেন ৷ ভাষণে তিনি বলেন :
লোক সকল ! আমি তোমাদের মধ্যে কেবল এমন কথা বলবো, যা আমি রাসুল করীম (সা)
কে বলতে শুনেছি ৷ খায়বরের দিন রাসুল করীম (সা) আমাদের মধ্যে দাড়িয়ে বলেন : আস্লাহ্
আর শেষ দিনে বিশ্বাস করে এমন কোন ব্যক্তির জন্য অপরের ক্ষেতে পানি সিঞ্চণ করা হালাল
নয় ৷ অর্থাৎ অন্তঃসত্ত্ব৷ বন্দী দাসীর সঙ্গে সঙ্গত হওয়া বৈধ নয় ! আল্লাহ এবং শেষ দিনে বিশ্বাস করে
এমন কোন লোকের জন্য হড়ালাল নয় ঋতুস্রড়াব থেকে পবিত্র হওয়ার পুর্বে কোন বন্দী দাসীর সঙ্গে
সঙ্গত হওয়া ৷ আর আল্লাহ এবং পরকালে বিশ্বাস করে এমন কোন ব্যক্তির জন্য বণ্টনের পুর্বে
গনীমতের মড়াল বিক্রি করা হালাল নয় ৷ আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস করে এমন ব্যক্তির জন্য
মুসলমানদের গনীমতের পশুতে সওয়ার হয়ে তাকে দুর্বল করে ফেরত দেওয়া হালাল নয় ৷ এবং
আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে এমন কোন ব্যক্তির জন্য হালাল নয় যে, মুসলমানদের ধন ভাণ্ডার
থেকে বস্ত্র নিয়ে পরিধান করবে আর তা পুরাতন জীর্ণ-শীর্ণ করে ফেরত দিবে ৷ মুহাম্মাদ ইবন
ইসহাক (র) সুত্রে আবু দাউদ (র) এমনভাবেই হাদীছটি বর্ণনা করেরুছণ্ডুন ৷ তিরমিযী (র ) হাফ্স
ইবন উমর শায়রানী — রুয়াইফি ইব ন ছাবিত সুত্রে সংক্ষেপে হাদীছটি বর্ণনা করে এটি
হাসান পর্যায়ের বলে মন্তব্য করেছেন ৷ সহীহ্ ৰুখারীতে নাফি সুত্রে ইবন উমর (সা) থেকে বর্ণিত
আছে যে ,
খায়ররের দিন রাসুলুল্লাহ্ (সা) গৃহপালিত গাধার পােশত খেতে নিষেধ করেছেন ৷ তিনি বসুন
থেতেও নিষেধ করেছেন ৷ ইবন হড়াযম আলী (বা) এবং শুরইিক ইবন হাম্বল (রা) এর মত উল্লেখ
করেছেন যে, তারা র্কাচা রসুন-পেয়াজ খাওয়া হারাম মনে করতেন ৷ আর তিরমিযী (র) এ দু’জন
মনীষী তা মাক্রুহ বলেছেন বলে উল্লেখ করেছেন ৷ আল্লাহ্ই ভাল জানেন, বুখারী ও মুসলিম
শরীফে যুহ্রী আলী ইবন আবুতালির (বা) বর্ণিত হাদীছ–
অর্থাৎ রাসুল করীম (সা) খায়বর (বিজয়ের) এর দিন মুতআ বিবাহ এবং গৃহ পালিত গাধার
গােশত খেতে নিষেধ করেছেন ৷ এ হাদীছ সম্পর্কে হাদীছ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা অনেক কথাবার্তা
বলেছেন ? বুখারী ও মুসলিম শরীফে মালিক প্রমুখের বরাতে যুহ্রী সুত্রে বর্ণিত হাদীছ অনুযায়ী
মুতআ বিবাহ হারাম ঘোষিত হয়েছিল খায়বরের দািনই ৷ কিন্তু দুটি কারণে এ অর্থ গ্রহণ করা
মুশকিল ৷ (এক) খায়বরের দিন মুতআ বিবাহের আদৌ কোন প্রয়োজনই ছিল না ৷ কারণ,
ভোগের জন্য সেখানে তখন নারীর অভাব ছিল না ৷ (দুই) মুসলিম শরীফে রবী ইবন সাবুরা সুত্রে
মড়াবাদ তার পিতা থেকে বর্ণিত হাদীছে বলা হয়েছে-
রাসুল করীম (সা) মক্কা বিজয়ের দিন তাদেরকে মুতআ বিবাহের অনুমতি দিয়েছেন, এরপর
তা নিষিদ্ধ ঘোষণা না করা পর্যন্ত তিনি মক্কা ত্যাগ করেননি ৷ তারপর তিনি বলেন : আল্লাহ
তাআলা কিয়ামত পর্যন্ত কালের জন্য মুতআ বিবাহ হারাম করে দিয়েছেন ৷ এতে দেখা যায় যে,
তিনি আগে নিষেধ করেছেন, পরে অনুমতি দিয়েছেন, তারপর হারাম করা হয়েছে ৷ এতে করে
দৃ’দফা বাতিল বা রহিতকরণ সাব্যস্ত হয়, যা সুদুর পরাহত ৷ উপরন্তু ইমাম শাফিঈ প্রমাণ পেশ
করেন যে, কোন একটা বিষয় একবার মুবাহ করা হয়, পরবভীন্থিত তা হারাম করে আবার